ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে রাবি শিক্ষকরা

  © সংগৃহীত

সর্বজনীন পেনশন স্কিমসংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার ও প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ না করায় সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। 

সোমবার (১ জুলাই) সকাল থেকে সর্বাত্মক আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন তাঁরা। এদিন সকাল ১১টা থেকে ১২টা পর্যন্ত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবন চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। 

এদিকে সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার সমিতিও ১ থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন।

এদিন অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকদের অনেক সুবিধা উঠিয়ে দেওয়া ও আর্থিক সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে কার্পণ্য হতে দেখেছি। উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যদি সঠিকভাবে না চলে তাহলে জাতির সামনে অশনি সংকেত অপেক্ষা করে। যেসকল মেধাবী শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করছে তারা যদি মেধাবী শিক্ষক না পান তাহলে তারা দেশকে কিছুই দিতে পারবে না।

তিনি আরো বলেন, মেধাবী শিক্ষক পেতে গেলে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করতে হবে। যেন তারা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসেন। তাদের আকর্ষণ করার জন্য আর্থিক সুযোগ সুবিধা দিতে হবে। আরও কত সুযোগ সুবিধা দেওয়া যায় সেই চেষ্টা করবেন। প্রতিবেশী অনেক দেশে শিক্ষকদের বেতন সাধারণ চাকরি থেকে অনেক বেশি৷ কিন্তু বাংলাদেশে স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের কথা বার বার বলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি৷

রাবির শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. ওমর ফারুক সরকার বলেন, জাতিকে ও দেশের জনগণকে জানাতে চাই, আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এটা দেখবেন, এই সমস্যার সমাধান করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক রাস্তায় দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিতে চায় না, তাদের বক্তব্য দেওয়ার জায়গা ক্লাসরুম, সেমিনার, ল্যাবরেটরিতে। আজ থেকে আমরা সব বন্ধ করে দিয়েছি। সব রকম কাজকর্ম থেকে নিজেদের বিরত রেখেছে। সব ধরনের ক্লাস বন্ধ রয়েছে, লিখিত ও ভাইভাসহ সব ধরনের পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে, সব ধরনের সেমিনার; সিম্পোজিয়াম বন্ধ রয়েছে, সব ধরনের গবেষণা বন্ধ রয়েছে, শিক্ষকদের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। যেটাকে আমরা বলি সর্বাত্মক কর্মবিরতি। 

রাবির শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গত দুই মাস থেকে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। ভেবেছিলাম এমন পরিস্থিতি আসবে যে আমাদের আর লাগাতার কর্মসূচির মধ্যে যেতে হবে না। যেহেতু তেমন কিছু হয়নি তাই আমাদের লাগাতার কর্মসূচিতে যেতে হচ্ছে এবং সরকারের অবস্থান খুব অনড় বলেই মনে হচ্ছে। এজন্য আমাদের এটা আরও চালিয়ে যেতে হবে। 

তিনি আরও বলেন, দেশে যখনই কোনো কিছু ঘটে তখন সবকিছু শিক্ষদের উপরেই সব সময় আসে। আর্থিক খাত থেকে বিভিন্ন জায়গায় বঞ্চিত করা হয়েছে। আপনারা জানেন ২০১৫ সালে আমাদের অবদমন করা হয়েছে। আবার সর্বজনীন পেনশন স্কিমের নামে আর্থিকভাবে ক্ষতি করছে। শুধু আর্থিকভাবে নয় আমি মনে করি এটার সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। এটা উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র বলে মনে করি। সরকার এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু সরকারের মধ্যে থাকা কিছু ষড়যন্ত্রকারী আমাদের সরকারের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। আমরা দ্রুত এর প্রত্যাহার চাই।


সর্বশেষ সংবাদ