রাবির হলে নৈরাজ্য: এবার সরব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়  © টিডিসি ফটো

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আবাসিক হলগুলোতে সৃষ্ট নৈরাজ্য ও ছাত্রলীগের প্রভাববলয় নিয়ে এবার সরব হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এসব বিষয়ে হল প্রশাসন শক্ত অবস্থানে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক।

তিনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে কোনো ধরণের নৈরাজ্য সৃষ্টি হোক হল প্রশাসন যেমন চায় না, তেমনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও চায় না। করোনা পরবর্তীতে হলে অনেকেই আগ্রাসী হয়ে উঠেছেন। ফলে হলগুলোতে বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। তবে এসব বিষয়ে শক্ত অবস্থানে যাচ্ছেন হল প্রশাসন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা থাকবে।' সোমবার (২৭ জুন) রাতে প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ঘটা চলমান অনাকাঙ্ক্ষিত ও নৈরাজ্য অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এসব কথা বলেন। 

তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে এসব নৈরাজ্যপূর্ণ অবস্থা একদিনে সৃষ্ট নয়। দীর্ঘদিনের চলমান অবস্থার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এখন। তবে বর্তমানে হলগুলোতে বেশকিছু জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক প্রাধ্যক্ষ হিসেবে যোগাদান করেছেন। যারা নিজেদের অবস্থা থেকে এ সমস্যাগুলো নিরসনের চেষ্টা করছেন।
বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা আসছে, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটছে। তবে এসব নৈরাজ্য বন্ধে কাজও চলছে।

প্রক্টর আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে চলমান সমস্যা সমাধানে হল প্রশাসন কার্যকরী পদক্ষেপের পূর্ণ অধিকার রাখে। কোন অভিযোগের তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে পারে। তবে গুরুতর কোন অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটিতে আসলে, সেটা প্রমাণের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। তবে এসব বিষয়ে হল প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপে সর্বদা সহযোগিতা থাকবে বলে জানান তিনি। এমন ঘটনায় দোষীদের আর ছাড় দেয়া হবে না। 

এর আগে, নবাব আব্দুল লতিফ হলে মধ্যরাতে এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর করে নামিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম এবং তার অনুসারী পারভেজ ও তৌহিদের বিরুদ্ধে। এঘটনাকে কেন্দ্র করে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক। পরে রাতে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের এক জরুরি সভায় প্রাথমিক অভিযোগদের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের হল থেকে সাময়িক বহিস্কারসহ হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় হল প্রশাসন।

তাছাড়া সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে যেকোন ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কিংবা বিশৃঙ্খলার প্রমাণ পেলে অভিযুক্তদের বহিস্কারের ঘোষণা দেন প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক ফেরদৌস মহল। এমনকি হলগুলোতে যেকোন ধরণের সমস্যায় যৌথভাবে কাজ করবেন বলেও জানান এ আহ্বায়ক।

উল্লেখ্য, বিগত কয়েকমাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হল শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন আবাসিক হলে শিক্ষার্থীকে মারধর, বিছানাপত্র নামিয়ে হল ত্যাগে বাধ্য করা, সিট বাণিজ্য, হল গেটে তালা ও প্রাধ্যক্ষ লাঞ্ছিত করার অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে আসছেন একাধিক প্রাধ্যক্ষসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এবিষয়ে প্রশাসনের কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন তারা।


সর্বশেষ সংবাদ