বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৭ পরামর্শ

ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি  © সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তির আবেদনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২৪-২৫ সেশনে ভর্তি যুদ্ধের দামামা বেজে গিয়েছে। আর কিছুদিন পরই  লাখ লাখ শিক্ষার্থী এক রণক্ষেত্রে নেমে পরবে। ধৈর্য, তীব্র সাধনা, কঠোর পরিশ্রম ও তুখোড় মেধা দিয়ে তারা অর্জন করবে সাফল্যের মুকুট। সঠিক প্রস্তুতির অভাব ও কিছু ভুলের কারণে অধিকাংশ শিক্ষার্থী দিনশেষে পরাজয় মেনে নেবে। সাফল্যের হাসি হাসবে অল্পসংখ্যক শিক্ষার্থী। সে কিছু ভুল যেন আপনার দ্বারা না হয় তাই প্রচলিত কিছু ভুল নিয়েই এই লেখা-

১. সবার আগে স্বাস্থ্য

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতির সময় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে অনেক চাপে থাকে। অধিক পড়াশোনার জন্য ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এটি করা যাবে না। একজন ভর্তি পরীক্ষার্থীর দৈনিক ৬-৭ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। নিয়মিত পানি পান করতে হবে। পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে। ভর্তি পরীক্ষার সময় কোনোভাবেই অসুস্থ হওয়া যাবে না। স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা নিয়ে কোনো কাজ সঠিকভাবে করা সম্ভব নয়। তাই হতাশ হওয়া যাবে না। 

২. সময় ব্যবস্থাপনা

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে জয়লাভ করতে হলে অনেক রণকৌশল শিখতে হবে। সময় ব্যবস্থাপনা তার মধ্যে অন্যতম। কীভাবে কম সময়ের মধ্যে উত্তর করা যায়, তার জন্য প্রয়োজন প্রচুর অনুশীলন। এর জন্য শর্টকাট টেকনিকসহ আরও বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে হবে। প্রয়োজনে বাড়িতে বসে সময় দেখে দেখে পরীক্ষা দিতে হবে। একটি নির্দিষ্ট টাইম সেট করে নিজেকে যাচাই করতে হবে। সময় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে ধারণা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাদ পড়ে যায়।

৩. লক্ষ্য নির্ধারণ খুব জরুরি

অনেক শিক্ষার্থী একইসঙ্গে মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করা খুব জরুরি এবং সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে সর্বোচ্চ মনোযোগ ও শ্রম দিতে হবে। একসঙ্গে অনেক কিছুর প্রস্তুতি নিলে দিনশেষে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় না। তাই একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করা এবং সে অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।

৪. অনুশীলন এবং অনুশীলন

এ সময় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজন প্রচুর অনুশীলন। যে যত বেশি অনুশীলন করবে, সে তত বেশি এগিয়ে থাকবে। তবে অনুশীলনের সময় একটি বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি-একই টপিক বা বিষয় যেন বারবার রিভিশন দেওয়া না হয়। যেমন-একই নিয়মের দশটি অঙ্ক সমাধান করার চেয়ে দশ নিয়মের একটি করে অঙ্ক সমাধান করা বেশি কার্যকরী। এতে করে অল্প সময়ে অনেক রিভিশন দেওয়া যায়। সব টপিক ও বিষয়কে সমান গুরুত্ব দিতে হবে। যে বিষয় বা টপিকে দুর্বল, সেটি আগে অনুশীলন করা উচিত। প্রতিদিন পর্যাপ্ত অনুশীলনের মাধ্যমে নিজের দুর্বলতাগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে।

৫. প্রয়োজন আত্মবিশ্বাসী হওয়া

আত্মবিশ্বাসী না হলে এ যুদ্ধে টিকে থাকা অনেক কঠিন। প্রতিদিন নিজেকে বলতে হবে-আমি পারব। এ সময় অন্য কারও সঙ্গে নিজের তুলনা করা যাবে না। অন্যের সঙ্গে তুলনা করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলে।

৬. কোচিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

কোচিংগুলো পরীক্ষার্থীদের যুদ্ধের রাস্তাগুলো চিনিয়ে দেয়। কিন্তু যুদ্ধটা নিজেকেই করতে হয়। বিগত বছরের প্রশ্ন সমাধান করলে একজন শিক্ষার্থী প্রশ্ন পদ্ধতি সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা লাভ করবে। এরপর সে যদি নিজেকে প্রস্তুত করে তুলতে পারে তাহলে কোচিংয়ের কোনো প্রয়োজন নেই। তবে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় অসংখ্য পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেকে যাচাই করতে হবে। নিজের দুর্বলতাগুলো খুঁজে বের করতে হবে এবং তা নিজেকেই কাটিয়ে তুলতে হবে।

৭. ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস হতে সাবধান

ভর্তি প্রস্তুতির সময় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যেমন মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা কম্পিউটার, টেলিভিশন ইত্যাদি থেকে নিজেকে দূরে রাখা উচিত। কারণ প্রতিটি মুহূর্ত অনেক মূল্যবান। অযথা সময় নষ্ট করা যাবে না। তবে প্রতিদিন আপডেট থাকতে হবে। এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যেতে পারে তবে তা যেন অবশ্যই পড়াশোনা বিষয়ক কাজেই ব্যবহৃত হয়। প্রতিদিন একবার হলেও গণমাধ্যমগুলোর শিরোনাম পড়া উচিত।


সর্বশেষ সংবাদ