ভেঙে পড়েছে শরীর, তবুও মাসে ৭০ হাজার টাকা আয় হাসানের

কম্পিউটারে বসে কাজ করছেন হাসানুল ইসলাম
কম্পিউটারে বসে কাজ করছেন হাসানুল ইসলাম  © সংগৃহীত

সরকারের লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের (এলইডিপি) অধীনে ২০২০ সালে ময়মনসিংহ জেলায় বিনা মূল্যের প্রশিক্ষণের খবর পান হাসানুল ইসলাম। এক বন্ধু হাসানুলকে লিংক দেন।আবেদন করে পরীক্ষায় টিকে শুরু করেন প্রশিক্ষণ। চার মাসের প্রশিক্ষণে ৫০টি ক্লাস করেন। ডিজিটাল বিপণন বিষয়ে ওপর প্রশিক্ষণ নেন। কিছুদিনের মধ্যে পেয়ে যান ৪০ ডলারের কাজ।

ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছার ফ্রিল্যান্সার হাসানুল ইসলামের শুরুটা এভাবে। তাঁর এখন মাসে আয় বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৭০ হাজার। তবে এ পর্যায়ে আসা তার জন্য এত সহজ ছিল না। তিনি বলছিলেন, ২০১৬ সালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। ধীরে ধীরে সব শেষ হয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু জেদ চেপে বসল কিছু করার। পরে শারীরিক অক্ষম মানুষের জন্য ফ্রিল্যান্সিং উপযোগী বলে মনে হলো। কাজ করতে গিয়ে কটুকথাও শুনতে হয়েছে।

২০১৪ সালে মুক্তাগাছা শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজে বিপণন বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন হাসানুল। ক্রিকেট খেলতেন হাসানুলের বাবা মো. আমিনুল ইসলাম ছিলেন গাড়িচালক। ২০১১ সালে গলার ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে সরে আসেন এ পেশা থেকে। হাসানুল বড় সন্তান হওয়ায় দায়িত্বও বেশি। তখন হঠাৎ হাসানুলের শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয়। কঠিন স্নায়ুরোগ মাইওপ্যাথিতে আক্রান্ত হন। মাংসপেশি দুর্বল হয়ে শরীর ভেঙে পড়ে।

আরো পড়ুন: মেডিকেলে ভর্তি হতে না পারা শাপেবর হয়েছে জেসি ডেইজির

হাসানুল হাঁটাচলাও করতে পারতেন না। বসতেও অন্যের সহায়তা নিতে হতো। এ সময় জেদ ধরে কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকলেন হাসানুল। বন্ধুবান্ধবরা ধরে ধরে পরীক্ষার সময় তাঁকে নিয়ে যেতেন কলেজে। ২০১৭ সালে আউটসোর্সিংয়ের মার্কেটপ্লেস ফাইভারে অ্যাকাউন্ট খোলেন হাসানুল। চেষ্টা করতে থাকেন নিজে নিজেই। সফলতা পাওয়ার পর হাসানুল বিয়ে করেছেন শাহনাজ হাসানকে। তাঁদের ছেলে সাফুয়ান ইবনে হাসান। প্রশিক্ষণও দিচ্ছেন তরুণদের।

হাসানুল ইসলাম বলেন, এখন মাসে কমবেশি ৭০০ ডলার বা প্রায় ৭০ হাজার টাকা আয় হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশের কাজ করি। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) ও অনলাইন রিসেপশন ম্যানেজমেন্টের (ওআরএম) কাজ করছি।


সর্বশেষ সংবাদ