গেস্টরুমের শাস্তি ১০ মিনিট লাইটের দিকে তাকিয়ে থাকা

ঢাবি লোগো ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগপত্র
ঢাবি লোগো ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগপত্র  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিজয় একাত্তর হলে এক অসুস্থ শিক্ষার্থীকে গেস্টরুমে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে ওই হলের ছাত্রলীগের ৬ কর্মীর বিরুদ্ধে। নির্যাতনের কারণে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয় বলে জানা যায়।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাত দশটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আখতার হোসেন হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছিরকে একটি লিখিত অভিযোগ দেন।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগের ৬ কর্মী হলো- সমাজবিজ্ঞান বিভাগের রাজু, ইতিহাস বিভাগের কাজল, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ইয়ামিম, মনোবিজ্ঞান বিভাগের শুভ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাইফুল ইসলাম ও লোকপ্রশাসন বিভাগের রোহান। তারা ৬ জনই ২০১৯-২০ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিযুক্তরা বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী আবু ইউনুছ ও রবিউল ইসলাম রানার অনুসারী।

আরও পড়ুন: ঢাবির অসুস্থ শিক্ষার্থীকে গেস্টরুমে নির্যাতনের অভিযোগ

ভুক্তভোগী আখতার হোসেন ২০২০-২১ শিক্ষা বর্ষের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি রংপুর জেলায়।

জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী (আখতার) কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। সে শুধু শারীরিকভাবে নয় মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত ছিল। কারণ এক সপ্তাহ আগে তার বাবা ব্রেন স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার বাবা একজন দিনমজুর। অসুস্থতার মধ্যেও তাকে রাত দশটার দিকে গেস্টরুমে ডাকা হয়। তখন ভুক্তভোগীকে (আখতার) অভিযুক্তরা বলে এ তুই গতকাল গেস্ট রুমে ছিলি না কেন। তখন ভুক্তভোগী (আখতার) বলে, ‘‘ভাই আমি খুব অসুস্থ কয়েকদিন থেকে। এছাড়া আমার বাবা স্ট্রোক করে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’’

একথা বলার পর তাকে অভিযুক্তরা বলে, ‘‘এ কুত্তার বাচ্চা এ তুই ১০ মিনিট উপরে লাইটের দিকে তাকিয়ে থাকবি।’’ এরপর কয়েক মিনিট তাকানোর পর আখতার অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করায় তার সহপাঠীরা। চিকিৎসা নেয়ার পর তাকে ভয় দেখিয়ে অভিযুক্তরা বলে, ‘‘এ তোরে যে আমরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে নিয়ে আসছিলাম এটা কাউকেই বলবি না।’’

আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরে যাবে: শিক্ষামন্ত্রী

ভুক্তভোগী আরও বলেন, আমি খুব ভয়ে আছি। এখন যদি আমাকে হল থেকে বের করে দেয়। আমাকে বলতে নিষেধ করেছে তারা (অভিযুক্তরা)।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের ছাত্রলীগের হল কমিটির পদপ্রত্যাশী আবু ইউনুছ বলেন, ঘটনাটি আমি মাত্র জেনেছি। এটা আসলে অপ্রত্যাশিত। আমি বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি।

রবিউল ইসলাম রানা বলেন, এই বিষয়ে শুনলাম। এটা আসলে ঠিক করেনি। আমি খোঁজ নিচ্ছি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয় একাত্তর হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির বলেন, আমি শুনেছি। এটা আসলেই দুঃখজনক। এ ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটিকে তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হবে। রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ