ছাত্রলীগ নেতাসহ জাবির ৬ ছাত্রের সনদ স্থগিত, কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ

বাঁ থেকে ধর্ষণে অভিযুক্ত মোস্তাফিজ, ভুক্তভোগীর স্বামীকে আটকে রাখা মুরাদ, আসামি পালানোর নির্দেশদাতা শাহ পরাণ, পালাতে সহযোগিতাকারী সিদ্দিকী, সাব্বির ও হাসান
বাঁ থেকে ধর্ষণে অভিযুক্ত মোস্তাফিজ, ভুক্তভোগীর স্বামীকে আটকে রাখা মুরাদ, আসামি পালানোর নির্দেশদাতা শাহ পরাণ, পালাতে সহযোগিতাকারী সিদ্দিকী, সাব্বির ও হাসান  © সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দম্পতিকে ডেকে এনে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমানসহ ৬ শিক্ষার্থীর সনদ সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এছাড়া ঘটনার তদন্তে চার সদস্যদের কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই কমিটি তদন্ত করে যদি তাদের বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে স্থায়ীভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হল ও হল সংলগ্ন এলাকায় ধর্ষণের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির প্রাথমিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিন্ডিকেট।

সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ২০১৫-১৬ সেশনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানকে বিকেল থেকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং তার সনদ স্থগিত করা হয়েছে।

তাকে সহযোগিতাকারী একই বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের শিক্ষার্থী মো. মুরাদ হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার ও সনদ স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। 

অভিযুক্তকে পালাতে সহায়তা করার নির্দেশদাতা একই বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী শাহ পরানের সনদ স্থগিত করা হয়েছে।

পালাতে সহায়তা করায় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের মো. সাব্বির হাসান সাগর, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশনের এ এস এম মোস্তফা মনোয়ার সিদ্দিকী ও ২০১৫-১৬ সেশনের মো. মো. হাসানুজ্জামানকে সাময়িক বহিষ্কার ও তাদের সনদ স্থগিত করা হয়েছে। 

এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বলেন, শাস্তি হওয়া এসব শিক্ষার্থীদের সনদ আরও কোথাও ব্যবহার করতে পারবে না। কমিটি তদন্ত করে যদি তাদের বিরূদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয়, তাহলে স্থায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

এছাড়াও, সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে সিন্ডিকেট আরও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেগুলো হলো-

১) ইতোমধ্যে যাদের পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে তাদের এবং অবৈধভাবে হলে অবস্থানরত অন্যান্য শিক্ষার্থী ও পোষ্যদের আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে হল ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রচার করতে বলা হয়েছে।

হল ত্যাগ না করলে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়মে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

২) ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

৩) ভাসমান দোকান সরিয়ে দিতে নিরাপত্তা ও এস্টেট শাখাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

৪) ক্যাম্পাসে অনুমোদনহীন অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তা শাখা এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।

পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এসব সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে বলে সভায় উল্লেখ করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ