রাবিতে শ্রদ্ধা ভালোবাসায় অমর একুশে পালিত

রাবিতে অমর একুশে পালিত
রাবিতে অমর একুশে পালিত  © টিডিসি ফটো

গাছে গাছে রক্তরাঙা পলাশ, রং-তুলির আঁচলে আঁকা আলপনা, হাতে হাতে পতাকা, খোঁপায় ফুল ও পূর্ব আকাশে কুয়াশা চাদর ঠেলে সূর্যের সোনালী আলোয় রংবেরঙের ফুলে গাঁথা পুষ্পস্তবক হাতে প্যারিস রোডে প্রভাত ফেরির মিছিল। আজ একুশে ফেব্রুয়ারি।

মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে। দিবসটির প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী সকল শহীদের প্রতি পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি নীরবতা পালন ও মোনাজাত করা হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, এদিন ভোর বেলায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে প্রভাত ফেরির মিছিলে জাগে সংগ্রামের রেশ। সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে বাড়তে থাকে শিক্ষার্থীদের জন সমাগম। পুষ্পস্তবক হাতে শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন সংগঠন, সমিতি ও সাংস্কৃতিক জোট। মেয়েদের পড়নে লাল ডোরাকাটা সাদা শাড়ী, খোঁপায় রঙিন ফুল। ছেলেরা পরেছেন পাজামা-পাঞ্জাবি, কপালে অমর একুশের চিহ্ন, শিশুদের হাতে পতাকা, গালে রং-তুলির আঁচড়ে আঁকা শহীদ মিনারের ছাপ।

আরও পড়ুন: শহীদ মিনারে ছাত্রলীগ নেতাকে মেরে রক্তাক্ত করলেন ছাত্রলীগ নেত্রী

মাতৃভাষার জন্য আত্মত্যাগকারী মহান শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে শহীদ মিনারে আসা নুসরাত জাহান বলেন, আজ মহান ভাষা শহীদ দিবস। এই দিনে বাঙলার দামান ছেলেরা আমাদের মাতৃভাষা রক্ষার জন্য রাজপথে নিজেন জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। যার বিনিময়ে আজ আমরা বাংলায় কথা বলি। শুধু তাই নয়, তাদের এই মহান ত্যাগের বিনিময়ে এই বাংলা ভাষা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়ে বিশ্বের ভাষায় পরিণত হয়েছে। তাই আমরা গর্বিত, আমরা বাঙালি। আমরা গর্বিত, আমরা বাঙালায় কথা বলি।

মহান একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। সেই ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে আলোচনা সভা ও বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়া বাদ যোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া ও সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

১৯৫২ সালে পাকিস্তানী শাসকদের করাঘাত থেকে মাতৃভাষা বাঙালাকে রক্ষার জন্য ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজপথ আন্দোলন সংগ্রামে নেমিছিল বাঙালার দামাল ছেলেরা। কিন্তু তাদের দমাতে পুলিশ প্রথমে বাঁধা দেয়। পরে আন্দোলন অব্যাহত থাকলে একপর্যায়ে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালালে রাজপথে শহীদ হন আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ আরো অনেকে। এ ঘটনায় দেশ জুড়ে আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে বাঙালাকে রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয় পাক-সরকার। ১৯৯৯ সালে ইউনেসকো কর্তৃক ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার স্বীকৃতি দিলে বিশ্বব্যাপী পরিচিত লাভ করে বাঙালির মায়ের ভাষা ও সংগ্রামী সেই ইতিহাস।


সর্বশেষ সংবাদ