সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ময়লার ভাগাড়ে ‘উন্মুক্ত লাইব্রেরি’

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত লাইব্রেরি
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত লাইব্রেরি  © সংগৃহীত

একসময়ে ছিলো ভাসমান দোকান। করোনার কারণে সেগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানটি পরিণত হয় ময়লার ভাগাড়ে। আশেপাশের কয়েকটি দোকানের ময়লা ফেলা হত এখানে। দুর্গন্ধে দাঁড়ানো যেতো না। কিন্তু রাতারাতিই সেই স্থান বদলে গেছে। এখন সেখানে শোভা পাচ্ছেন রংবেরংয়ের কয়েকটি বইয়ের তাক। গড়ে উঠেছে উন্মুক্ত লাইব্রেরি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ফটকের পাশে এই লাইব্রেরি গড়ে তোলেন ডাকসুর সাবেক সদস্য ও ছাত্রলীগের সমাজসেবা উপ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ যে কেউ চাইলে এখানে বসে চায়ের কাপের আড্ডায় বই পড়ে সময় পার করতে পারবেন।

আরও পড়ুন; ভিসি ফরিদের ভাগ্য রাষ্ট্রপতির হাতে

স্থানটি ঘুরে দেখা যায়, সেখানে লাল রং করা একটি বুক সেলফ, তিনটি কাঠের বেঞ্চ, কয়েকটি প্লাস্টিকের চেয়ার, বঙ্গবন্ধুর তর্জনির গ্রাফিতি, বিভিন্ন ঐতিহাসিক ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে লাইব্রেরিটি। আগামীকাল থেকে (১৩ ফেব্রুয়ারি) উদ্বোধন হবে এটি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত খোলা এই লাইব্রেরি।

এ উদ্যোগের বিষয়ে তানভীর বলেন, আপাতত দৃষ্টিতে উদ্যোগটি ছোট মনে হলেও আসলে এটি অনেক বড় কাজ। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাস্তায়, পার্কে ‘উন্মুক্ত লাইব্রেরি’ আছে। আমাদের দেশে নেই। আমার স্বপ্ন আমাদের দেশেও উন্মুক্ত লাইব্রেরির কনসেপ্টটা ছড়িয়ে দেয়া। আমার জীবদ্দশায় আমি বাংলাদেশের ৬৪টি জেলায় উন্মুক্ত লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে যেতে চাই।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে বেছে নেওয়া প্রসঙ্গে সৈকত বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক জায়গা, এখান থেকেই আমাদের স্বাধীনতার শুরু হয়। এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটি কেন ময়লায়র ভাগাড় হয়ে থাকবে। তাছাড়া এখানে পাশেই টিএসসি। সেই চিন্তা থেকেই এ জায়গাটি বেছে নেয়া।

ছাত্রলীগের সমাজসেবা বিষয়ক উপ-সম্পাদক বলেন, আমাদের দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। এখন আমাদের মননের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। কারন শুধুমাত্র অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়ে একটি জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের মননের বিকাশ, চিন্তা চেতনা উন্নয়ন করার জন্য আমার এ প্রয়াস।

আরও পড়ুন: এই দিনটিতে তীব্র শূন্যতা অনুভব হয়—আবরারের জন্মদিনে ছোটভাই

তানভীর বলেন, আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সমাজসেবা বিষয়ক উপ-সম্পাদক। সমাজের সেবা করা আমার দায়িত্ব। আমার মাধ্যমে যদি সমাজের সামান্যতম উপকার হয় তাহলে আমি মনে করি আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব আমি পালন করতে পেরেছি।

উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে থাকবে বইদান বাক্স, কেউ চাইলে সেখানে বই রেখে যেতে কিংবা নিতে পারবে। তাই সবার কাছে বই দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সৈকত। তিনি বলেন, এখানে বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, ইতিহাস, বিদেশি সাহিত্য, দেশীয় সংস্কৃতি, লোক সাহিত্য বিষয়ক বই থাকবে।


সর্বশেষ সংবাদ