মেডিকেলে ভর্তি: ‘রিস্ক নিতে হবে এমনভাবে, যেন লস না হয়’

লেখক
লেখক

মেডিকেলে ভর্তি হতে অনেক মেধাবী হতে হবে, টপার হতে হবে, মুখস্থ বিদ্যায় পারদর্শী হতে হবে— এমন চিন্তাভাবনা মোটেও ঠিক নয়। সত্যি বলতে মেডিকেলের একটি সিট উপরোক্ত কোনো কিছুর উপরেই নির্ভর করে না। তাহলে চলো জেনে নেই কীসের উপর নির্ভর করে।

মেডিকেলের প্রস্তুতি শুরুর আগে আমি নিজেকে কিছু মোটিভেশনাল কথা লিখেছিলাম। উপদেশটি ছিল মূলত আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা ও বড় ভাই আপুদের উৎসাহের সমন্বয়। ইংরেজি আমার দ্বিতীয় ভাষা। তাই ভুল-ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির শুরু থেকে রেজাল্ট দেয়া পর্যন্ত সময়টাতে আমি দেখেছি মেডিকেলে চান্স পাওয়ার জন্য ৬টি ফ্যাক্টর কাজ করে-
১) শারীরিক
২) মানসিক
৩) ইমোশনাল
৪) সোশ্যাল
৫) ইন্টেলেকচুয়াল
৬) ফিন্যান্সিয়াল
৭) স্পিরিচুয়াল 

মেডিকেলে প্রস্তুতি নেয়ার শুরুতে আমি চান্স পাব কিনা এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে, চান্স পাওয়ার পর পড়তে পারব কি-না, প্রেশার সামলাতে পারব কিনা এগুলো নিয়ে ভাবতাম। আমার হেলথ কন্ডিশন এমন পেশার সাথে তাল মেলাতে পারবে কিনা এগুলো ছিল আমার চিন্তার বিষয়।

মেডিকেলের প্রস্তুতি নেয়ার সময় এবং পরীক্ষা দেওয়ার সময় একদম রিল্যাক্স, চিন্তামুক্তভাবে দেয়া উচিত। আমিও খুব হেসে খেলে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। এটা করতে পেরেছি কারণ আমার কাছে তিন স্তরের ব্যাকআপ প্ল্যান ছিল। একটা সুপরিকল্পিত ব্যাকআপ প্ল্যান তোমার লাইফ সেভারের মতো কাজ করবে। সুন্দর একটা ব্যাকআপ প্ল্যান ছাড়া মেডিকেল ভর্তির প্রস্তুতি নেয়া অনেকটাই রিস্কি হয়ে যায়।

মেডিকেলে প্রস্তুতি নেয়ার শুরুতে আমি চান্স পাব কিনা এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে, চান্স পাওয়ার পর পড়তে পারব কি-না, প্রেশার সামলাতে পারব কিনা এগুলো নিয়ে ভাবতাম। আমার হেলথ কন্ডিশন এমন পেশার সাথে তাল মেলাতে পারবে কিনা এগুলো ছিল আমার চিন্তার বিষয়।

অনেকে বলতে পার, তোমার ডাক্তারই হতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্যাকআপ প্ল্যান কি দরকার! সেক্ষেত্রও অনেক দরকার। যখন মনের মতো একটা ব্যাকআপ প্ল্যান নিয়ে এক্সাম হলে ঢুকবা, এক্সাম পেপার হাতে পাবা, দাগাবা দেখবা অন্যদের তুলনায় তুমি কতটা নিশ্চিন্তে এক্সাম দিচ্ছ। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী হলের প্রেসার সামলাতে পারে না। ফলে আশানুরূপ ফলাফলও পায় না। তুমি তোমার সুবিধা মতো, বড় ভাই আপু, অভিজ্ঞ কারো সাহায্য নিয়ে এই প্ল্যান করতে পার।

আচ্ছা এবার ফ্যাক্টরগুলো নিয়ে বলি। ধর, তোমার প্রস্তুতি অনেক ভাল। কিন্তু পরীক্ষার দিন তুমি অসুস্থ হয়ে গেলে। অথবা পরীক্ষার আগের কয়েক মাসে অনেকবার অসুস্থ হচ্ছ। এটি তোমার এক্সামে প্রভাব ফেলবে। তাই এক্সাম টাইমে অনেক সেফ থাকার চেষ্টা করবা। পুষ্টিকর খাবার খাবা। ঘুম একটু কম হলেও ভালো ঘুম দিবা। হাল্কা শারীরিক ব্যায়াম, হাল্কা খেলাধুলা তোমার স্নায়ু গুলোকে প্রাণবন্ত করবে, মস্তিষ্ক এ রক্ত চলাচল বাড়াবে যা পড়া মনে রাখতে, এনালাইসিস ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি পড়াশোনার এক ঘেয়েমি কাটাতেও সাহায্য করবে। মাঝে মাঝে নিজেকে ট্রিট দিতে পার। যেমন বার্গার, বিরিয়ানি আইসক্রিম ইত্যাদি।

ফিজিক্যাল, মেন্টাল, ইমোশনাল ফ্যাক্ট অনেকটা কানেক্টেড। প্রিপারেশন টাইমে মেন্টালি তোমাকে অনেক স্ট্রং থাকতে হবে। দেখবা পড়া আগাচ্ছে না, পরীক্ষায় নাম্বার কম আসছে। প্রিপারেশন নেয়ার টাইম কম পাচ্ছ। অন্যদিকে তোমার অনেক বন্ধু ঘুরে বেড়াচ্ছে। তোমার বাসার ছোটরা সারাদিন টিভি ইউটিউব নিয়ে পরে আছে। তোমার ফ্যামিলিও তোমাকে ছেড়ে বাহিরে মজা করছে। এমনও হতে পারে যে তুমি খাবার পাচ্ছ কিনা, অসুস্থ কিনা এগুলো খেয়াল করার কেউ নেই। তোমার চোখের সামনে দেখছ তোমার ছোট ভাই-বোনকে তোমার প্যারেন্টস আদর যত্ন করছে। তোমার যে এডমিশন এদিকে কারো মাথা ব্যাথা নেই। বরং তোমাকে সারাদিন কটু কথা শোনাচ্ছে। 

পড়তে পড়তে যখন মাথা ধরে যাবে, একঘেয়েমি চলে আসবে, পড়া বন্ধ করবে, চোখ বন্ধ করে কয়েকবার নিঃশ্বাস নেবে। তারপর মনের চোখে ভবিষ্যৎ তোমাকে দেখবা। সাদা এপ্রোন পরে মুখে একটা মায়াবী হাসি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছ জনমানবের সেবায়। কত মানুষের দোয়া আর ভালোবাসা পাচ্ছ তুমি। তোমার এই নির্ঘুম পরিশ্রম, এত স্যাক্রিফাইস মনে হচ্ছে সার্থক হয়েছে। Its really worth it.

কথা শোনানোর বেলায় মানুষের অভাব থাকে না। পাড়া-প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন সবাই তোমার পেছনে লাগছে। আমার মনে হয় এসব এড়ানোর একটাই উপায়। তা হলো— সব সময় মাথায় রাখতে হবে এসবে কেবল তুমি একা ভুগছো না। তোমার সাথে, তোমার আগে এমনকি ভবিষ্যতেও এমন ভুক্তভোগী আসবে। তোমার অগ্রজ যদি এই কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে তুমিও পারবা। তোমাকে যারা কঠিন সময় দিচ্ছে তাদের সাথে তর্কে না গিয়ে মহান স্রষ্টার উপর ছেড়ে দাও। তিনি বিচার করবেন। তুমি বরং তাদের হেদায়াতের জন্য দোয়া করে দিও।

পড়তে পড়তে যখন মাথা ধরে যাবে, একঘেয়েমি চলে আসবে, পড়া বন্ধ করবে, চোখ বন্ধ করে কয়েকবার নিঃশ্বাস নেবে। তারপর মনের চোখে ভবিষ্যৎ তোমাকে দেখবা। সাদা এপ্রোন পরে মুখে একটা মায়াবী হাসি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছ জনমানবের সেবায়। কত মানুষের দোয়া আর ভালোবাসা পাচ্ছ তুমি। তোমার এই নির্ঘুম পরিশ্রম, এত স্যাক্রিফাইস মনে হচ্ছে সার্থক হয়েছে। Its really worth it. একবার শুধু ভেবে দেখ অল্প কিছুদিন পরিশ্রমের ফল স্বরূপ তুমি চিরন্তন সুবিধা, ব্লেসিংস পেতে যাচ্ছ। একবার চান্স হয়ে গেলে তুমি দেখবা যেখানেই যাও নিজেকে মনে হবে হ্যাঁ তুমিও সমাজের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। এত কিছু পাওয়ার জন্য একটু তো কষ্ট সহ্য করা যায় তাই না!

ভর্তি পরীক্ষার আগে অসামাজিক হতে হবে। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সর্বোপরি সমগ্র মানবজাতির জন্য হিতকর। এতে কোনো ক্ষতি নেই। সত্যি নেই! পরীক্ষার আগের এই সময়ে দুইটা বিয়ের দাওয়াত মিস! যেওনা কাজিনের জন্মদিনে। হাই-হ্যালো করলা না কাছের বন্ধুদের সাথে। আর যদি রিলেশনে থাকো, ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করেই থাকলা দূরে!

এডমিশন ক্যান্ডিডেটরা আরেকটা সমস্যায় পরে আর তা হলো— বেশিক্ষণ মনোযোগ ধরে রাখতে না পারা। ধর ১ ঘণ্টা পড়লে। তারপর একবার যেয়ে মোবাইল ধরলে, কীভাবে ৩ ঘণ্টা পার হয়ে গেল বুঝতেই পারলে না। আমার সাথেও হয়েছিল। তোমাকে যদি বলি মোবাইল, ইন্টারনেট থেকে পুরোপুরি এই নিজেকে বিরত রাখ সেটা মনে হয় না ২০% এর বেশি Follow করতে পারবে। আমি কিন্তু এই ২০% এর মধ্যে থাকার চেষ্টা করেও থাকতে পারিনি। কিন্তু চান্স পেয়েছি। তুমি যেটা করতে পার, নিজেকে প্রতিজ্ঞা করবা স্টাডি বিষয়ক কিছু নেটে দেখার সময় বিনোদনের কিছু দেখবা না। বিনোদনের জন্য তোমার আলাদা টাইম থাকবে। তুমি ১ ঘণ্টা মনোযোগ দিয়ে পড়লে। তারপর ঘড়িতে টাইমার দিয়ে ১৫ মিনিট সোশ্যাল মিডিয়াতে কাটালে। তারপর দেহ একটু নাড়াচাড়া দিয়ে আবার পড়তে বসলে। এবার টানা ৩ ঘণ্টা পড়লে। তারপর চাইলে একটা সিনেমার ৩০ মিনিট দেখে রাখতে পার। এই নিয়মটা তাদের জন্য প্রযোজ্য যারা একটানা অনেকক্ষণ পড়তে পারে না। অথবা মোবাইলে একটু বেশি সময় কাটানোর অভ্যাস। যারা মোবাইল থেকে নিজেকে সংযত রাখতে পারবে না তারা নিজ স্বার্থে নিজেকে সংযত রাখিও। তোমরা পড়ার মাঝের ব্রেকে অন্য কিছু করতে পার, তোমাদের শখের জিনিসগুলো যেমন ছবি আকা, গান করা, বই পড়া ইত্যাদি। এটাও ১৫ মিনিট টাইমার সেট দিয়ে করবে। এভাবে করতে থাকলে দেখবে এক্সামের শেষ ১০/১২ দিন তোমার মোবাইল চালানোর নেশা থাকছে না। একটানা মনোযোগ দিয়ে অনেকক্ষণ পড়তে পারছ। মানুষ অভ্যাসের দাস বলে কথা।

ভর্তি পরীক্ষার আগে অসামাজিক হওয়া
ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সর্বোপরি সমগ্র মানবজাতির জন্য হিতকর। এতে কোনো ক্ষতি নেই। সত্যি নেই! পরীক্ষার আগের এই সময়ে দুইটা বিয়ের দাওয়াত মিস! যেওনা কাজিনের জন্মদিনে। হাই-হ্যালো করলা না কাছের বন্ধুদের সাথে। আর যদি রিলেশনে থাকো, ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করেই থাকলা দূরে!

বাড়ির সবাইকে বোঝাবা যেন এই ২ মাস দাওয়াত দেয়া নেয়া কম করে। না করলে আরো ভালো। যদি বাসায় মেহমান আসে তুমি নিজের রুম বন্ধ করে পড়বে। শুধু যাবার সময় সালাম জানাবে আর দোয়া করতে বলবে। যদি বাসায় পারসোনাল রুম না থাকে হাতে ল্যাম্প নিয়ে বেড়িয়ে পড়বে নিরিবিলি জায়গায়। মনে রেখ তুমি প্রতিষ্ঠিত না হতে পারলে ওই আত্মীয়রাই তোমাকে দাম দেবে না। কটু কথা বলবে। নিজেকে সাপোর্ট করবা No matter what the situation is!

আরো অনেক রকম সামাজিক সমস্যা থাকতে পারে। সেগুলো কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় তা তোমার নিজেকেই ঠিক করতে হবে। তুমি ছাড়া পৃথিবীতে কেউ তোমাকে সাহায্য করতে পারবে না । তাই নিজের পাশে থাকার চেষ্টা করবে। ভবিষ্যতে নিজের ক্ষতি হয় এমন কাজ করবে না।

প্রতি বছর পরীক্ষার আগে দেখবা তোমার অনেক ব্যাচমেটের বাবা, না হয় মা, না হয় খুব কাছের মানুষটি চলে যায়- না ফেরার দেশে। এ সময়টাতে যে কতটা মানসিক চাপ থাকে তা যার যায় সে বোঝে। এর সাথে ফিন্যান্সিয়াল ক্রাইসিস চলে আসে। তুমি বড়জন হলে তো পুরো পরিবারের দায়িত্ব তোমার কাঁধে চলে আসে। এমন দু:সময় প্রতি বছরই কাটিয়ে উঠে অনেকেই ঢাকা মেডিকেলে চান্স পায়। 

তুমি ১২ বছর ধরে শুনে আসছ তুমি পড়ুয়া ভালো স্টুডেন্ট। তার মানেই কি তুমি চান্স পাবে! তুমি শুনেছ তুমি খারাপ স্টুডেন্ট, পড়ুয়া না। তার মানে কি তুমি চান্স পাবে না! এবার কীভাবে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য আমি পড়ালেখা করেছিলাম তা নিয়ে একটু বলি। আমার ব্যাকআপ প্ল্যান ছিল-

১) ইঞ্জিনিয়ারিং
২) ভার্সিটি
৩) আইবিএ
৪) জার্মানি

সেকেন্ড টাইম কোথাও পরীক্ষা দেওয়ার প্ল্যান আমার ছিল না। এত ধৈর্য নাই। এসব প্ল্যান যে কেবল এক্সাম দিয়ে টিকার প্ল্যান করছিলাম তা না। কি নিয়ে পড়লে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার কেমন হবে, কি কি সুযোগ-সুবিধা পাব, কি কি অসুবিধা হতে পারে, আমি সুখি থাকতে পারব কিনা এই সব কিছু নিয়ে চিন্তা করেছিলাম। আমার বিশ্বাস ছিল পারপাসফুল লাইফ লিড করার জন্য কেবল ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া লাগে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিল আমার পারপাসফুল লাইফ আমাকে একদিন সফলতার শিখরে পৌঁছে দেবে, আমি যা নিয়েই পড়ি না কেন! ইনশাল্লাহ। হয়তো শুরুতে আমার চারপাশের মানুষ আমাকে পাত্তা দেবে না। কিন্তু একদিন আসবে যেদিন তারা স্বীকার করবে।

ছোটবেলা থেকে আমি শুনে আসছি আমি নাকি ভাল স্টুডেন্ট। ভাল রেজাল্ট করি। আমি কিন্তু বই পোকা না। আবার অমন পড়ুয়াও না। আমার মনে হয় আমার ভাল রেজাল্ট করার পিছনে একটা কারণ হলো আমি সব সাবজেক্ট এ এভারেজ ভালো মার্ক্স পেতাম। আমি কিন্তু কোনো কালেই যেকোনো ১/২ টা বিষয়ে অনেক এক্সপার্ট ছিলাম না। কোনো দিন অলিম্পিয়াড এ টিকি নাই। সব বিষয়ে এভারেজ ভালো মার্ক্স পাওটা যে কত গুরুত্বপূর্ণ তা মার্ক দেয়ার পর সবাই হারে হারে বুঝতে পারে। কিন্তু কিছু করার থাকে না। একটা হিসাব দেখাই চল। এই হিসাবটা আমিও প্রায় করতাম নিজেকে সান্ত্বনা দেয়ার জন্য।

  • বায়োলজি-৩০
  • পদার্থ-২০
  • রসায়ন-২৫
  • ইংরেজি-১৫
  • সাধারণ জ্ঞান-১০

মার্ক ডিস্ট্রিবিউশন
গত কয়েক বছরের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন বিশ্লেষণ করলে দেখবে সর্বোচ্চ ৩-৫ টা প্রশ্ন থাকতে পারে যেগুলো তুমি কখনো দেখনি। কোথা থেকে দিয়েছে তাও জান না। মেডিকেলে চান্স পাওয়ার জন্য ওই ৫ টা তোমার পারাও লাগবে না। এমন কি ঢাকা মেডিকেলে চান্স পাওয়ার জন্যও ওটা তোমার জানা লাগবে না। (বি.দ্র: ২০২১ পর্যন্ত প্রশ্ন ও মার্ক এনালাইসিস করে প্রাপ্ত ধারনা। ভবিষ্যৎ এ ধারনা পরিবর্তন যোগ্য)

ধর তুমি এভারেজ স্টুডেন্ট। বায়োলজি তে =২৫ পদার্থ=১৫ রসায়নে =২০ ইংরেজিতে=১০ সাধারণ জ্ঞানে=৫। টোটাল=৭৫ মার্কস। এই মার্কসে এবছর কিন্তু মেডিকেলেই চান্স হয়েছে অনেকের। বিগত বছর গুলো এনালাইসিস করে দেখবা ৬৫-৭৫ মার্কস পেলে একটা সিট নিশ্চিত করা যায়। তুমি ধর বায়োলজি এর একটা অধ্যায় পড়লা। তারপর প্রশ্ন ব্যাংক থেকে লাস্ট ১৫ বছরের প্রশ্ন সলভ করবা। দেখবা বেশির ভাগই পারছ। প্রশ্ন কিন্তু অত কঠিন হয় না। কঠিন লাগে কেন তাহলে! এক সাথে সব সাবজেক্ট এর এক্সাম দিতে হয় তাও আবার আলাদা থাকে প্রশ্ন। ৬০ মিনিটে ১০০ টা উত্তর এর বৃত্ত ভরাট করতে হয়। তাই প্রশ্ন কিন্তু সহজ আসলেও আমাদের কাছে কঠিন হয়ে যায়। এর জন্য চাই অনুশীলন আর সময়ের সঠিক ব্যবস্থাপনা। এবার (২০২১-২২)জাতীয় মেধায় ডেন্টালে এগারতম যে হয়েছে সে আমার স্কুল লাইফের বন্ধু। ওর ভিডিও তোমরা দেখলে বুঝবে এক্সাম হলে টাইম ম্যানেজমেন্ট কত জরুরী। সময় এর সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে ওর মেডিকেলে চান্স মিস গিয়েছিল। কিন্তু দেখ ও কিন্তু হতাশ হয়নি। ঠিক নিজেকে ওভারকাম করে এগিয়ে গেছে।

প্রিপারেশনের শুরু থেকে মাথায় একটা জিনিস আমি গেঁথে দিয়েছিলাম, যাই হোক, যত কঠিন প্রশ্ন আসুক, আমার জানার বাহিরে আসুক, বসার পরিবেশ, ডেস্ক, টিচার যেমনই হোক— আমি টাইম ম্যানেজমেন্ট ঠিক রাখবো। আমার টার্গেট ছিল একবার দেখেই ১০০% জানা এমন প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রথম ৩০ মিনিটে দাগাব। যদি তোমার কমপক্ষে ৫৫টাও দাগানো হয়, তুমি রিস্ক ফ্রি থাকতে পার। এরপরের ধাপে জানা কিন্তু একটু ক্যালকুলেশন, থিংকিং ও এনালাইসিস করতে হবে; এমন প্রশ্নগুলোর উত্তর দাগাবা। তারপর ৩টা অপশন কখনো মিলতে পারে না; যদি এমন মনে হয় ওটা দাগাবা। এরপর দুইটা অপশনের মধ্যে মিলিয়ে দাগাবা। রিস্ক নিতে হবে এমনভাবে, যেন লস না হয়। এ পর্যায়ে যদি তোমার ৮০+ বা ৮৫+ দাগানো নিশ্চিত হয়; তাহলে নেগেটিভ মার্কিং হয়েও ভাল কলেজ পাবার চান্স থাকে। যদি ৭৫+ দাগাও তাহলে পাস মার্ক উঠবে। আবার কাট মার্ক্সও উঠতে পারে। তবে পুরোটাই নির্ভর করছে ওই বছরের উপর। দেখা যায়, তুমি এক্সাম দেয়ার পর যা ভবিষ্যদ্বাণী করবা; তার থেকে ৫ মার্ক কম আসছে। আমার ক্ষেত্রে ৩মার্ক কম আসছিল। তাই ৭০টা ১০০% নিশ্চিত হয়ে দাগানো সেফ।

আর বাকি ১০টা ৮০%, আর আরো ৫টা ৬০% এবং আরো ৫-১০টা ৫৫% নিশ্চিত হয়ে দাগালে ভালো কলেজ পরার চান্স বেশি। এভাবে ৮৫-৯৫টা উত্তর করলে টপ ১০ কলেজ তোমার। আর যদি কেবল একটা সিট চাই তোমার; তাহলে প্রশ্ন যদি স্ট্যান্ডার্ড ইজি হয় তাহলে ৭০টা ১০০%, বাকি ৭-১০টা ৮০% নিশ্চয়তা দিয়ে দাগাবা। চান্স পাওয়ার জন্য এতটুকু মার্কস এনাফ। এই হিসাবটা ২০২১-এর আলোকে আমি বলছি। তোমাদের বেলায় আরেকটু কম বা বেশি মার্কসে চান্স হতে পারে। তবে তা নির্ভর করে ওই বছরের উপর। এজন্য তোমাকে তোমার বছরের সিলেবাস, প্রশ্ন প্যাটার্ন, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা সব কিছু মথায় রেখে বিশ্লেষণ করতে হবে।

আচ্ছা এবার বলি আমি কীভাবে পড়তাম। ২০২১ সালের এইচএসসির আগ পর্যন্ত ইঞ্জিনিয়ারিং বা মেডিকেল কোনোটাই সিরিয়াসলি পড়ি নাই। তবে প্রতিটি বিষয়ে কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে পড়েছি। ম্যাথ ও অনেক প্র‍্যাকটিস করতাম। এইচএসসি পরিক্ষার সময় অতো সিরিয়াস ছিলাম না। বা জীবন দিয়েও পড়ি নাই। দুইটা সৃজনশীল লেখার জন্য এত পরিশ্রম করার ইচ্ছাই ছিল না। যা হোক পরীক্ষার ২০ দিন তো রিল্যাক্স ছিলাম। তাই চিন্তা করেছিলাম, এক্সাম শেষ হলে একদিন ছুটি নেব; তারপর ধুমায়ে পড়ব।

পড়েও ছিলাম। ডিসেম্বরের শেষ ১০ দিন অরগানিক কেমিস্ট্রি হাজারি স্যারের বই লাইন বাই লাইন ভালোমতো পড়েছি; যেন এক্সামের আগ দিয়ে একটু দেখলেই হয়। চিন্তা ছিল একটাই, অরগানিক থেকে যাই আসুক ভুল করব না। যত কঠিন প্রশ্ন আসুক না কেন! নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে। তবে সহজ প্রশ্ন এসেছিল অরগানিক থেকে মার্ক দেয়ার পর একটা জিনিস রিয়েলাইজ করেছি যে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রেডিকশন করা টপিকগুলো না আসার সম্ভাবনা অনেক। তাই বলে প্রেডিকশন করবা না এমন না। এক্সাম হলে প্রেডিকশনের বাহিরের প্রশ্ন দেখে ঘাবড়ে যাওয়া যাবে না একদমই।

আমার মূল প্রস্তুতি শুরু হয় ২০ জানুয়ারি থেকে যখন ঘোষণা দিল ফুল সিলেবাস। আমি সাহস করে ইঞ্জিনিয়ারিং প্রস্তুতি একদম বাদ দিয়ে লেগে পড়লাম মেডিকেলের পেছনে। এক এক সাবজেক্টের প্রিপারেশন নেয়ার পদ্ধতি এক এক রকম। তাহলে আলাদা করেই বলি।

১) তোমাদের লাইফে এক শ্রেণির স্টুডেন্ট দেখেছ যারা ভাবে বায়োলজি কেবল মুখস্থ বিদ্যা। বায়োলজি তাদের কাছে বোরিং লাগে। মাথায় ঢুকে না এত এত তথ্য! হ্যাঁ! আমি তাদেরই একজন ছিলাম। তবে বায়োলজি প্রিপারেশন নিতে গিয়ে আমার ধারনা অনেকটাই বদলে গেছে।

৬ মাস ধরে শর্ট সিলেবাসের চ্যাপ্টারগুলো ছুঁয়ে দেখিনি। কারণ ফোর্থ সাবজেক্ট এক্সাম দিতে হয়নি আমার। ১ বছর হলো শর্ট এর বাহিরের চ্যাপ্টারও পড়া হয়নি। এখন তো সময়ও নেই তেমন। আমি তাই চ্যাপ্টারগুলোর উপর কোচিং (অনলাইন)+ইউটিউব ফ্রি ভিডিওগুলো বারবার দেখতে থাকলাম। ১ বার দেখা হলে ২x এ দিয়ে ৬/৭ বারো দেখেছি। অন্য সাবজেক্টেও এমন করেছি। দেখি চ্যাপটারটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। অনেক খুঁটিনাটি ইনফো আমার মনে থাকছে। সেই সাথে সাবজেক্ট আর অধ্যায়ভিত্তিক প্রশ্ন ব্যাংক আমাকে অনেক সাহায্য করেছিল। আমি একটা চ্যাপটার থেকে বিগত বছরে কী কী প্রশ্ন এসেছে তা এনালাইসিস করতাম। আর ওই রিলেটেড যত কিছু আছে পড়ে ফেলতাম। এগুলাই বারবার পড়তাম। আর আয়ত্তে চলে এলে বইয়ের বোল্ড লাইনগুলো পড়তাম। এরপর কোচিং/প্রাইভেট থেকে যেই ইনফোগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলত ওগুলো পড়ে ফেলতাম। এরপরের ধাপে দেখতাম কোন চ্যাপটার থেকে শেষ কয়েক বছরে সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন এসেছে এবং যেই চ্যাপটার থেকে প্রতিবারই প্রশ্ন আসে। ওই চ্যাপ্টার গুলো তখন লাইন বাই লাইন পড়তে পারলে অন্য রাইটার এর বইও পড়তাম।

২) রসায়ন সবাই আমরা ভালোই পড়ি। কিন্তু প্রশ্ন সলভ করতে গেলে ভুল হয় বেশি। এর একটি কারণ বইয়ের পেছনের উত্তর মাঝে মাঝে ভুল থাকে। আরেকটি কারণ কনসেপ্ট ক্লিয়ার করে পড়ি না আমরা। কলেজের স্যারদের নোট, অনলাইনের ভালো ভালো ভিডিও আমি দেখতাম এবং আয়ত্তে আনতাম। রসায়নের সৃজনশীলগুলোর কনসেপ্ট ক্লিয়ার থাকলে তা এমসিকিউতেও সাহায্য করে। অনেক ভালোভাবে পড়ার পরো দেখবা এমসিকিউ সলভ করতে হিমশিম খাচ্ছ। ব্যাপার না। এমসিকিউ সলভ করার সময় আবারো বুঝে বুঝে সলভ করো। বারবার সলভ কর। বিগত বছরের মেডিকেল প্রশ্নের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইঞ্জিনিয়ারিংপ্রশ্ন গুলোও সলভ করিও। দেখবা ওখান থেকেও মেডিকেল এ কমন আসে। সব সাবজেক্ট পড়ার সময় প্রশ্ন ব্যাংক এনালাইসিস করে পড়বা। বায়োলজির মতো একই মেথড।

৩) ইঞ্জিনিয়ারিং প্রিপারেশন এর ক্ষেত্রে ফিজিক্স প্রিপারেশন আমার বেশ ভালোই ছিল। কিন্তু মেডিকেলে মুখস্থ আইটেম বেশি থাকায় আমার একটু কষ্ট হয়েছিল। মার্চের ১০ তারিখ থেকে পদার্থ বিজ্ঞান প্রিপারেশন নেয়া শুরু করে ছিলাম। পদার্থ বিজ্ঞানে প্রিপারেশনের ক্ষেত্রে কয়েকটি ‘মূল পয়েন্ট’ মাথায় রাখবা।

  • বিগত সালের প্রশ্ন +এনালাইসিস
  • অনুশীলন এর প্রশ্ন
  • সংজ্ঞা
  • সূত্র (ব্যাখ্যা সহ+প্রয়োগ+কার সূত্র)
  • বিজ্ঞানীদের অবদান বা আবিষ্কার
  • একবার হলেও বই রিডিং /কয়েকবার হলে ভাল

এইচএসসিতে পদার্থ ভালো মতো পড়লে টেনশনের কিছু নাই। ফিজিক্স পার্ট কারো খারাপ হয় না। ম্যাথ আসলে খুব সহজ আসে।

৪) এবার আসি সাধারণ জ্ঞান এ যেটা নিয়ে সবার অনেক কিউরোসিটি থাকে। এটার জন্য অনেকের চান্স মিস যায়। সাধারণ জ্ঞান ,ইংরেজি এবং রসায়ন যার চান্স মিস যায় এদের জন্যই যায়। যদি ধর তোমার কাছে মাত্র ২/৩ মাস সময় আছে। এর আগে কোনোদিন সাধারণ জ্ঞান আর ইংরেজি পড়নি তাদের বলি বিসিএস, মেডিকেল, ভার্সিটি গত ১০/২০ বছরের প্রশ্ন সলভ করে যাও।দেখবা সাধারণ জ্ঞান রিপিট করে। কিন্তু আমাদের বেলায় সাধারণ জ্ঞান প্রশ্ন একটু ব্যতিক্রম ছিল। এমন হবে আমরা ভাবি নাই। তবে ৫/৬ টা সহজ ছিল।

সাধারণ জ্ঞান এর জন্য যা পড়বে-
১)মুক্তিযুদ্ধ রিলেটেড তথ্য+ বাংলাদেশ এর প্রাচীন ইতিহাস
২) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রিলেটেড তথ্য এতটুকু পড়লে ৫-৭ মার্কস বা ৮ মার্কস কনফার্ম
৩) বাকি মার্কস আসবে সাম্প্রতিক + পুরস্কার/পদক +খেলাধুলা+অর্জন+বিশেষ ঘটনা+ মহামারি +উন্নয়ন প্রকল্প ইত্যাদি।

আমার ৩টি প্রশ্ন কমন পড়েনি। এর মধ্যে দুইটা ছিল যা জীবনেও দেখি নাই। তৃতীয়টা দেখেছিলাম; কিন্তু উত্তর মনে করতে পারছিলাম না। কারন ওটা মুক্তিযুদ্ধ রিলেটেড ছিল না।

আমার সোর্স: প্রতিদিন একটু একটু করে পড়তে হবে। মুক্তিযুদ্ধ রিলেটেড পড়ার জন্য আমার মেডি জ্ঞানকোষ ভালো লেগেছে। রয়েলটাও ছিল ওটা মাঝে মাঝে দেখতাম। তবে অনলাইন মেডিকেল প্রাইভেট ব্যাচ এর একজন ভাইয়া (মেহরাব হোসেন, DMC) গল্প করে মুক্তিযুদ্ধ ইতিহাস পড়াতেন যা খুব উপকারে দিত। আগে ক্লাস করতাম তারপর বই এর প্রশ্ন সলভ করতাম। শেষ ১৫ দিনে ইউটিউবে এই দুটা চ্যানেল পেলাম। নিউরন প্লাস আর MOD এর আফসানা ইসলাম আরিফা আপু। এই দুই জায়গা থেকে ফ্রি-তে অনেক হেল্পফুল ক্লাসেস পেয়েছিলাম। সাম্প্রতিক এর ওপর+ মুক্তিযুদ্ধ রিলেটেড অনেক তথ্য কীভাবে ট্রিক্স দিয়ে মনে রাখা যায় এগুলো খুবই হেল্পফুল ছিল। আর পরীক্ষার ১০ দিন আগে আমি যেখানে প্রাইভেট পড়তাম ওই গ্রুপে ভাই সাধারণ জ্ঞান রিলেটেড বেশিরভাগ তথ্যের  PDF শেয়ার দিয়ে ছিলেন। ফাইনালি মনে হয়েছিল সব তথ্য এক সাথে কোথাও পেলাম। আর হ্যাঁ তথ্য মুখস্থ করবা। তবে বেশি ভাল হয়, প্রশ্ন সলভ করলে। তাহলে অপশন দেখেও চেনা যায় কোনটা উত্তর হবে।

৫) ইংরেজি প্রশ্ন ব্যাংক ও তুমি এনালাইসিস করবা। দেখবা BCS থেকে অনেক প্রশ্ন সরাসরি চলে আসে। শেষ সময়ে আমি যেটা মনে করি তোমার উচিত বুঝে বুঝে প্রশ্ন সলভ করা। টপিক ধরে ধরে রুলস মুখস্থ করা দরকার নেই। বিগত সালে আসা একটা প্রশ্ন বুঝার জন্য যতটুকু রুলস শেখা লাগবে ততটুকু শিখবা। আমি একজন কলেজের স্যার এর কাছে এক্সাম এর ৭/৮ মাস আগ থেকে ইংরেজি পড়তাম। উনি সপ্তাহে ৩ দিন Apex বইয়ের প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ সলভ করাতেন। তবে সব প্রশ্ন না করিয়ে বেছে বেছে করাতেন। পুরো বই কিন্তু শেষ হয়নি আমাদের। এভাবে বুঝে বুঝে বিগত বছরের অনেক প্রশ্ন সলভ করেছিলাম। প্রতিদিন ১৫টা করে Synonym Antonym ও উনি পড়াতেন। এভাবে Synonym Antonym + কারেকশন বেশ ভালোই পারতাম। আমি বিগত বছরের প্রশ্ন এনালাইসিস করে বের করে ছিলাম কোন কোন টপিক মেডিকেল এ আসে, কোন টপিক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এখানে শেয়ার দিলাম।

মেডিকেল এডমিশন বিশ্লেষণ (Most Important To Least Important ):
1) Correction
2) Appropriate Preposition
3) Syn Ant (BCS, MAT, VARSITY, JOBS )
4) Group Verb
5) Translation
6) Spelling
7) Phrase and Idioms , clause
8) Analogy
9) Gender
10) Miscellaneous
11) Right Form of verbs, Verbs
12) (Noun Gerund Verbals)
13) Number
14) Voice
15) Narration
16) Adverb
17) Pronoun
18) Tense

অন্তত একবার হলেও সব টপিকের প্রশ্নগুলো টাচ করে যাবা। ২১ সালের প্রশ্নের সাথে মিলিয়ে দেখতে পার আমার এনালাইসিস কতটা ঠিক ছিল। সাধারণ জ্ঞানে তোমার সব ঠিক করা লাগবে এমন না। ৬০% এর বেশি সঠিক করার চেষ্টা করবা। ১০-এ ৬,আর ১৫-এ ৮ পেলে পাস মার্কস উঠতেও পারে! কাট মার্কসের জন্য দুইটা মিলায়ে ১৫ + পাওয়া সেফ!

একবার সব সাবজেক্ট এর পুরো বই সম্পূর্ণভাবে ভালো মত পড়ার পর রিভিশন দিতে হবে। ধর তুমি ১ম দিন বায়োলজি ২ পেপার থেকে ১+১ ২টা চ্যাপটার রিভিশন দিলা। পরের দিন এই ২টা চ্যাপ্টার রিভিশন দিয়ে আরো ২টা নতুন চ্যাপ্টার পড়লা। এভাবে লাস্ট দিনে গিয়ে তুমি সব চ্যাপ্টার পড়বা। একদিনে শুধু বায়োলজি না পড়ে সাথে কেমিস্ট্রি ও রাখবা। রসায়নও এভাবে পড়বা যেন শেষ দিনে গিয়ে তুমি সব চ্যাপ্টার এক নজর এ কম সময়ে রিভিশন দিতে পার।

কেন এভাবে পড়বা? একটা জিনিস চিন্তা করো, যদি তুমি একটু হলেও এটা আয়ত্তে আনতে পার, তাহলে পরীক্ষার আগের দিন চাইলে পুরো বই তুমি কম সময়ে রিভিশন দিত পারছ! তোমার অন্য বন্ধুরা হয়ত কয়েকটা চ্যাপ্টার এক সপ্তাহ আগে পড়েছে বলে অনেকটা ভুলে যাচ্ছে। কিন্তু তোমার সেটা মনে থাকছে। আমি রসায়ন এর ১ম ও ২য় পত্রের ১ম ও ৫ম চ্যাপ্টার প্রতিদিন পড়ার চেষ্টা করতাম। অনেকটাই সফল হয়েছিলাম। আমি একটা খাতা বানিয়েছিলাম "এক নজর দেখ"। বায়োলজি নোটস করেছিলাম ওইটায়। সব গুরুত্বপূর্ণ লাইনস বোল্ড করে লিখে রাখতাম। আর এমন করায় পুরো ১ম পত্র আমার ৫ ঘণ্টায় রিভিশন হয়ে যেত।

আমার এনালাইস অনুযায়ী আমি দেখেছি মেডিকেল এর প্রশ্ন নিম্নক্ত জায়গা থেকে আসতে পারে-
১) সব রাইটারের বইয়ের চ্যাপ্টারের পেছনের MCQ প্রশ্ন ডাইরেক্ট অর ইন ডাইরেক্ট। (২১ সালেও এসেছে)
২) বিগত MAT এর প্রশ্ন হুবহু
৩) বিগত MAT এ আসা প্রশ্নের ধরন/ ওই টপিক রিলেটেড
৪) HSC এর বেসিক টপিক/প্রশ্ন যা সৃজনশীল শেখার মাধ্যমে আয়ত্ত হয়।
৫) বইয়ের বোল্ড লাইন
৬) সংজ্ঞা
৭) পারসেন্টেজ,অনুপাত,পরিমান(নিজে বিশ্লেষণ করলে বুঝবা।বড় ভাই আপু/কোচিং থেকে সাহায্য নিতে পার কোনটা পড়তে হবে)
৮) গত কয়েক বছরের এইচসএসসি প্রশ্ন
৯) আবিষ্কারক এর নামের সাথে রিলেটেড টপিক।
১০) সাম্প্রতিক বেশ আলোচিত টপিক(যেমন ভ্যাক্সিন)
১১) জীবনে বইয়ের কোন এক চ্যাপ্টার যখন একবার রিডিং পড়ছিলা তখন একটা /২ টা লাইন চোখে পড়ছিল। পরে আর কখনো পড়া হয়নি। ওই লাইন তুলে দিবে এক্সামে। তোমার চেনা চেনা লাগবে তবুও অচেনা থাকবে।আন্দাজে দাগাবা। অনেকের মিলবে। অনেকের মিলবে না।
১২) জীবনে দেখনি এমন প্রশ্ন(১/২/৩)

কোচিং কি দরকার? অফলাইন নাকি অনলাইন? কয়টা কোচিং করা লাগবে? এটা মনে রাখবা কোনো কোচিংই তোমার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কী কী প্রশ্ন আসবে— তা গিলিয়ে দেবে না। তারা তোমাকে বিভিন্ন ক্লাস, এক্সাম নিয়ে  প্রস্তুত করবেন যেন তুমি ভর্তি পরীক্ষার দিন সর্বাধিক সঠিক উত্তর দাগিয়ে আসতে পার। 

আমার কথাগুলো মিলিয়ে দেখো। কোচিং কি দরকার? অফলাইন নাকি অনলাইন? কয়টা কোচিং করা লাগবে? এটা মনে রাখবা কোনো কোচিংই তোমার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় কী কী প্রশ্ন আসবে— তা গিলিয়ে দেবে না। তারা তোমাকে বিভিন্ন ক্লাস, এক্সাম নিয়ে  প্রস্তুত করবেন যেন তুমি ভর্তি পরীক্ষার দিন সর্বাধিক সঠিক উত্তর দাগিয়ে আসতে পার। কোচিংয়ের কিছু শিক্ষক দেখবা, একটা টপিককে খুব সহজ ভাষায় উপস্থাপন করছেন। কঠিন বিষয়গুলো সহজে মনে রাখার বাস্তব সম্মত কার্যকরী ট্রিক্স, নেমোনিক্স দিচ্ছেন। পড়ার মাঝে মাঝে তোমাকে উৎসাহিত করছেন। এসব যদি তোমার প্রয়োজন হয় তাহলে কোচিং বেছে নিতে পার। একাধিক কোচিং না করাই ভালো। কারণ বাসায় নিজে মেইন বই পড়ার, প্র্যাকটিস করার সময় রাখতে হবে। তবে শেষের দিকে মডেল টেস্ট দিতে পার বিভিন্ন জায়গায়। আমিও দিয়ে ছিলাম এক জায়গায়। তবে ৫/৬ টা এক্সাম দেয়ার পর আর দেইনি। কারণ আমি রিভাইস শেষ করতে পারছিলাম না। এখন দেখ আমি যেভাবে আগে বলেছি সেভাবে প্রশ্ন এনালাইসিস করে যদি নিজে পড়তে পার, মূল বই ভালো মতো পড়, বেশি বেশি প্রশ্ন সলভ আর বাসায় মেডিকেল স্টাইলে এক্সাম (OMR’সহ এক্সাম পেপার পাওয়া যায়। ঘড়ি দেখে এক্সাম দিবা) দাও, নিজে নিজেকে ইন্সপাইয়ার, মোটিভেটেড করতে পার, পড়াকে নিজেই সহজ করে বুঝে নিতে পার, মনে রাখতে পার তাহলে কোচিং না করলেও চলে। তারপরও তোমার ইচ্ছা।

আমি অনলাইনে একটি প্রি-মেডিকেল ব্যাচে ভর্তি হয়েছিলাম। অনলাইন নেয়ার কিছু কারণ ছিল। যদি দুটোই অফলাইনে নিতাম, তাহলে সামলিয়ে উঠতে পারতাম না। কেবল কোচিংয়ে গেলাম, আর চলে আসলাম; তা তো আর না। বাসায় এসে নিজে পড়ার সময় রাখতে হবে। কোচিংয়ের পরীক্ষাগুলো পড়াশোনা করে দিতে হবে। ইঞ্জিনিয়ারিং লিখিত প্র‌্যাকটিস অনেক জরুরি। তাই মেডিকেল অনলাইনে নিলাম। শুধু তা না। মেডিকেল এর লেকচার গুলো আমার নিজের সময় মতো দেখে নেয়ার সুযোগ আছে। ধরা-বাধা ১০/১৫টা ক্লাস না। যতদিন পড়া শেষ না হয়, ক্লাস চলবে। এক ভিডিও চাইলে ৫/৬ বার দেখে তথ্যগুলা একদম মাথায় গেঁথে রাখা যায়। এছাড়াও সবাই একটা অনলাইন গ্রুপে যুক্ত থাকায় কেউ কোনো টপিক/প্রশ্ন না বুঝলে গ্রুপে জিজ্ঞাসা করলে খুব দ্রুত সঠিক উত্তর পাওয়া যায়।

তুমি কোচিং কোথায় করবা এটি আসলে তোমার উপর নির্ভর করে। তোমার কার পড়ানোর সিস্টেম বেশি ভালো লাগে সেটা তুমি যাচাই করবা। অনলাইনের যুগে যাচাই করাটা অনেক সহজ।

এক্সামের ৩০ দিন আগ থেকে একটা জিনিস প্র‍্যাক্টিস করবা। বিগত ২০ বছরের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন যেটি ওএমআর সিটের সাথে থাকবে সংগ্রহ করবা। প্রতিদিন প্রিপারেশন ছাড়াই একটি করে সালের প্রশ্ন নিবা, টাইমার সেট করে মেডিকেল স্টাইলে ওএমআর পরীক্ষা দিবা। এই প্র‍্যাক্টিস তোমাদের কনফিডেন্স বাড়াতে অনেক কাজে লাগবে, আর পরীক্ষার হলের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কীভাবে মোকাবেলা করতে হয় তাও শেখাবে।

অনলাইনে চাইলেই অনেক ফ্রি মেডিকেল ডেডিকেটেড ক্লাস-এক্সাম দিত পার। তারা সত্যি খুব মানসম্মত, কার্যকরী ক্লাস নেন। আমিও করেছি এবং অনেক উপকৃত হয়েছি। যেমন BOB, MOD, Medi Aim, Bondi Pathshala আরো অনেকে আছে। এক্সামের ৩০ দিন আগ থেকে একটা জিনিস প্র‍্যাক্টিস করবা। বিগত ২০ বছরের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন যেটি ওএমআর সিটের সাথে থাকবে সংগ্রহ করবা। প্রতিদিন প্রিপারেশন ছাড়াই একটি করে সালের প্রশ্ন নিবা, টাইমার সেট করে মেডিকেল স্টাইলে ওএমআর পরীক্ষা দিবা। এই প্র‍্যাক্টিস তোমাদের কনফিডেন্স বাড়াতে অনেক কাজে লাগবে,আর পরীক্ষার হলের বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কিভাবে মোকাবেলা করতে হয় তাও শেখাবে।

প্রতিবছর খবরে দেখি অমুক রিকশাচালকের মেয়ে DMC-তে চান্স পেয়েছে। সারাদিন কাজ করে, না খেয়ে রাত জেগে পড়াশুনা করে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। শুনে কেমন গা কাটা দিয়ে উঠে। একটা থ্রিলিং ভাব। কত দৃঢ় মনোবল তাদের! কত ইন্সপায়ারিং তারা! তবে তাদের স্ট্রাগলগুলো কিন্তু সবাই কাটিয়ে উঠতে পারে না। অনেকের পাশে তাদের পরিবারও থাকেন না। কোচিং তো দূরের কথা পরিবারের কাছে ভর্তির ফর্ম তুলার টাকাও চাইতে পারে না অনেকে। এমনেই কত প্রতিযোগিতা একটা সিট নিয়ে তার উপর আবার আর্থিক কষ্ট। তাদেরকে আমি আর কি বলি বলো! মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে আকুতি মিনতি করে চাও যেন তোমার যাত্রাকে সহজ করে দেন। আল্লাহ চাইলে তোমার টাকার ব্যবস্থা হবে। তুমি কেবল ভালো নিয়ত নিয়ে পড়তে থাক।

কখনো হতাশ হবা না যে কেন আল্লাহ তোমায় এত অভাব দিলেন! ধনী পরিবারে কেন জন্মাল না! এসব নিয়ে আফসোস করা বোকামি। গরীবেরা কষ্টে থাকে এটা সবাই জানে। তাই বলে কি টাকা থাকলেই ধনীদের  আর কোনো সমস্যা থাকে না! তুমি হয়তো টাকার কষ্টে ভালো পোশাক পরে পরীক্ষা দিতে যেতে পারছ না। হয়তো পেটে খুদা নিয়েই ঢুকে গেলে পরীক্ষা দিতে। তোমার পাশে একজন ব্র্যান্ডের জুতা জামা পরে আছে। তুমি তাকে হয়তো ভাগ্যবান ভাববে। কিন্তু তার পেছনের গল্প তুমি জানো না। গত ১ বছর ধরে হয়তো ওর বাবা-মা এর ঝগড়া চলছিল। গতকাল তাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। ওর হয়তো প্রিপারেশন টাইমে আর্থিক কষ্ট ছিল না। কিন্তু এত মানসিক প্রেশার নিয়ে একবার ভেবে দেখ, তুমি পরীক্ষা দিতে পারতা ভালোমতো! গল্পটি বানানো তবে অসম্ভব কিছু না। আমি দেখেছি অনেকের স্ট্রাগল যাদের কোনো আর্থিক কষ্ট ছিল না। তাদের অনেকের আত্মঘাতী প্রবণতাও থাকে। তাই যারা আর্থিক কষ্টে আছ এটা মনে রাখবা অনেক স্বচ্ছল পরিবারের সন্তানরাও অসহনীয় কষ্টে আছে। শুধু তুমি একা না।

সব ফ্যাক্টরগুলো নিয়ে কম বেশি বলা হয়েছে এখন কেবল একটা ফ্যাক্টরি বাকি। আত্মিক বিষয় যদি তুমি স্বীকার কর, তোমাকে সৃষ্টি করেছেন মহান সৃষ্টিকর্তা যিনি এক ও অদ্বিতীয়; তাহলে তোমার সাথে নিশ্চয় সেই মহান শক্তির একটা কানেকশন আছে। তুমি কি শুধুই তোমার ফিজিক্যাল বডি? তোমার একটা আত্মিক অংশও আছে। তাই কেবল ফিজিক্যাল লেভেলে পড়াশুনা করলেই হবে না। স্পিরিচুয়ালি কিছু কাজ করতে হবে। এখন সহজ ভাষায় বলি। প্রতিদিন এর ইবাদত/Prayer (যার যার ধর্ম অনুযায়ী ) সময় মতো করতে হবে। আমি পড়া শুরুর আগে দোয়া করতাম এই বলে যে "হে আল্লাহ কোনো কিছুই সহজ নয় যদি না আপনি তা সহজ করে দেন আপনার বান্দার জন্য। আপনি চাইলেই পারেন কঠিনকে সহজ করে দিতে। হে আল্লাহ আমার অর্জিত এই জ্ঞানকে মানব কল্যাণে ব্যবহার করার তৌফিক দান করুন।আমার যাত্রা কে সহজ করে দিন।"

এভাবে মন থেকে দোয়া  করতে হবে। সব সময় মহান আল্লাহকে স্মরণে রাখতে হবে। এ সময়টা সর্বদা সবার কল্যাণ চিন্তা করবা। সব সময় একটা পজিটিভে vibe-এ থাকবা। পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ করে প্রতিদিনের পড়া শুরু করবা। পবিত্র আল কুরআন পড়লে ব্রেইনের ফ্রিকোয়েন্সি ১০ সাইকেল পার সেকেন্ডে চলে আসে। এই ফ্রিকোয়েন্সিতে ব্রেইন সবচেয়ে বেশি সচল থাকে এবং ভালো বিশ্লেষণ চিন্তাভাবনা করতে পারে। সোর্স নিজেরা খুঁজলেই পাবা। এগুলো মিথ্যা  তথ্য নয়।

তাহলে মহান সর্বশক্তিমান স্রষ্টার কাছে চাইলে এবং মন দিয়ে ভালোমত পড়লেই মেডিকেলে চান্স হয়ে যাবে? আচ্ছা একটা জিনিস ভেবে দেখ, তুমি কি ফিউচার জান? বা দেখতে পাও? আসলে এটা মেনে নেয়া কঠিন কিন্তু মানতে হবে। মহান স্রষ্টা আল্লাহ তায়ালার একটি সুন্দর পরিকল্পনা আছে। তার পরিকল্পনার সাথে তোমার পরিকল্পনা মিললেই তবে তোমার চান্স হবে। নাহলে না।আল্লাহ এর পরিকল্পনা যে সুন্দর তা বুঝতে আমাদের সময় লাগবে। কিন্তু একদিন ঠিকি বুঝব। আমি আমার ভালো মন্দ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে প্রেডিকশন করতে পারলেও নিশ্চিত নই। তাই ব্যাকআপ প্ল্যান ছিল আমার। এই ক্ষণিকের দুনিয়ায় চান্স পাওয়া না পাওয়ার মতো এতটুকু বিষয়ে আমি ভেঙে পরতে চাইনি।

তাই তুমি যতই ব্রিলিয়ান্ট স্টুডেন্ট হও না কেন সাময়িক পরাজয়কে মেনে নেয়ার শক্তি মজুদ কর। সামনে সত্যি সুখের দিন আসছে যদি বিশ্বাসী হও। আর ওরা কি মনুষের পর্যায়ে পরে যাদের কথায় তুমি কষ্ট পাও! আশরাফুল মখলুকাতের চিন্তা-ভাবনা কখনও এত নিচু হতে পারে না। ওদেরকে তোমার ডিকশনারি থেকে মুছে দাও; যারা কেবল তোমার রেজাল্টকে মূল্যায়ন করে। ফলাফল যেমনি হোক, আজ পর্যায়ে আসতে তুমি কত শত দুঃখ, বাধা, নির্ঘুম রাত পারি দিয়েছে। তোমার এই সংগ্রামকে যারা মূল্যায়ন করবে, তারাই আশরাফুল মখলুকাত। তাদের নিয়ে তুমি ভাবনা-চিন্তা করবা। তাদের জন্য কাজ করবা।

বড় বড় অর্জন অনেকেই করেছেন। কিন্তু সবাই সুখী হতে পারে নাই। টিকে থাকতে পারেনি। নিউজ পোর্টালে সবারই নজর পরে এসব খবরের দিকে। তাই এখনি সময় সাবধান হওয়ার। না হলে জাপানের মতো আমাদের দেশেও একটা সুইসাইড ফরেস্ট তৈরি হবে।

ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন আমরা দেখব। কিন্তু অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নামব না। আমাদের অনেক গার্ডিয়ানরাই একটু পরে বুঝবেন বিষয়গুলো। কিন্তু অনেকেরই তখন আর কিছু করার থাকবে না। তবে তুমি তোমার গার্ডিয়ানকে সহজ ভাষায় বুঝানোর চেষ্টা করবা। যদি একবারে না বুঝে তাহলে কথা না বাড়ানোই ভালো। তুমি তোমাকে সাপোর্ট করবা। স্বপ্ন দেখা ছাড়বা না। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার সময় যেন কোনো আফসোস না থাকে— এভাবে জীবনকে পরিচালিত কর। স্টিভ জবসের একটা বিখ্যাত উক্তি দিয়ে আমার জার্নির সমাপ্তি ঘোষণা করছি।

"Remembering that I'll be dead soon is the most important tool I've ever encountered to help me make the big choices in life. Almost everything- all external expectations, all pride, all fear of embarrassment or failure--these things just fall away in the face of death, leaving only what is truly important.

Remembering that you are going to die is the best way I know to avoid the trap of thinking you have something to lose. You are already naked. There is no reason not to follow your heart.

No one wants to die. Even people who want to go to heaven don't want to die to get there. And yet, death is the destination we all share. No one has ever escaped it, and that is how it should be, because death is very likely the single best invention of life. It's life's change agent. It clears out the old to make way for the new."-Steve Jobs (পুনঃপ্রকাশিত)

লেখক: সাদিয়া রহমান রিফা, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, ব্যাচ-৬৪


সর্বশেষ সংবাদ