বিসিএসের ভাইভায় হাসি-খুশি থাকুন, কথা বলুন শুদ্ধভাবে
- মো. সাহাব উদ্দিন
- প্রকাশ: ০৮ মে ২০২৪, ১১:৪১ AM , আপডেট: ০৩ জুন ২০২৪, ০৩:১০ PM
৪৪তম বিসিএসের ভাইভা আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে। ছয়টি বোর্ডের মাধ্যমে এই বিসিএসের ভাইভা নেওয়া হবে। সম্প্রতি ৪৪তম বিসিএসের ভাইভা পরীক্ষার তারিখ ও ভাইভার শিডিউল প্রকাশ করেছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রথমে সাধারণ ক্যাডারের প্রার্থীদের ভাইভা নেওয়া হবে।
একটি বিসিএস উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রিলি-রিটেনের পর ভাইভা হলো একজন প্রার্থীর সবশেষ ধাপ। এ ধাপ সুন্দরভাবে উতরে গেলেই প্রার্থী নিজের কাঙ্খিত ক্যাডার পেতে পারেন। তবে প্রিলি-রিটেন ভালোভাবে শেষ হলেও সবশেষ ধাপে এসে অনেকে ঘাবড়ে যান। চলুন জেনে নেওয়া যাক, শেষ ধাপটা কীভাবে সুচারুরূপে শেষ করতে পারেন-
সময় মতো উপস্থিত
ভাইভা বোর্ডে দেরিতে পৌঁছানো এড়াতে আগেই নিতে হবে পরিকল্পনা। জ্যাম কিংবা অন্য কোন অজুহাতে দেরিতে পৌঁছানো আপনার সম্পর্কে নিয়োগকর্তাদের নেগেটিভ ধারণা দেবে। প্রতি ভাইভাতে এমন কিছু প্রার্থী থাকেন যারা সময় মতো পৌঁছাতে পারেন না।
এই সময় মতো আসতে না পারাটা আপনার অযোগ্যতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। ভাইভা বোর্ডে কোনোক্রমেই দেরি করে উপস্থিত হবেন না। দেরিতে এলে নিয়োগদাতারা ভাইভা নাও নিতে পারেন বা ভাইভার আগেই বাদ দিয়ে দিতে পারেন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সঠিক পোষাক
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতার ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র সঙ্গে নিতে ভুলবেন না। চাকরির আবেদনের সময় এসব কাগজপত্র দিতে হয়, তাই এসব কাগজপত্র নিয়োগদাতাদের কাছে থাকলেও এসব সঙ্গে করে নিতে হবে।
আর একটি কলমও সঙ্গে রাখা দরকার। সেই সাথে নিজেকে পরিপাটিভাবে উপস্থাপন করার গুরুত্বও কিন্তু অনেক। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, শালীন ও মার্জিত পোশাক পরে ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত হতে হবে। পোশাকই কিন্তু আপনার ব্যক্তিত্বের পরিচয় দেবে।
আদব-কায়দা
ভাইভা বোর্ডে প্রবেশের সময় অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করুন। প্রবেশের পর অনুমতি না নিয়েই আবার বসে পড়বেন না। অনেকেই আবার কথা বলার সময় হাত-পা নাড়েন। ভাইভা বোর্ডে কখনোই এরকম করবেন না।
আর একটি বিষয় বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে, যখন যে ব্যক্তি আপনাকে প্রশ্ন করবেন, তার দিকে তাকিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। ভুল উত্তর দেওয়া যাবে না। সব প্রশ্নের উত্তর পারতে হবে এই রকম কোন কথা নেই। না পারলে বিনয়ের সাথে ‘সরি’ বলা ভালো।
কথা বলুন শুদ্ধভাবে
ভাইভা দেওয়ার সময় কথা বলার ক্ষেত্রে আঞ্চলিকতা যেন প্রকাশ না পায় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। কথা বলার সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন আঞ্চলিক টান না এসে যায়। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলাও জরুরি।
হাসি খুশি থাকুন
ভাইবা বোর্ডে যে বিষয়ে প্রশ্ন করা হবে হাসিমুখে তার উত্তর দিন। বেশি কথা বলা বা অপ্রাসঙ্গিক কোনো বিষয়কে টেনে আনা ঠিক হবে না। আবার গোমড়ামুখে বসে থাকলেও কিন্তু তা অযোগ্যতা হিসেবে বিবেচিত হবে। ভাইভা বোর্ডের সদস্যরা বেশি কথা বলা যেমন পছন্দ করেন না আবার গোমড়ামুখের মানুষকেও পছন্দ করে না।
মাথা ঠান্ডা রাখুন
ভাইভা বোর্ডে প্রার্থীর মানসিক স্থিতিশীলতা, সমস্যা সমাধানের যোগ্যতা- এসব বিষয় যাচাইয়ের জন্য অনেক সময় অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। এসময় কোনোক্রমেই উত্তেজিত হওয়া যাবে না। নিজের পরিবার, নিজ উপজেলা, জেলা, পঠিত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়— এগুলো সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। এগুলো সম্পর্কে ভুল তথ্য দিলে অযোগ্যতা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।
সাম্প্রতিক বিষয় সম্পর্কে অবগত হওয়া
এখানকার ভাইভাগুলোতে সাম্প্রতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। এজন্য নিয়মিত পত্রিকা পড়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে।
বিনীত থাকুন
ভাইভা বোর্ডে সব প্রশ্নের উত্তর বিনীতভাবে দেওয়ার চেষ্টা করুন। অনেকেই স্মার্টনেস দেখাতে গিয়ে নাটকীয় ভঙ্গিতে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেন। নিজেকে অভারস্মার্ট ভাবা ঠিক নয়। সুন্দর, সাবলীল ও বিনীতভাবে প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মাধ্যমেই যোগ্যতার বহিঃপ্রকাশ দেখানো যেতে পারে।
লেখক: শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত, ৪৩তম বিসিএস।