চাকরির জন্য চবি ভিসির পায়ে পড়েন ছাত্রলীগ নেতা, আটকান গাড়িও

চাকরির জন্য চবি ভিসির পায়ে পড়েন ছাত্রলীগ নেতা
চাকরির জন্য চবি ভিসির পায়ে পড়েন ছাত্রলীগ নেতা  © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) চাকরির জন্য সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের পায়ে পড়েছেন ছাত্রলীগ নেতা। শিরীণ আখতার বেরিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ নেতা গাড়ি থামিয়েও কথা বলার চেষ্টা করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘চাকরির জন্য’ ছাত্রলীগের ওই নেতা এ কাজ করেছেন বলে ক্যাম্পাসে আলোচনা আছে। এ ঘটনার একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এখন ভাইরাল।

পায়ে পড়া ওই নেতা হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক গ্রুপ একাকার গ্রুপের নেতা ও বিলুপ্ত কমিটির সহ-সভাপতি মইনুল ইসলাম। তবে তিনি চাকরির জন্য শিরীণ আখতারের পায়ে পড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

ঘটনার সময় তার সঙ্গে ছাত্রলীগের আরও দুই নেতা ছিলেন। তারা হলেন শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি মুজিবুর রহমান ও কে এম রোমেল হোসেন। তারাও নিজেদের নাছিরের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। তারা ছাত্রলীগের উপপক্ষ ভার্সিটি এক্সপ্রেসের নেতা।

ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, সদ্য বিদায়ী উপাচার্য শিরীণ আখতার তার চট্টগ্রাম নগরীর লাভ লেনে অবস্থিত বাসার লিফট থেকে বের হচ্ছেন। তিনি বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মইনুল ইসলাম তার পায়ে পড়ে যান। উপাচার্য তাকে উঠতে বলছেন, তখনই মুজিবুর রহমান মুজিব শিরীণ আখতারের পা ধরতে যাচ্ছিলেন। এমন সময় উপাচার্য তাকে সরিয়ে দিয়ে তার গাড়িতে উঠে যান। ছাত্রলীগের এই দুই নেতা শিরীণ আখতারের গাড়ি থামিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন।

ফুটেজে আরও দেখা যায়, শিরীণ আখতার তাদের সঙ্গে চিৎকার করতে থাকেন। এক পর্যায়ে পুলিশ ডাকার কথা বলতে থাকেন। গাড়ি ছেড়ে দেওয়ার আগ মুহূর্তে ওই দুই নেতা শিরীণ আখতারের কাছে দুই মিনিট সময় চেয়ে মিনতি করতে থাকেন।

আরও পড়ুন: শেষ কর্মদিবসে ৩৭ নিয়োগ, নতুন বিতর্ক নিয়ে বিদায় চবি ভিসি শিরীণের

জানা যায়, গত ২০ মার্চ সকালে চট্টগ্রাম নগরের লাভ লেন এলাকায় উপাচার্যের বাসায় এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, তখনো শিরীণ আখতার উপাচার্যের দায়িত্ব হস্তান্তর করেননি। ঘটনার পর ক্যাম্পাসে গিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিরীণ আখতার উপাচার্যের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত হন মো. আবু তাহের।

দায়িত্ব ছাড়ার আগের দিন শিরীণ আখতার কোনো ধরনের বিজ্ঞপ্তি বা পরীক্ষা ছাড়াই ৩৭ কর্মচারীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেন। নতুন উপাচার্য নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার পর মঙ্গলবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া চলে। তখন শিরীণ আখতার দাবি করেছেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা জিম্মি করে এসব নিয়োগ আদায় করেছে।

পায়ে পড়ার ভাইরাল ভিডিও নিয়ে কথা বলতে শিরীণ আখতারের ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও তার থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে তিনি গণমাধ্যমের কাছে মইনুলের কাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, মইনুল চাকরির জন্য চাপ দিয়েছে।

তবে ছাত্রলীগ নেতা মুজিবুর রহমান মুজিব বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি তো স্বাভাবিকভাবেই ওখানে গিয়েছিলাম। তবে চাকরির জন্য যাইনি।’ অন্যদিকে রোমেলকে কল করেও তার থেকে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।


সর্বশেষ সংবাদ