নার্সিং: সমান সুযোগ দিলে মেয়েদের মত ছেলেরাও ভালো করবে

কর্নিয়া মেডিকেল এন্ড নার্সিং ভর্তি কোচিং
কর্নিয়া মেডিকেল এন্ড নার্সিং ভর্তি কোচিং  © লোগো

ডাক্তারদের সম-মর্যাদার না হলেও নার্সরা কোন অংশেই ডাক্তারদের থেকে কম করেন না। ডাক্তার একজন রোগীর চিকিৎসা লিখে দেওয়ার পর হাসপাতালে তার পরবর্তী সব কার্যক্রম বাস্তবায়নে এ নার্সদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মেডিকেলে পড়ালেখা করে একজন ডাক্তার হন। আর একজন নার্স তৈরি হন কীভাবে? নার্স তৈরির প্রাথমিক ধাপ নিয়ে কাজ করেন এমন একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ‘কর্নিয়া’।

একজন শিক্ষার্থী কীভাবে নার্স হয়ে ওঠেন সে প্রস্তুতি, তাদের কর্মময় জীবন এবং আরও সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মুখোমুখি হয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এস হাসান মাসুদ। তার কথাগুলো শুনেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার মাসুদ পারভেজ জিহাদ ও নিজস্ব প্রতিবেদক আব্দুল কবীর ফারহান

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: পেশা হিসেবে শিক্ষার্থীরা নার্সিংকে কেন বেছে নেবে?
এম এস হাসান মাসুদ: নার্সিং মহৎ একটি পেশা। যাতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি মানবসেবা করার সুযোগ রয়েছে। এখান থেকে বিএসসি ডিগ্রি অর্জনের পর এমএসসিসহ আরো অন্যান্য উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। বিএসসি এবং ডিপ্লোমা পাস করার পরে উচ্চশিক্ষায় এমএসসি, এমফিল এবং পিএইচডি করার সুযোগ আছে। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে নার্সিংয়ের সুযোগ-সুবিধা কেমন?
এম এস হাসান মাসুদ: এই ডিগ্রি অর্জনের পর দেশেই দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির সুযোগ রয়েছে। শুধু আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বিবেচনা করলে এটি পেশা হিসেবে ভালো অবস্থানে আছে। কিন্তু অন্যান্য দেশের তুলনায় এই পেশা আমাদের দেশে বেশ পিছিয়ে আছে।

কারণ অন্য দেশগুলোতে নার্সিং পেশায় থেকে গর্ব করে বলা গেলেও আমাদের দেশে এই পেশার পরিচয় দিতে এখনো অনেকে লজ্জায় ভোগেন। তবে দ্বিতীয় শ্রেণিতে নিয়োগ শুরু হওয়ার পর এই পরিস্থিতি কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। আরো ৩/৪ বছর পর পেশাটির মর্যাদা আরও বাড়বে।

আরও পড়ুন: করোনায় ভাগ্য বদলে গেল ২ হাজার চিকিৎসক ও ৫ হাজার নার্সের

নার্সিংয়ে পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা চাইলে বিদেশে শিক্ষা অর্জন করতে পারবে। পাশাপাশি সেখানে উচ্চবেতনে চাকরি করতে পারবে। এছাড়া সিভিল সার্ভিসে পরীক্ষা দিয়ে সরকারি চাকরিতেও যোগদান করতে পারবে এই ডিগ্রি ধারীরা। বিএসসি এবং ডিপ্লোমা পাস করার পরে উচ্চশিক্ষায় এমএসসি এমফিল এবং পিএইচডি করার সুযোগ আছে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নার্সিংয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য কোচিং জরুরি কিনা?
এম এস হাসান মাসুদ: শুধু নার্সিং নয়, কোন পরীক্ষার জন্যই কোচিং জরুরী নয়। তবে কোচিং করলে যেকোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য নিজেকে যেভাবে এগিয়ে রাখা যায়, অন্যথায় সেটা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে সবগুলো বিষয় সম্পর্কে শুরু থেকেই প্রতিযোগিরা সঠিক ধারণা পেয়ে যান, যা অন্যদের জন্য একা একা তৈরি হওয়া সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।

নার্সিং পাস করে বের হলেই সবার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়ে যায়। বেসরকারিভাবেও অনেক প্রতিষ্ঠানে নার্সিং পেশায় ভালো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নার্সিংয়ে কোটা পদ্ধতির কারণে ছেলেদের সুযোগে স্বল্পতা রয়েছে। ফলে এটিকে শুধু মেয়েদের পেশা মনে করা হয়। এই ধারণা পরিবর্তনের জন্য ভর্তিতে আসন নিয়ে নতুন করে ভাবার দরকার আছে কিনা?
এম এস হাসান মাসুদ: বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মত নার্সিংয়ে ভর্তিতেও ছেলে-মেয়ে সবাইকে সমান সুযোগ দেয়া দরকার। এতে ছেলেরা আরও আগ্রহী হবে। এছাড়া মেয়েদের চেয়েও ছেলেরা এই পেশায় অধিক ভূমিকা রাখতে পারবে। কেননা তারা রাতেও দায়িত্ব পালন করতে পারবে এবং ওভারটাইমও করতে পারবে।

প্রয়োজনের তুলনায় নেই প্রশিক্ষিত নার্স, মান বাড়ছে না সেবার

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: দেশে নার্স সংকট নিরসনে করণীয় কি?
এম এস হাসান মাসুদ: এই পেশার নিয়মানুযায়ী ১ জন ডাক্তারের জন্য ৩ জন নার্স দরকার, সেখানে বাংলাদেশে ২ জন ডাক্তারের জন্য ১ জন নার্স রয়েছে। সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে এই পেশায় আরো উদ্বুদ্ধ করা দরকার। এখনো মেডিকেলের শিক্ষকরা নার্সিং কলেজে ক্লাস নিয়ে থাকেন, এখানে নার্সিংয়ের শিক্ষকদের দিয়েই পাঠদান করানোর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানগুলোর আরও উন্নয়ন দরকার।

আরও পড়ুন: করোনায় ১০ হাজার ডাক্তার, ১৫ হাজার নার্স নিয়োগ হয়েছে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নার্সিংয়ের বর্তমান সুযোগ সুবিধা যথেষ্ট কিনা?
এম এস হাসান মাসুদ: নার্সিং পাস করে বের হলেই সবার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়ে যায়। বেসরকারিভাবেও অনেক প্রতিষ্ঠানে নার্সিং পেশায় ভালো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তবে কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নার্সরা প্রত্যাশা অনুযায়ী সুযোগ পান না। এক্ষেত্রে আগামীতে এই পেশার অগ্রগতির জন্য সুবিধা আরও বৃদ্ধি করা দরকার।

নার্সিং পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে | প্রথম আলো

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: নার্সিংয়ে ভর্তি কোচিং হিসেবে কর্নিয়া কেমন ভূমিকা রাখছে?
এম এস হাসান মাসুদ: আমরা দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক বিভিন্ন টেস্টসহ নানা ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্যাটাগরি তৈরি করি। এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের আলাদাভাবে তত্ত্বাবধান করা হয়। বিভিন্ন পরীক্ষায় যাদের ফলাফল খারাপ হয় তাদের ভিন্নভাবে পর্যবেক্ষণ করে পরীক্ষায় টেকানোর উপযোগী করে তোলা হয়। এ পর্যন্ত কর্নিয়ার ভালো বেশ সাফল্য রয়েছে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেও আমরা সেরাদের বাছাই করে থাকি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মত নার্সিং ভর্তিতেও ছেলে-মেয়ে সবাইকে সমান সুযোগ দেয়া দরকার। এতে ছেলেরা আরও আগ্রহী হবে। এছাড়া মেয়েদের চেয়েও ছেলেরা এই পেশায় অধিক ভূমিকা রাখতে পারবে।

যার ফলে বিগত দুই সেশনে ভর্তি পরীক্ষায় আমাদের কোচিংয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা ১ম হওয়ার পাশাপাশি মেধাতালিকায় শীর্ষস্থান অর্জনসহ অধিক চান্স পেয়েছে। বিগত কয়েক বছরেই অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছে আমাদের কোচিংয়ের শিক্ষার্থীরা। 

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: কর্নিয়া শিক্ষার্থীদের কি ধরনের স্টাডি ম্যাটারিয়ালস দেয়?
এম এস হাসান মাসুদ: বিষয় ভিত্তিক আলাদা আলাদা লেকচার শীট ও বিষয় ভিত্তিক বই দেওয়া হয় সাথে থাকে কর্নিয়া গাইড ও প্রশ্ন ব্যাংক এবং শর্ট সাজেশন।

দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাস: আপনার গুরুত্বপূর্ণ সময়ের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
এম এস হাসান মাসুদ: দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের জন্যেও শুভ কামনা রইলো।


সর্বশেষ সংবাদ