ঘরে বসেই চাকরি করেন আমেরিকাতে, মাসে আয় লাখ টাকা
- রায়হান ইসলাম
- প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২২, ০৩:১৭ PM , আপডেট: ১৪ জুন ২০২২, ০৪:৫২ PM
প্রযুক্তিগত উন্নতি ও নিত্যনতুন ব্যবহারে পরিবর্তন হয়েছে জীবনযাত্রার রূপ। ফলে এখন ঘরে বসে অফিস ও বিশ্ব ভ্রমণসহ উপার্জিত হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এমনকি প্রযুক্তি এই মহাবিপ্লবে চাকরির জন্য এখন অন্যের দাড়েও ঘুরছে না বিশ্বের অনেক তরুণ-তরুণী। কেননা ঘরে বসে ফ্রিলান্সিং করেই লাখ টাকা আয় করার সুযোগ পাচ্ছেন তারা।
বাংলাদেশের এমনই একজন তরুণ ফ্রিল্যান্সার তরিকুল ইসলাম তুষার। রংপুরের এই তরুণ ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসেই চাকরি করছেন আমেরিকার অফিসে। বর্তমানে তিনি আমেরিকান একটি ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সিতে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) স্পেসালিস্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এমনকি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ফাইবার ও আপওয়ার্কে টপ রেটেড ফ্রিল্যান্সার হিসাবে যুক্ত রয়েছেন তিনি। গতবছর আপওয়ার্কে বাংলাদেশের সবচেয়ে দক্ষ সিইও ফ্রিল্যান্সার হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন তরিকুল।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ফোর্বসে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে বিশ্বব্যাপী অর্থ লেনদেন বিষয়ক প্লাটফর্ম পাইওনিয়ারস গ্লোবাল গিগ ইকোনমি ইনডেস্কে বিশ্বজুড়ে ফ্রিল্যান্স মার্কেটে বাংলাদেশের অবস্থান ৮ম। কেননা দেশে যুবকদের মধ্যে স্বল্প পরিসরে ফ্রিল্যান্সিং প্রবণতা থাকলেও করোনার মধ্যে এই প্রবণতা বেড়েছে বহুগুণ। বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই ঝোঁক বেশি লক্ষণীয়। ফলে নিজের টাকায় পড়াশুনা চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অনেকে পরিবারের হালও ধরছেন।
এসব দিক বিবেচনা করে নিজে আয় করার পাশাপাশি তরুণদের বেকারত্ব দূর করার স্বপ্ন দেখাচ্ছেন তুষার। তিনি মনে করেন, দেশের সংকুলান এই চাকরির বাজারে ঘুরে হতাশ না হয়ে, ফ্রিল্যান্সিং করে নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিকে একধাপ এগিয়ে নেয়া সম্ভব।
তাই তরুণ বেকারদের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় নিজের নামে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন তুষার। এমনকি অনলাইনে লাইভ ক্লাস পরিচালনার মাধ্যমেও দেশের ফ্রিল্যান্সিং আগ্রহী তুরুণদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন তিনি। ইতোমধ্যে এলাকার ৫০জনসহ দেশের প্রায় ৩ শতাধিক তরুণ-তরুণী ফ্রিলান্সার হিসেবে গড়ে উঠেছেন।
আরও পড়ুন: জায়েদের বিরুদ্ধে সানির অভিযোগ নিয়ে কী বললেন ইলিয়াস কাঞ্চন?
তরিকুল বলেন, দেশের ছেলে-মেয়েরা অনেক মেধাবী। তারা চাইলে সহজেই ফ্রিল্যান্সিং করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন। নিজের বেকারত্ব দূর করে পরিবারের হাল ধরতে পারেন। এজন্য অবশ্য তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেন তিনি।
দক্ষতার দিক তুলে ধরে তরিকুল বলেন, ফ্রিল্যান্সিং-এ মূলত বিদেশি কোম্পানি ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কাজ করতে হয়। সেক্ষেত্রে ইংরেজি দক্ষতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া এখানে সফল হতে ধৈর্যশীল হতে হবে। কারণ ফ্রিল্যান্সিং করে রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার কোন সুযোগ নেই। ধৈর্য্য ধরে লেগে থাকতে হবে এবং ভাষাগতসহ বিভিন্ন দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিং জগতে সফলতা অর্জনে শিক্ষাগত যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেন। তার মতে, ভাষাগত দক্ষতার পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দক্ষতার জন্য ফ্রিল্যান্সারদের দেশের যেকোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নূন্যতম ডিগ্রি পাশ থাকা উচিত। যার ফলে ফ্রিল্যান্সিং জগতের দক্ষতা সহজ হবে এবং কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সফল হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন দেশের তরুণ উদীয়মান এ ফ্রিল্যান্সার।