শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ে মনোনীত আকিকা, তবুও অনিশ্চিত ঢাবিতে ভর্তি

আকিকা রহমান রোজ
আকিকা রহমান রোজ  © ফাইল ছবি

ভর্তির সুযোগ পেয়েও ঢাবিতে পড়ার স্বপ্ন ফিঁকে হয়ে আসছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আকিকা রহমান রোজ (১৯) নামের এক শিক্ষার্থীর। অভাব অনটনের সংসারে অর্থের অভাবে আদৌ এই মেধাবী শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে তার পরিবারেও দুশ্চিন্তার শেষ নেই। আকিকা রহমান রোজ এ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ইউনিটে মেধা তালিকায় স্থান পেয়ে শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাড়াশ পৌর সদরের মাদ্রাসা পাড়ার মো: আনিছুর রহমান ও রোকেয়া খাতুন দম্পতির মেধাবী সন্তান আকিকা রহমান রোজ। তিনি ২০১৩ সালে তাড়াশ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পি.এস.সি. পরীক্ষায় জিপিএ ৫ ও  ট্যালেন্টপুল বৃত্তি পান। এরপর ২০১৬ সালে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় হতে জে.এস.সিতে জিপিএ ৫ ও সাধারণ কোটায় বৃত্তি পান। এরপর ২০১৯ সালে ওই প্রতিষ্ঠান থেকেই বিজ্ঞান বিভাগে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পান। ২০২১ সালে তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের মানবিক  বিভাগ থেকে এস.এস. সি পরীক্ষায়  জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।

আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীদের আবাসন-পরিবহন ফি’র অর্থ ফেরত দিচ্ছে ঢাবি

আকিকা রহমান রোজরা ৪ ভাই বোন। এর মধ্যে ৩০ বছর বয়সী এক বোন প্রতিবন্ধী, এক ভাই বেকার, জমি জমা বলতে বাড়ির সামান্য জায়গাটুকুই। তার বাবা অবসর প্রাপ্ত মাদ্রাসার শিক্ষক এবং মা রোকেয়া খাতুন গৃহিনী। মুলত স্বল্প বেতনের চাকরি করা বড় ভাইয়ের উর্পাজন ও আত্মীয় স্বজনদের সহযোগিতায় কোনোমতে সংসার চলে তাদের।

আকিকা রহমান রোজ জানান, ছোট বেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ে ভর্তির জন্য মনোনীতও হয়েছি কিন্তু জানি না ঢাবিতে পড়তে পারব কিনা। তবে কোন ভাবেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ সময় তার পরিবারের পক্ষে পড়া লেখা চালানোর মত ব্যয়ভার বহন করার সক্ষমতা নেই। অথচ তার ইচ্ছে ছিল ভালো ভাবে পড়া লেখা শেষ করে একটা চাকরি করার। যাতে পরিবারকে সহযোগিতা করতে পারেন।  

রোজের বাবা আনিছুর রহমান ও মা রোকেয়া খাতুন জানান, তাদের মেয়ে অত্যান্ত মেধাবী। টানাটানির সংসারে তাকে কখনও প্রাইভেট পড়ানোর টাকা দিতে পারেননি। মেয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সহায়তা আর কঠোর পরিশ্রম করে রোজ প্রতিটি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করেছে। কিন্তু তাদের যে আর্থিক অবস্থা তাতে কিভাবে মেয়ের পড়ার খরচ চালাবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।  এ ব্যাপারে তারা দেশের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেন।

রোজ সম্পর্কে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাধান শিক্ষক আলী হাসান  বলেন, সে অত্যন্ত মেধাবী ও ভদ্র্র শিক্ষার্থী। সে নিয়মিত স্কুলে আসতো এবং পড়া লেখায় খুব মনোযোগী ছিল বলেই সব সময় পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করত।


সর্বশেষ সংবাদ