বাবা ছিলেন প্রশাসন ক্যাডার, পুলিশ হলেন ছেলে

৪৩তম বিসিএসে এএসপি হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত আব্দুল্লাহ সালমান আশিক
৪৩তম বিসিএসে এএসপি হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত আব্দুল্লাহ সালমান আশিক  © সংগৃহীত

৪৩তম বিসিএসে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ সালমান আশিক। বাবা সপ্তম বিসিএস ক্যাডার ছিলেন। ছোটবেলা থেকে বাবাকে দেখে সিদ্ধান্ত নেন বিসিএস ক্যাডার হবেন। শেষ পর্যন্ত সফলও হয়েছেন।

এর আগে ২০২০ সালে এনএসআইয়ের সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য সে চাকরি ছেড়ে দেন। প্রথমে ৪০তম বিসিএসে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু সেবার নন-ক্যাডার হন। ৪১তম বিসিএসেও নন-ক্যাডার হলেও হাল ছাড়েননি। অবশেষে সাফল্য পান তৃতীয় বিসিএসে। ৪৩তম বিসিএসে এবার পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

আশিকের বাড়ি পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সুবিদখালীতে। বাবার নাম মো. আনোয়ার হোসেন। মা সেলিনা আনোয়ার। তারা তিন ভাই-বোন। বড় বোন মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট বোন স্কুলে পড়ছেন। 

আশিকের বাবা সপ্তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডার হয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে অবসরে গেছেন। বাবার চাকরির সুবাদে আশিকের ছেলেবেলা কেটেছে বিভিন্ন জেলায়। তিনি তার মাধ্যমিক মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবং উচ্চমাধ্যমিক ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে পাস করেন। 

পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য  ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজিতে (আইইউটি) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ২০১৩-১৪ সেশনে ভর্তি হন। বিএসসি শেষ করার পরই শুরু করেন বিসিএস প্রস্তুতি। এরইমধ্যে ২০২০ সালে সহকারী পরিচালক হিসেবে এনএসআইয়ে যোগদান করেন। কিন্তু বিসিএসের জন্য সে চাকরি ছেড়ে দেন।

২০২০ সালে এনএসআইয়ের সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। বিসিএস ক্যাডার হওয়ার জন্য সে চাকরি ছেড়ে দেন। প্রথমে ৪০তম বিসিএসে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু সেবার নন-ক্যাডার হন। ৪১তম বিসিএসেও নন-ক্যাডার হলেও হাল ছাড়েননি। অবশেষে সাফল্য পান তৃতীয় বিসিএসে এসে। ৪৩তম বিসিএসে এবার পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন।

৪০তম বিসিএসে প্রথম অংশগ্রহণ করেন নন-ক্যাডার হন। ৪১তম বিসিএসেও হন নন-ক্যাডার। অবশেষে ৪৩তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে তিনি ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে সহকারী মহাপরিদর্শক পদে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে কর্মরত আছেন।

ক্লাস  নাইনের আগে বাবার যেখানে পোস্টিং ছিল, সেখানেই থাকতেন জানিয়ে আব্দুল্লাহ সালমান আশিক বলেন, দিপু নাম্বার-২ এর মতো প্রতি  ১-২ বছর  পর পর জেলা বদল,  স্কুল  বদল। কখনও রাজবাড়ী, কখনও পিরোজপুর, কখনও আবার ঝিনাইদহে। মাধ্যমিক মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় এবং উচ্চ মাধ্যমিক নটর ডেম কলেজ থেকে শেষ করি। দুটোতেই  জিপিএ-৫ পাই। আইইউটিতে ইলেকট্রিক্যাল  ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে  সিজিপিএ  ৩.৮৮ ছিল।

বিসিএসের ইচ্ছা কখন থেকে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন সিভিল সার্ভিসে আসব, দেশের জন্য কাজ করব। ছেলেবেলার  এ স্বপ্নে আমার সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা আমার বাবা।

বিসিএসের প্রস্তুতির বিষয়ে আব্দুল্লাহ সালমান আশিক বলেন, বিএসসি  শেষ করার পর বিসিএসের প্রস্তুতি  শুরু  করি। তৃতীয় বিসিএসে সাফল্য মিলল পুলিশ ক্যাডারে। ৪০ থেকে ৪৫ প্রত্যকটি বিসিএসেই প্রিলিমিনারি পাস করি। ৪৪তম লিখিত দেওয়া আছে। ৪৩ এর ফলের দিনও আমি ৪৫ এর লিখিত পড়ছিলাম। পরে ৪৫ আর দেওয়া লাগেনি।

আরো পড়ুন: এইচএসসির জিপিএ ২.৯০, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহাব হলেন বিসিএস ক্যাডার

বিসিএস ক্যাডার হতে পেরে অনুভূতি জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ সালমান আশিক বলেন, অত্যান্ত  প্রতিযোগিতামূলক বিসিএস পরীক্ষা সফল হয়ে অনেক আনন্দ ও উচ্ছ্বাস অনুভব করি। এটি দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও ত্যাগের ফসল। মহান আল্লাহ আমার মনের আশা পূরণ করেছেন। আমাদের দোয়া কবুল করেছেন। এ সফলতায় আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব ও আশেপাশের মানুষ এবং আমার আনন্দ বহুগুন বাড়িয়ে দিয়েছে।

সফলতার জন্য বেশি অবদান বাবা-মায়ের জানিয়ে তিনি বলেন, বিসিএসের এ দীর্ঘ পথে, সব সময় তাদের আমি আমার পাশে পেয়েছি। তারা আশায় অবলম্বন, হতাশায় আশ্রয় হিসাবে থেকেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ