ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে লাল কার্ড দেখাল ছাত্র অধিকার পরিষদ

  © টিডিসি ফটো

মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা হরণে ব্যবহৃত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে লাল কার্ড দেখিয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদ। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে ছাত্র নির্যাতন বন্ধেরও আহবান জানান।

রবিবার (৯ এপ্রিল) দুপুর তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মুখে কালো কাপড় বেঁধে ছাত্র অধিকার পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে এই লাল কার্ড দেখানো হয়। 

এসময় তারা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবি তিনটি হল- ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে গ্রেফতারকৃত বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি প্রদান ও অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদিব বলেন, স্বাধীনতা দিবসে প্রথম আলোর এক সংবাদকে কেন্দ্র করে সরকার যা শুরু করেছে সেটা অত্যন্ত অন্যায় ও অমানবিক। এই নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে বিরোধী দলের মতকে চেপে ধরা হচ্ছে। সামনে নির্বাচন, আর এই নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার এই আইনের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে জেলে ভরছে। 

কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আখতার হোসেন বলেন, এখন সবাই ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কি-না কি বলছি সেটার জন্য জেলে ঢুকতে হবে। এই আইনের ফলে অসংখ্য মানুষকে বিনা দোষে, বিনা বিচারে বছরের পর বছর জেলে বন্দি রাখা হচ্ছে। এই আইনের মাত্র একটা সুফল আছে। আর সেটা হল সরকারদলীয়দের বিপক্ষে কেউ কিছু বলতে পারছে না। 

আরও পড়ুন: তিন ছাত্রকে মারধরের ৫ দিনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পাবিপ্রবি

আখতার হোসেন আরও বলেন, আমরা দেখছি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে সরকারদলীয় ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্বে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। তাই আমাদের দাবি অবিলম্বে ছাত্র নির্যাতন বিরোধী আইন তৈরি করে ছাত্র নির্যাতন বন্ধ করতে হবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে এক শ্রেণীর প্রতিবাদী মানুষ, বিরোধী দলের রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকদের রাতের আঁধারে তুলে আনা হচ্ছে। ফলে কেউ সরকারের খারাপ দিকগুলো জনসম্মুখে বলতে সাহস করছে না।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী যেভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতন করতো সেভাবে এই সরকারের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করছে। বর্তমানে দেশের বিচার বিক্রি হয়ে গেছে, বিবেক বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাবির শিক্ষকরা এমনকি উপাচার্যও রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পক্ষে। অথচ তার শিক্ষার্থীরাই এক বেলা না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি সভাপতি আসিফ মাহমুদ বলেন, এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন হলো এমন একটি আইন যেটা মানুষের সংবিধান স্বীকৃত অধিকার ও স্বাধীনতাকে ক্ষুন্ন করছে। ভিসি যেখানে প্রথম আলোর বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে মাঠে নামেন সেসময় তারই একজন শিক্ষার্থী বলছেন সাহরি খাওয়ার সময় কান্না চলে আসে। টাকার অভাবে ভালো খাবার খেতে পারেন না। খাবারে ভর্তুকি দিতে বললেও প্রশাসনেরর কোনও খবর থাকে না। 


সর্বশেষ সংবাদ