বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান কলেজের নবীনবরণে ছাত্রলীগের দুপক্ষে সংঘর্ষ

বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান কলেজের নবীনবরণে ছাত্রলীগের দুপক্ষে সংঘর্ষ
বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান কলেজের নবীনবরণে ছাত্রলীগের দুপক্ষে সংঘর্ষ  © টিডিসি ফটো

শরীয়তপুরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজে নবীনবরণ অনুষ্ঠান চলাকালীন ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। যদিও এ ঘটনায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল একে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছে। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন ৬ জন শিক্ষার্থী। সংঘর্ষের পর ওই স্থান থেকে চাপাতি ও চাইনিজ কুড়াল উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হারুন অর রশিদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানান, একাদশ শ্রেণির অরিয়েন্টেশন ক্লাস চলাকালীন ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা মিছিল বের করেন। পরবর্তীতে সংঘর্ষ বাঁধলে আমরা প্রশাসনকে জানিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।

কলেজের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গত বছর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারী ও রাসেল জমাদ্দারের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয় কলেজেরই এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগে। নতুন কমিটিতে জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহসিন মাদবর ও যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুজ্জামানের সমর্থকরা স্থান পেতে আধিপত্য বিস্তারে এই সংঘর্ষ বেধেছে।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুজ্জামান জানিয়েছেন, সকালে আমার কাছে একটা ফোন আসার পর কলেজ ক্যাম্পাসে গিয়ে জানতে পারি ছাত্রদলের রাব্বিসহ ধানুকার স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে চেয়েছিল। ছাত্রলীগ তাদেরকে প্রতিহত করেছে। 

আর দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিত্যক্ত জায়গা অস্ত্রগুলো থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ছাত্রদল রামদা, চাপাতি, কুড়াল আশেপাশে রেখেছিল ছাত্রলীগকে প্রতিহত করার জন্য। এসময় নিজেদের অভ্যন্তরীণ সকল দন্ধও অস্বীকার করে তিনি।

অন্যদিকে কলেজ ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক আফজাল খান জানিয়েছেন, আমি ও নুরুল আলমসহ ছাত্রদলের কর্মীরা কলেজে প্রবেশ করলে ছাত্রলীগ কর্মী মিনহাজসহ ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাদের উপর হামলা করে। পরবর্তীতে তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীণ দন্ধে কলেজে মারামারি হয়েছে বলে শুনেছি। অস্ত্রের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, ওখানে এগুলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রেখেছেন।

পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, নবীনদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। পরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। উভয় গ্রুপই রামদা, চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি ও লাঠিশোঠা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষে ছাত্রলীগ কর্মী স্নাতক পড়ুয়া সুজন কাজী, অনার্স পড়ুয়া হাসিব, স্মরণ, রাজিব ও দ্বাদশ শ্রেণীর মিনহাজ আহত হয়।

কলেজ ছাত্রদল নেতা তাজমুল মাঝি বলেছেন, আমরা কলেজে প্রবেশ করার পর আমাদের উপর হামলা করা হলে আমরা চলে আসি। তারপর ওখানে কী হয়েছে তা বলতে পারব না।

জেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহসিন মাদবর ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে অস্বীকার করে জানান, ছাত্রদলের সঙ্গে বহিরাগতরা কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদেরকে প্রতিহত করেছে।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আক্তার হোসেন জানান, ঘটনার সাথে সাথে পালং মডেল থানা পুলিশ ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। সংঘর্ষে ব্যবহৃত একটি চাপাতি ও চাইনিজ কুড়াল পুলিশ উদ্ধার করেছে। ফের যেন এ ধরণের ঘটনা যেন সামনে না ঘটে সেজন্য মহসিন মাদবর ও রাশেদুজ্জামানকে বলে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।