আগে হেনস্তার শিকার হওয়া চবির দুই ছাত্রীও বিচার চান

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের ঘটনা নতুন নয়। আর এসব ঘটনায় ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই ছাত্রী প্রক্টরিয়াল বডির কাছে হেনস্তার অভিযোগ দেন। পরে অভিযোগটি যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ওই ঘটনার ১০ মাস পার হলেও এখনো বিচার হয়নি।

গত ১৭ জুলাই রাতে ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার (২৩ জুলাই) ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৭। এরপর গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর হেনস্তার শিকার দুই ছাত্রীও বিচার চান।

তাদের একজন বলেন, হেনস্তার শিকার হওয়ার পর দফায় দফায় তাদের দুজনের সাক্ষাৎকার নেয় যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের অভিযোগ কমিটি। এরপর আর কিছু জানানো হয়নি। 

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ঘটনার বিচার না করে চবি প্রক্টর উল্টো গণমাধ্যমে তাদের নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। প্রক্টর গণমাধ্যমে বলেন, ঘটনার পর তারা (দুই ছাত্রী) অভিযুক্ত চারজনকে মাফ করে দিয়েছেন। আদতে এ ধরনের কিছু হয়নি। তারা কাউকে মাফ করেননি। 

এ বিষয়ে চবি প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, অভিযোগ কমিটির এক সদস্য মাফ করে দেওয়ার বিষয়টি তাকে জানিয়েছিলেন। এ কারণে তিনি গণমাধ্যমে এ কথা বলেন।

জানা যায়, গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে দুই ছাত্রীকে হেনস্তা করেন ছাত্রলীগের চার কর্মী। তারা হলেন আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. জুনায়েদ, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রুবেল হাসান, দর্শন বিভাগের একই বর্ষের ইমন আহাম্মেদ এবং আর এইচ রাজু। তারা সবাই চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হকের অনুসারী।

এ বিষয়ে চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক বলেন, ছাত্রলীগ একটি বড় সংগঠন। এখানে অনেকেই রাজনীতি করেন। ব্যক্তিগতভাবে কেউ অপরাধ করলে তার দায় সংগঠন নেবে না।

আগের ঘটনায়ও ছাত্রলীগ
বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ কেন্দ্রের কাছে আগের তিনটি ঘটনার অভিযোগ জমা ছিল এত দিন। এর মধ্যে এক ছাত্রী ২০১৮ সালে শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছিলেন। আরেকটি ঘটনায় আরেক ছাত্রী গত বছর এক ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। এ ছাড়া দুই ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগটি জমা পড়ে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর। এ তিন ঘটনার মধ্যে সর্বশেষটিতে ছাত্রলীগের চার কর্মী জড়িত। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হকের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ কম নয়। বিভিন্ন প্রকল্পের ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবি, হলের আসন দখলের জন্য সংঘর্ষ, ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে মারামারি—সব জায়গায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের নাম আসে। ক্যাম্পাসে বারবার সংঘর্ষ বাধে। নেতা-কর্মীরা হলের কক্ষ ভাঙচুর করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কারও বিরুদ্ধে তেমন ব্যবস্থা নেয় না।


সর্বশেষ সংবাদ