গোপালগঞ্জে এবার ক্লাসে ঢুকে ছাত্রীদের হিজাব খুলে নিলেন চেয়ারম্যান

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান
অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান  © সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার রেশ না কাটতেই জেলার কোটালীপাড়া উপজেলায় এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্লাসে প্রবেশ করে ছাত্রীদের হিজাব খুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নিন্দার ঝড় ওঠে। গত রবিবার বেলা ১১টার দিকে বান্ধাবাড়ী ইউনিয়নের বান্ধাবাড়ী গ্রামে অবস্থিত জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ক্লাসে এ ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন: ইউক্রেনে নিহত হাদিসুর পড়েছেন চট্টগ্রাম মেরিনে, বলেছিলেন—ভালো আছি

জানা গেছে, ঘটনার দিন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বাংলা ক্লাস চলছিল। হঠাৎ ওই ইউপির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মানিক ক্লাসে প্রবেশ করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান থামিয়ে দেয়। চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলেন- বিদ্যালয়ে বোরকা ও হিজাব পরে আসা চলবে না। হিজাব পরে নয়, খোলা চুলে ক্লাসে এলে তোমাদের আরও ভালো লাগবে। তার এসব কথা শুনে ছাত্র-ছাত্রীরা হতভম্ব হয়ে পড়ে।

এ সময় তিনি নিজের হাতে একাধিক ছাত্রীর শরীর থেকে হিজাব ও চুলের স্কার্ফ খুলে টেবিলের ওপর রাখেন এবং বড় চুল থাকার অপরাধে ছাত্রদের চুল ধরে শারীরিক নির্যাতন চালান।

আরও পড়ুন: আফগানিস্তান বিপক্ষে প্রথম টি-২০ আজ

বান্ধাবাড়ী জেবিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির একাধিক ছাত্রী জানান, চেয়ারম্যান ক্লাস রুমে প্রবেশ করে আমাদের উদ্দেশ্য করে বলেন- স্কুলে হিজাব ও বোরকা পরে আসা যাবে না। তিনি নিজেই আমাদের মাথায় হাত দিয়ে ক্লিপ খুলে হিজাব টেবিলের ওপর রাখেন।

অন্যদিকে, কয়েকজন ছাত্র জানায়, চেয়ারম্যান বিনা কারণে তাদের চুল ধরে শারীরিক নির্যাতন করেন।

আরও পড়ুন: প্রাণে বাঁচতে ‘গুহায়’ শিক্ষার্থীরা

বান্ধাবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা হান্নান মোল্লা জানান, ঘটনাটি খুবই স্পর্শকাতর। একজন চেয়ারম্যান এমন ঘটনা ঘটাতে পারে এটা ভাবতেও অবাক লাগে। আমরা এলাকাবাসী এর বিচার চাই।

বান্ধাবাড়ী জেবিপি বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক শামীম আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিচ্ছিলাম। এ সময় চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মানিক ক্লাসে প্রবেশ করে ছাত্রীদের বোরকা পরে ক্লাসে আসতে নিষেধ করেন। এমনকি তিনি নিজ হাতে অনেকের হিজাব খুলে টেবিলের ওপর রাখেন।

বিষয়টি নিয়ে বান্ধাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মানিকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে তাড়িয়ে দেন।

এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাহাবুবুর রহমান বলেন, ঘটনাটি আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনেছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি জেনেছি। তদন্ত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ