‘র্যাগ দিলে, তোর কোন বাপই তোকে বাঁচাতে পারবে না’
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:১৮ PM , আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৩, ১১:৫৯ PM
বিভাগের বড় ভাইকে চিনতে না পারা ও সালাম না দেওয়ার অপরাধে জুনিয়রকে থাপ্পড় দেয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী শিশির আহমেদ শিহাবের বিরুদ্ধে। এর আগেও ভর্তি বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগ তার নাম বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছিল। গত রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এমন ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মাহির শাহরিয়ার। এ বিষয়ে তিনি মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকালে এ ঘটনার প্রতিকার ও নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহরিয়ার জানিয়েছেন, আমি ক্যাম্পাসে নতুন এসেছি। একারণে বিভাগের বড় ভাইদের এখনও চিনতে পারিনি। বিভাগের এক বড় ভাইকে না চিনে শহীদ মিনারের সামনে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। এমন সময় বিভাগের বড় ভাই আমাকে ডেকে এনে কথা বলার আগেই সালাম না দেওয়ায় অপরাধে গালে কয়েকটি থাপ্পড় বসিয়ে দেন। আমি র্যাগিং এর প্রতিকার ও নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেছেন, গত রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারের হেটে যাওয়ার সময় আমার বিভাগের ইমেডিয়েট বড় ভাই মো: শিশির আহমেদ শিহাব ও তার সাথে অজ্ঞাত ৩ জনের দ্বারা র্যাগিংয়ের শিকার হই।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীকে শহীদ মিনারের মাঠে ডেকে নিয়ে যান এবং সেখানে যাবার পরেই অভিযুক্ত শিহাব তাকে প্রশ্ন করেন, ‘এই তুই আমাদের চিনিস?’ এসময় তারা ভুক্তভোগীকে কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই তার গালে কয়েকটি থাপ্পড় মারেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আরও অভিযোগ করেন শিহাব এবং তার বন্ধুরা তাকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, ‘এখন যদি তোকে হলে তুলে নিয়ে গিয়ে র্যাগ দেই। তাহলে তোর কোন বাপই তোকে বাঁচাতে পারবেনা।’ এমনকি তারা তাকে র্যাগিংয়ের বিষয়টি গোপন করার জন্য মোবাইলে কল ও মেসেজ দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন।
শাহরিয়ার তার অভিযোগে বলেছেন, তিনি ঠিকভাবে ক্লাস করতে পারছেননা এবং আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন। তাই তিনি প্রশাসনের নিকট বিষয়টির সমাধান প্রত্যাশা করছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিশিরের ফোনে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে লোক প্রশাসন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরুল মোমেন বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এ বিষয়ে আমাকে এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে আমি শুনেছি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে র্যাগিং এর বিষয়ে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে তবুও কোনো শিক্ষার্থী সেই কাজের সাথে জড়িত থাকলে আমরা বিভাগ থেকে অবশ্যই প্রশাসনের কাছে শাস্তির জন্য সুপারিশ করবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং মুক্ত। যদি কোনো শিক্ষার্থী র্যাগিংয়ের সাথে জড়িত থাকে সেটা অবশ্যই অন্যায়। আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং বিভাগের সভাপতিকে জানাতে বলেছি। আমরা ভুক্তভোগীর বিভাগের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নিবো।