পূজার মধ্যে পরীক্ষা, তারিখ পরিবর্তনের দাবি ঢাবির সনাতন শিক্ষার্থীদের

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়   © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে দুর্গাপূজার ছুটির মধ্যে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিভাগটির সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। তারা পূজার ছুটির পর পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দুর্গাপূজাকে ঘিরে তাদের নানা রকম প্রস্তুতি, পরিকল্পনা ও আচার-অনুষ্ঠান থাকে। পূজার কয়েকদিন আগে থেকেই এই প্রস্তুতি শুরু হয়। অনেকেই আবার বাড়িতে পরিবারে সাথে পূজা পালন করেন। এসময় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে তারা এসব থেকে বঞ্চিত হবেন। 

রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এমএসএস প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষার রুটিন প্রকাশিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত সেই রুটিনে দেখা যায় ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে ০৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডারে দেখা যায় ২-৫ অক্টোবর ৪দিন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি। এসব ছুটির দিনে ক্লাস, পরীক্ষাও বন্ধ থাকে। ০৩ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার উপেক্ষা করে ছুটির দিনে পরীক্ষার নেওয়ার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। 

আরও পড়ুন: কুয়েটে সহকারি রেজিস্ট্রারকে অবরুদ্ধ করে রাখেন নারী অফিসার

এই বিভাগের শিক্ষার্থী সৌম্য দিপ সাহা কুনাল তার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, একাডেমিক ক্যালেন্ডারে ১-৫ অক্টোবর বন্ধ থাকার পরও কিভাবে দুর্গাপূজার ষষ্ঠী ও অষ্টমীর দিন পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়। ও হ্যাঁ আমরাতো সংখ্যালঘু, আমাদের হয়েতো বলার কেউ নেই বা বললেও আপনারা শুনবেন কেন? এই হচ্ছে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। এমন প্রহসন মানা যায় না। 

এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, গত মে মাসেই আমরা প্রথম সেমিস্টারের সকল ক্লাস শেষ করেছি। তবে আজ কেন দীর্ঘ চার মাস পর দুর্গাপূজার দিনকে বেছে নিয়েই রুটিন প্রকাশ করা হলো। 

এবিষয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার জানান, আমাদের যারা সনাতন শিক্ষার্থীরা রয়েছে, তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব হলো দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজার সময় যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডারে বন্ধ থাকে, সেখানে পরীক্ষার বিষয়টি শিক্ষকদের স্বেচ্ছাচারিতা বলব না বেখেয়ালি বলব। তারা প্রতিবছরই এরকম করে। প্রতিবছরই প্রতিবাদ করা হয়। এত বলার পরেও কেন এ বিষয়ে তারা সচেতন না। কেন এবিষয়টি তারা আমলে নিচ্ছে না। 

তিনি আরও বলেন, আমরা সবসময় বলি যে অসম্প্রদায়িক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ট্রেন্ডটা চালু করা হয়। সেটা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফলো করে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় যদি প্রতিবছর এরকম সিন্ধান্ত নেয়। তাহলে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কী শিক্ষা নিবে?

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ রুহুল আমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, পূজার বন্ধের মধ্যে একটি পরীক্ষা পড়ে যাওয়ার বিষয়টি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটিকে জানিয়েছি । কমিটি উক্ত পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করে দিবে।


সর্বশেষ সংবাদ