ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো আইসিসিবিএম

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস স্কুল আয়োজিত আইসিসিবিএমে অতিথিরা
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস স্কুল আয়োজিত আইসিসিবিএমে অতিথিরা  © টিডিসি ফটো

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো প্রথম ইন্টারন্যাশনাল কেস কনফারেন্স অন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (আইসিসিবিএম)-২০২৩। বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এ কনফারেন্সটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। এ কনফারেন্সের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘এন্টারপ্রাইজ, প্র্যাকটিস অ্যান্ড লিডারশিপ ইন ইমার্জিং ইকোনোমিকস’।

প্রধান অতিথি হিসেবে আন্তর্জাতিক এই কনফারেন্সের উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অফ ট্রাস্ট্রিজের চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর মাহবুব রহমান। এই কনফারেন্সে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের ভারপ্রাপ্ত ডিন ড. মোহাম্মদ মুজিবুল হক। 

দিনব্যাপী এই কনফারেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ লিবারেল আর্টস এর ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ইমরান রহমান, আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম, ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজের হেড অফ ইনভেস্টমেন্ট স্ট্রাটেজি অ্যান্ড অরগানাইজেশনাল রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এর হেড আনিকা মফিজ এবং ব্র্যাক বিজনেস স্কুলের অধ্যাপক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

বিজনেস এবং ম্যানেজমেন্টের ওপর জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক টিচিং কেস স্টাডিজসমূহ প্রদর্শন করাই ছিল আইসিসিবিএম ২০২৩ এর উদ্দেশ্য। গ্র্যাজুয়েট এবং পেশাজীবীদের সক্ষম করে তোলা এবং স্থানীয় ব্যবসায়িক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে তাদের জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে কেসসমূহকে শিক্ষা উপকরণ হিসেবে তৈরি করা হয়েছে। শেখার এবং সহযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, ইন্ড্রাস্টি বিশেষজ্ঞ, আন্তর্জাতিক প্রকাশক এবং প্রাইভেট সেক্টরের নেতৃবৃন্দ এই কনফারেন্সে যোগ দেন। 

একটি কঠোর এবং যথাযথ পর্যালোচনা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৫৮টি কেস এই কনফারেন্সের জন্য নির্বাচিত করা হয় যার বেশিরভাই স্থানীয় ব্যবসার বাস্তব ঘটনাবলীর ওপর রচিত। এদের মধ্যে ছিল দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দুটি কেস। এদের মধ্যে একটি কেসে ব্র্যাক এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ’র জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলোর ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। অন্যটিতে অবকাঠামো ও সেবাসমূহের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামের নেতৃত্বের ভূমিকা তুলে ধরা হয়।    

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিওবার্তার মাধ্যমে বক্তব্য দেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর এবং ভারপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ। তিনি বলেন, আমরা আইসিসিবিএম’র প্রথম এই কনফারেন্সটি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করতে পেরেছি বলে অত্যন্ত আনন্দিত। স্যার আবেদ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন যে, শিক্ষা হলো মানুষের জীবনে উন্নতি এবং টেকসই পরিবর্তন আনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বোর্ড অফ ট্রাস্ট্রিজ এর চেয়ারপারসন তামারা হাসান আবেদ তার বক্তব্যে ইন্ড্রাস্টি-অ্যাকাডেমিয়ার সহযোগিতার ক্ষেত্রে এই কনফারেন্সকে অত্যন্ত একটি কার্যকর পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন। এই কনফারেন্সে বিভিন্ন ইন্ড্রাস্টির সম্পৃক্ততা অত্যন্ত আশা জাগানিয়া বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে যেহেতু সমস্যা সমাধানকারী হতে হবে তাই বিজনেস স্কুলসমূহে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কেস স্টাডিভিত্তিক শিক্ষা প্রসারে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। কেস স্টাডিজ শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণা কাজে উৎসাহিত করার জন্য একটি চমৎকার উপায়।’ সেই সাথে তিনি তার বক্তব্যে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহতে গবেষণার গুরুত্বের ওপর জোরও দেন। 

কনফারেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব আতিকুল ইসলাম বলেন, অবকাঠামো ও সেবাসমূহের পরিবর্তন জলবায়ু ও পরিবেশ সংরক্ষণের মতোই সমান গুরুত্বপূর্ণ। বিজনেস গ্র্যাজুয়েটদের তিনি আগামীর নেতা হিসেবে উল্লেখ করেন এবং প্রতিবন্ধকতাসমূহকে সমস্যা নয় বরং চ্যালেঞ্জ হিসেবে মোকাবেলা করার আহবান জানান।

এ কনফারেন্সের পৃষ্টপোষকতা করেছে ব্র্যাক ইপিএল স্টক ব্রোকারেজ ও বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড। সহ-পৃষ্টপোষকতায় ছিল আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড, ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট এবং স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। এছাড়া এই কনফারেন্স আয়োজনে আরো সহায়তা করেছে ইস্পাহানি লিমিটেড, স্যাভয় আইসক্রিম ফ্যাক্টরি লিমিটেড, পারফেট্টি ভ্যান মেলে বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেড, নেসলে বাংলাদেশ লিমিটেড এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি বিজনেস ক্লাব (বিজবি)। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল সময় টেলিভিশন, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড এবং বিডিনিউজ২৪ডটকম।


সর্বশেষ সংবাদ