দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে সংবাদ, পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাচ্ছেন ২ ছাত্রী

আন্দোলনে নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা
আন্দোলনে নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা  © ফাইল ছবি

আন্দোলন এবং আমরণ অনশনের পর অবশেষে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের দুই শিক্ষার্থী। বিভাগের অভ্যন্তরীণ সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সোমবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে নিশ্চিত করেছেন বিভাগটির প্রধান আল জাবির।

তিনি জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রেখে আলোচনার মাধ্যমে আমরা পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেহেতু শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কিছুটা কম আছে, ক্লাসগুলো পুনরায় নিয়ে আবারো ফর্ম ফিলআপ করার সুযোগ দেওয়া হবে। 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপস্থিতির শর্ত পূরণ না হওয়া দুজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ভবনের মূল দরজায় তালা লাগিয়ে আন্দোলনে নামেন নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচি নিয়ে ‘‘পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাচ্ছেন না ২ শিক্ষার্থী, আন্দোলনে সহপাঠীরা’’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

পরে কলা অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. আহমেদুল বারী, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. তপন কুমার সরকার ও বিভাগীয় প্রধান আল জাবিরের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা ৩ দফা দাবি জানিয়ে রবিবার দুপুর পর্যন্ত আন্দোলন শিথিল করার ঘোষণা দিয়ে তালা খুলে দেয়।

কিন্তু রবিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় কলা অনুষদের নিচতলায় বিভাগের সামনে ফের আমরণ অনশনে বসেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিভাগের কক্ষে আলোচনায় বসে বিভাগের শিক্ষক, কলা অনুষদ ডিন, প্রক্টর ও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক। আলোচনা শেষে সন্ধ্যায় পরীক্ষা স্থগিত এবং পুনরায় ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত আসে।

পরীক্ষা কমিটির সভাপতি নুশরাত শারমিন তানিয়া বলেন, ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা এবং সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করা- শিক্ষার্থীদের এই দুটো দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। আর ৩য় দাবিটি ছিলো- শিক্ষক স্বর্ণপ্রভার আওতায় ৮ম সেমিস্টার পর্যন্ত কোনো কোর্স না দেয়া। এটি আসলে খুবই জটিল প্রক্রিয়া। এটির বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় ফলাফলের বিষয়ে শঙ্কার কথা বলেছিলো। আমরা তাদের জানিয়েছি, পরীক্ষায় কোর্স শিক্ষক, একজন অভ্যন্তরীণ এবং একজন বহিস্থ শিক্ষক মূল্যায়ন করেন। তাদের দেওয়া নম্বরের গড় করে ফলাফল প্রস্তুত করা হয়। পাশাপাশি বিভাগ এবং পরীক্ষা কমিটি বিশেষভাবে এই পরীক্ষা মনিটরিং করবে বলেও আমরা শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেছি।

তিনি জানান, ক্লাসগুলো সম্পন্ন হয়ে গেলে শিক্ষার্থীদের ফর্ম ফিলআপের সুযোগ দেওয়া হবে। এরপর খুব দ্রুতই রুটিন করে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী ইসরাত জান্নাত সাদিয়া ও সুমাইয়া খান কানিজ। সাদিয়া বলেন, একজন শিক্ষার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা আমার নৈতিক অধিকার। আমাদের দাবি অনুযায়ী সমস্যাগুলো বিবেচনায় নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেওয়ায় বিভাগ এবং প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই। অন্যদিকে শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুমাইয়া খান কানিজ। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগে শিক্ষক, শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিভাগটিতে এখন স্বাভাবিক কার্যক্রম চলমান।


সর্বশেষ সংবাদ