এইচএসসির ফল প্রকাশের পর নার্সিং প্রস্তুতিতে আত্নবিশ্বাস ধরে রাখবেন যেভাবে

মিজানুর রহমান বিদ্যুৎ
মিজানুর রহমান বিদ্যুৎ  © সংগৃহীত

সারাদেশে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ফলে অনেকের ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। তারা অনেকেই ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়েছেন। তাদের উদ্দেশ্যে আমি আমার অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু পরামর্শমূলক বিষয় শেয়ার করছি।

আপনারা জানেন, নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় এসএসসি এবং এইচএসসির জিপিএর উপর ৫০ নম্বর থাকে। আর ভর্তি পরীক্ষা ১০০ নম্বরের উপর হয়ে থাকে। এই ১৫০ নম্বরের উপর ভিত্তি করে নার্সিং ভর্তি পরীক্ষার মেধাতালিকা তৈরী করা হয়ে থাকে।

এখন ধরেন, দুর্ভাগ্যবশত আপনার এইচএসসির রেজাল্ট আশানুরূপ হয়নি। তাই আপনি এসব চিন্তাভাবনা করে ভেঙে পড়েছেন। আপনি ভাবছেন যে, আপনার দ্বারা হয়তো আর নার্সিংয়ে চান্স পাওয়া সম্ভব হবে না।

আসলে আপনার ধারণা সম্পূর্ণ ভূল। কারণ এই বিষয়টা আমি আমার গত সাড়ে তিন বছরের নার্সিং এডমিশন নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা এবং আমার নিজের সরকারিতে চান্স পাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে সকল তথ্য শেয়ার করছি।

প্রথমত একটা বিষয় হলো, আপনার একটা ফলাফল কখনো আপনার ভাগ্যকে নির্ধারণ করতে পারে না।তাই ফলাফল খারাপ হওয়াতে মোটেও বিচলিত হবেন না। আপনার এখনো অনেক সুযোগ আছে। সেই পরবর্তী সুযোগগুলো কাজে লাগান ইনশাআল্লাহ সফল হবেন।

প্রতি বছরের নার্সিং এডমিশনের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, নার্সিং ভর্তি পরীক্ষায় কম জিপিএ ধারী শিক্ষার্থীরাও সরকারিতে চান্স পায়। এখন প্রশ্ন হলো, তারা কীভাবে এতো ভালো রেজাল্টধারী প্রতিদ্বন্দীদের পেছনে ফেলে নিজের জায়গাটা সরকারিতে করে নেয়?

তাদের এডমিশন জার্নি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, তারা সবাই কৌশলগতভাবে রেজাল্ট পরবর্তী সময়টা কাজে লাগিয়েছিলো। নিজেকে ছোট করে না দেখে বরং আত্মবিশ্বাসটা ধরে রেখে নিজের সর্বোচ্চটুকু দিয়ে পরিশ্রম করে গেছে। তার জন্যই তারা সফল হয়ে আজকে সরকারি নার্সিং কলেজে চান্স পেয়েছে।

আপনিও তো তাদের মতো একজন হতে পারেন। এখনেই ভেঙে পড়ার মতো কিছু হয়নি। এখনো অনেকটা পথ বাকি আছে। শেষ সময় অবধি চেষ্টা করে দেখো না কি হয়।

প্রতিটি মানুষই তার স্বপ্নের সমান বড়। একটি আঘাতেই ভেঙে পড়া জয়ীদের কাজ নয়, বিজয়ীরা সবসময়ই কাজের শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত পরিশ্রম করে এবং শেষ মুহুর্তের ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করে।

মনে রাখবেন, ‘শেষ ভালো যার, সব ভালো তার।’ আপনি এখনেই ভেঙে পড়লে আপনি এখনেই হেরে গেলেন। তাই আত্নবিশ্বাস রাখুন এবং কৌশলগত ভাবে পরিশ্রম করুন, ইনশাআল্লাহ সফল হবেন।

আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যদি বলি, আমার সিনিয়র, জুনিয়র, ব্যাচমেট এবং আমার সরকারি নার্সিংয়ে চান্সকৃত স্টুডেন্টসহ আরো অনেককেই খুবই কাছ থেকে দেখেছি। যারা সরকারিতে চান্স পেয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেরই রেজাল্ট কম থাকা সত্ত্বেও তারা মেধাতালিকায় সিরিয়াল করে সরকারি নার্সিং কলেজ অথবা ইনস্টিটিউটে নিজের জায়গা করে নিয়েছে।

তাই এই সময় সময় নিজের মনোবল ধরে রেখে সঠিক উপায়ে পরিশ্রম চালিয়ে যাওয়াই একমাত্র কাম্য। আর যারা সঠিক গাইড লাইনের অভাবে ভুগছেন, অথবা কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন, কি কি পড়বেন, কি কৌশলে পড়াশোনা করলে সহজেই সরকারিতে চান্স পাওয়া যায়, এসকল বিষয়ে আমি আপনাদের সহায়তা করবো।

লেখক: শিক্ষার্থী, রংপুর নার্সিং কলেজ


সর্বশেষ সংবাদ