টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর প্রসঙ্গে যা বললেন মুশফিক

 বিপিএলে রংপুরকে হারিয়ে ম্যাচ জয়ের পর মুশফিক।
বিপিএলে রংপুরকে হারিয়ে ম্যাচ জয়ের পর মুশফিক।  © সংগৃহীত

বাংলাদেশের একমাত্র স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। এই টুর্নামেন্টে বরাবরই আলো ছড়িয়েছেন মুশফিকুর রহিম। চলতি আসরেও নামের প্রতি সুবিচার করছেন তিনি। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে জয় এনে দিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন তিনি। তবে এমন পারফরম্যান্স যার ব্যাটে সেই মুশফিক কিনা আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিয়েছেন প্রায় দুই বছর আগেই।

বিপিএলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড মুশফিকের। এখন পর্যন্ত ১২৫ ম্যাচে ৩২৪৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের মালিকও তিনি। বিপিএলে দুই হাজার রান ও ১৩০ এর বেশি স্ট্রাইকরেট বিবেচনায় নিলে সাকিব আল হাসানের (১৩৯) পরেই মুশফিক (১৩২)।  

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নেওয়ার পর বিপিএলের দুই আসরেই আলো ছড়িয়েছেন মুশফিক। গতবার সিলেট স্ট্রাইকার্সের জার্সিতে ১৫ ইনিংসে ৩৯ গড় ও ১৩২ স্ট্রাইক রেটে ৩৫৭ রান করেন তিনি। আর এবার ৩৩ গড়ে ১২৩ স্ট্রাইক রেটে ৩৬৭। দুইবারই তার দল ফাইনালে।

৩৬ বছর বয়সী মুশফিকের ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন তার সবচেয়ে বড় সমালোচকরাও তুলতে পারবে না। তার অভিজ্ঞতা, বড় শট খেলার ক্ষমতা ও পরিস্থিতি বুঝে ব্যাট করতে পারার ক্ষমতা দলের জন্য বড় সম্পদ। কিন্তু এমন একজনের সার্ভিস টি-টোয়েন্টিতে পাচ্ছে না জাতীয় দল। ২০২২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে টি-টোয়েন্টি ফরম্যট থেকে অবসর নেন মুশফিক। দাবি করেন, ওয়ানডে ও টেস্টে আরও বেশি মনযোগী হতেই তার এই সিদ্ধান্ত।

মুশফিক আরো বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় বয়স ও পারফরম্যান্সের থেকে সবচেয়ে বড় হয় ফিটনেস বা পারফরম্যান্সটা কতটুকু। বয়স জাস্ট আ নাম্বার। না হলে জেমি অ্যান্ডারসনের মতো, যাক নম্বরটা হয়তো এদিক-ওদিক হবে; এ রকম খেলোয়াড় খুব কম থাকত। কিন্তু এখনো হি ইজ ডুয়িং হোয়াট হি ডাজ বেস্ট,’ যোগ করেন মুশফিক।

ড্রেসিংরুমে যাওয়া পথে মুশফিকের কাছে জানতে চাওয়া হয়, ‘টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে এখন আক্ষেপ করেন?’ উত্তরে মুখে চওড়া হাসি টেনে বেশ জোর দিয়ে তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘না! না! (অবসর নেওয়া নিয়ে) রিগ্রেট করি না। রিগ্রেট করার কী আছে? (হাসি)।

তবে সে সময়কার ঘটনাপ্রবাহ বলে অন্য কথা। এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে মুশফিকের টি-টোয়েন্টি স্ট্রাইক রেট ও গড় নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন ওঠে। প্রশ্ন ওঠে সে সময়কার পারফরম্যান্স নিয়েও। শেষ পর্যন্ত ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেও এশিয়া কাপের দলে জায়গা পান মুশফিক। তবে এর আগে-পরের ঘটনা প্রবাহের সঙ্গে তার অবসরের যোগসূত্র আছে বলে মনে করা হয়।

গতকাল রংপুরকে হারিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে সংবাদসম্মেলনে আসেন মুশফিক। নানা প্রশ্নের মাঝে তার অবসরের প্রসঙ্গও উঠে আসে। সেখানেই মুশফিক পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, ' ‘আমি শুধু একটা প্রশ্ন করি, আমি কি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছি নিজের ইচ্ছায়? এতটুকু শুধু বলার আছে।’

মুশফিকের উত্তরে প্রচ্ছন্ন অভিমান স্পষ্ট। সেই অভিমান থেকেই জবাবটাও তিনি দিয়ে দেন সম্মেলন কক্ষ ছাড়তে ছাড়তে, ‘যখন অবসর নিয়েছিলাম, তার আগের এক মাস একটু দেখে নিয়েন। আর কিছু বলার নেই।‘ সমালোচনাই যে মুশফিককে ‘বিদায়‘ বলতে বাধ্য করেছে সেটিই মনে করিয়ে দিলেন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড়।


সর্বশেষ সংবাদ