অসহযোগ আন্দোলন: আগামীকাল থেকে গাড়ির চাকা ঘুরবে, আফিস-আদালত খুলবে?
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০৬:২৫ PM , আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০৭:২০ PM
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একদফা দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এই এক দফা দাবি হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভার পদত্যাগ। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটির সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম এই ঘোষণা দেন। এসময় তিনি আগামীকাল রবিবার থেকে সারা দেশে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
আন্দোলনকারীরা জানান, ইতোমধ্যে ছাত্রজনতার এই বিক্ষোভ চূড়ান্ত রূপ নিয়েছে। সরকার শিক্ষার্থীদের দাবী বাস্তবায়নে কোন সদিচ্ছার পরিচয় দেয়নি। ফলে ছাত্র জনতার এই আন্দোলন এখন সরকার পতনের এক দফায় পরিণত হয়েছে। আগামীকাল থেকে অসহযোগ আন্দোলন চলবে। এতে কোনপ্রকার যানবাহন এবং অফিস আদালত চলবে না।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিক্ষোভ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মো. নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার মন্ত্রিসভাকে পদত্যাগ করতে হবে।’ এ সময় তিনি একদফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য ‘অসহযোগ আন্দোলন’ কর্মসূচি সফল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। দাবি বাস্তবায়নে ছাত্র জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়ে নাহিদ বলেন, আগামীকাল থেকে সারাদেশের সকল অফিস আদালত এবং গণপরিবহন বন্ধ থাকবে।
তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ ঘোষিত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, দেশের সকল সরকারি অফিস পূর্বের নিয়মেই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলার কথা রয়েছে। ফলে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাভাবিক নিয়মেই চলবে দেশের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি নিয়ে মুখোমুখি অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে ‘অসহযোগ আন্দোলন’ কর্মসূচি সফল করতে শিক্ষার্থীদের জরুরি ১৫ নির্দেশনা দিয়েছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। এতে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে এই আন্দোলনে গণপরিবহন এবং অফিস-আদালত খুলবে কিনা। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ ‘অসহযোগ আন্দোলন’ কর্মসূচি সফল করতে ১৫ দফা কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার (৩ আগস্ট) বেলা পৌনে ১২ টায় আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে এ নির্দেশনা দেন।
এতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে গণপরিবহন বন্ধসহ বেশ কিছু কর্মসূচির উল্লেখ রয়েছে। পাঠকদরে জন্য পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হল-
অসহযোগ আন্দোলন সফল করতে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতার প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জরুরি নির্দেশনাঃ
১। কেউ কোন ধরণের ট্যাক্স বা খাজনা প্রদান করবেন না।
২। বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, পানির বিলসহ কোন ধরণের বিল পরিশোধ করবেন না।
৩। সকল ধরণের সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত ও কল কারখানা বন্ধ থাকবে। আপনারা কেউ অফিসে যাবেন না, মাস শেষে বেতন তুলবেন।
৪। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
৫। প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে কোন ধরণের রেমিটেন্স দেশে পাঠাবেন না।
৬। সকল ধরণের সরকারি সভা, সেমিনার, আয়োজন বর্জন করবেন।
৭। বন্দরের কর্মীরা কাজে যোগ দিবেন না! কোন ধরণের পণ্য খালাস করবেন না।
৮। দেশের কোন কলকারখানা চলবেনা, গার্মেন্টসকর্মী ভাই বোনেরা কাজে যাবেন না!
৯। গণপরিবহন বন্ধ থাকবে, শ্রমিকরা কেউ কাজে যাবেন না।
১০। জরুরি ব্যাক্তিগত লেনদেনের জন্য প্রতি সপ্তাহের রবিবারে ব্যাংকগুলো খোলা থাকবে।
১১। পুলিশ সদস্যরা রুটিন ডিউটি ব্যাতিত কোন ধরণের প্রটোকল ডিউটি, রায়ট ডিউটি ও প্রটেস্ট ডিউটিতে যাবেন না। শুধু মাত্র থানা পুলিশ নিয়মিত থানার রুটিন ওয়ার্ক করবে।
১২। দেশ থেকে যেন একটি টাকাও পাচার না হয়, সকল অফশোর ট্রান্জেকশন বন্ধ থাকবে।
১৩। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যাতিত অন্যান্য বাহিনী ক্যান্টনমেন্টের বাইরে ডিউটি পালন করবে না। বিজিবি ও নৌবাহিনী ব্যারাক ও কোস্টাল এলাকায় থাকবে।
১৪। আমলারা সচিবালয়ে যাবেন না, ডিসি বা উপজেলা কর্মকর্তারা নিজ নিজ কার্যালয়ে যাবেন না।
১৫। বিলাস দ্রব্যের দোকান, শো রুম, বিপনী-বিতান, হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে।
★হাসপাতাল, ফার্মেসি, জরুরি পরিবহন সেবা যেমন-ঔষধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম পরিবহণ, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ফায়ার সার্ভিস, গণমাধ্যম, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পরিবহণ, জরুরি ইন্টারনেট সেবা, জরুরি ত্রাণ সহায়তা এবং এই খাতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবহণ সেবা চালু থাকবে।
★নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানপাট বেলা ১১-১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে!