‘ডাক্তার তো নাই একটা ওয়ার্ডবয়ও নাই, সবাই নবাব’

ঢাবি ছাত্র মহিউদ্দিন রনি
ঢাবি ছাত্র মহিউদ্দিন রনি  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে (ডিইউএমসি) গত চারদিন ধরে অবস্থান করেও কোন ডাক্তারের দেখা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এন্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। এ বিষয়ে শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তায় তিনি আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন।

রনি বলেন, এখানে না আছে মশা নিধনের কোন ব্যবস্থা; না আছে মশারি। এখানে সারারাত ধরে আপনি কাতরাবেন বা কাঁদবেন এতোগুলা ওয়ার্ড আছে কিন্তু দুঃখের বিষয় একটা ওয়ার্ডবয়ও এখানে নেই। কেউ এসে যে বলবে ভাই আপনার কিছু লাগবে কিনা এমন একটা কথার কেউ নেই। ডাক্তার তো নেই, একটা ওয়ার্ডবয়ও নেই যারা সামান্যতম খোঁজখবর নেবে, এখানে সবাই নবাব। খুব অসহায় লাগে খুব কষ্টে আছি। যার সমস্যা সে বুঝতে পারে।

জানা যায়, মহিউদ্দিন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পায়ে গুরুতর আঘাত পেয়ে গত চারদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে অবস্থান করছেন। কিন্তু তিনি সেখানে কোনো চিকিৎসকের দেখা পাননি। যার কারণে গতকাল আক্ষেপ ও মেডিকেল সেন্টারের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুক একটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করেন। ভিডিওটি ইতিমধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই ভিডিও দেখে শিক্ষার্থীরা মেডিকেল সেন্টারের অনিয়ম এবং অব্যস্থাপনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন: কিডনি সমস্যা নিরসনের উপায়

ভিডিও বার্তায় রনি বলেন, চিকিৎসক পরিচর্যাকারীর দেখা এখনও পাইনি। স্ক্র্যাচার-হুইলচেয়ার বলতে রোগীদের জন্য এখানে কিছুই নাই। স্ক্র্যাচারের বদলে স্যালাইনস্ট্যান্ড একমাত্র ভরসা আমাদের। টয়লেটে হাইকমোড নেই। হলে হাইকমোড না থাকায় টিএসসিতে এসে হাইকমোড ব্যবহার করতে হয়েছে, যার ভয়ে এখানে এসেছি। কিন্তু এখানে এসেও কোন লাভ হয়নি।

আক্ষেপ প্রকাশ করে রনি বলেন, এতদিন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে অব্যবস্থাপনার কথা শুনেছি। এখন প্রত্যেকটা মুহূর্ত নিজেই উপলব্ধি করছি। এখানে যে কত ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় নিজে না আসলে কোনভাবেই বোঝা সম্ভব না। এই যে প্যারা খাচ্ছি, এখন বুঝতে পারছি এটা যে কতটা পেইনফুল (বেদনাদায়ক)। মারাত্মক অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে আমাদের মেডিকেল সেন্টার।

মেডিকেল সেন্টারের সমস্যা সমাধানে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে মহিউদ্দিন বলেন, আমি আমার বন্ধু, বড়ভাই, সাংবাদিক এবং ছাত্রনেতারা, বন্ধুরা যারা আছেন তাদেরকে বলবো প্রত্যেকটা হলের প্রতিনিধি হয়ে আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলুন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে যে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তার, কর্মকর্তা, কর্মচারী আছেন তারা কি পরিমানে দায়িত্বে অবহেলা করে নিজের চোখে না দেখলে আসলে বুঝতে পারতাম না; এটাই তিক্ত সত্য। আমি অতিদ্রুত এই সমস্যার সমাধান চাচ্ছি।

এদিকে মহিউদ্দিনের বিষয়ে কথা বলতে মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. হাফেজা জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তার সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, সে (রনি) মনে হয় ভর্তি হয়নি। ভর্তি হলে তো ওয়ার্ডবয়, আমরা জানতাম। অবশ্যই তার দেখাশোনা করতাম। এগুলো দেখাশোনা তো ওয়ার্ডবয় করে। এখন সে যদি আমাদের না জানায় তাহলে কীভাবে আমরা জানবো। আমি এখনই খোঁজ নিয়ে দেখছি।


সর্বশেষ সংবাদ