পরীক্ষার দুই হাজার উত্তরপত্র হারিয়ে শাস্তি শুধু ‘তিরস্কার’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২১, ০৯:২৩ AM , আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২১, ০২:১৪ PM
কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীন ২০১৯ সালের উচ্চ মাধ্যমিক বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) পরীক্ষার পরীক্ষার দুই হাজার উত্তরপত্র হারিয়ে ফেলেছিলেন বোর্ডের তৎকালীন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. সুশীল কুমার পাল। পরে এসব হারানো খাতার বিপরীতে মনগড়া নম্বরও দেওয়া হয়। ঘটনা তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়ার পর শাস্তি স্বরূপ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ তাকে ‘তিরস্কার দণ্ড’ প্রদান করে।
এ বিষয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বলা হয়, ড. সুশীল কুমার পালের বিরুদ্ধে ‘অসদাচরণের’ বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। তবে তিনি ভুল স্বীকারসহ ক্ষমা প্রার্থনা করায় সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর বিধি ৪(ক) অনুযায়ী লঘুদণ্ডের আওতায় উপবিধি ২(ক) অনুসারে ‘তিরস্কার’ দণ্ড প্রদান করা হলো।
কারিগরি শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে সুশীল কুমার পাল পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে থাকাকালীন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট (বিএম) পরীক্ষার প্রায় দুই হাজার উত্তরপত্র হারায়। তারপরও তিনি নিয়মানুগ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে উল্টো হারানো উত্তরপত্রের বিপরীতে মনগড়া নম্বর দেওয়ার ব্যবস্থা নেন। তখন আর্থিক লেনদেনের বিনিময়ে হারানো উত্তরপত্রের বিপরীতে নম্বর দেওয়ারও অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সুশীল কুমারের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী বিধিমালা অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ দাখিল করা হয় কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগে। বিষয়টি আমলে নিয়ে মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবের মাধ্যমে তদন্ত করা হয়। এ ঘটনার পর বোর্ড থেকে তাকে বদলি করা হয়। বর্তমানে তিনি মুন্সীগঞ্জ সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
সুশীল কুমারের বক্তব্য, সরকারপক্ষের বক্তব্য এবং সংশ্নিষ্ট নথি ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় বলে জানান কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তবে নম্বর দেওয়ার ক্ষেত্রে অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে তার জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলেও জানান তিনি।
জনপ্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বিভাগীয় মামলার ক্ষেত্রে লঘু ও গুরু দুই ধরনের দণ্ড দেওয়া হয়। লঘুদণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে লঘু হলো ‘তিরস্কার’। এর উপরের লঘুদণ্ড হলো ইনক্রিমেন্ট বন্ধ, কোনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পদোন্নতি স্থগিত ইত্যাদি।
বোর্ডে যোগদানের আগেই এ ঘটনা ঘটেছিল জানিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মোরাদ হোসনে মোল্লা বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানাবিধ কারণে যদি বোর্ডের কোনো পরীক্ষার উত্তরপত্র হারিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ওইসব শিক্ষার্থীর জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হওয়ার সুযোগ নেই।