বহিরাগতদের আক্রমণে হাত ভাঙ্গল ইবি শিক্ষার্থীর

ইবিতে বহিরাগতদের সাথে শিক্ষর্থীদের মারামারি
ইবিতে বহিরাগতদের সাথে শিক্ষর্থীদের মারামারি   © সংগৃহীত

বহিরাগতের বেপরোয়া বাইকের গতিতে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শিক্ষার্থী আহত হন। আহত শিক্ষার্থীর হাত ভেঙ্গে গেছে। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়ায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬ টার দিকে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র হাসিব ও তার বন্ধুরা জিয়া মোড়ে দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় বহিরাগত রকি, শান্ত বেপরোয়া গতিতে বাইক চালিয়ে ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় দিয়ে যাচ্ছিল। এসময় রকির বাইক হাসিবের ডান হাতে লাগে। পরে হাসিব রকিকে কয়েকবার বাইক থামাতে বলার পর ক্রিকেট মাঠ সংলগ্ন বঙ্গবন্ধু হল পুকুড় পাড়ের এক মুদি দোকানের সামনে বাইক থামান।

এ সময় উভয়ের মাঝে বাক-বিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে হাসিব ক্ষিপ্ত হয়ে রকিকে থাপ্পড় দেয়। পরে রকি ও তার বন্ধুরা ওই দোকানের পিছন থেকে স্ট্যাম্প নিয়ে তেড়ে এসে হাসিবকে মাথায় মারতে উদ্যত হয় বলে অভিযোগ হাসিবের। এসময় হাসিব ঠেকাতে গেলে বাম হাতে গুরুতর আঘাত লাগে। পরে তিনি সেখান থেকে চিকিৎসা কেন্দ্রে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এক্স-রে করার পরামর্শ দেন এবং এক্স-রে রিপোর্টে হাসিবের হাত ভাঙ্গে গেছে দেখা যায়।

অন্যদিকে হাসিবের বন্ধু সালমানসহ অন্যান্যরা রকি ও তার বন্ধুদের মারধর করে। এতে রকি পাশের ড্রেনে পরে গুরুতর জখম হন। হাসিবও তার সহযোগীরা ছাত্রলীগ নেতা শাহজালাল সোহাগের অনুসারী। এছাড়া বহিরাগত রকি ছাত্রলীগ নেতা বিপুল হোসেন খানের শ্যালক বলে জানা গেছে।

আরও পড়ুন: ‘উপার্জন, বাবা-মায়ের সেবা, স্কুলে যাওয়া’ সবই করেন সুলতান

এরপর ছাত্রলীগ নেতা বিপুল, অনিক, সোহাগ ঘটনাস্থলে আসে মীমাংসার জন্য। তবে মীমাংসা করতে গেলে উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সহযোগিতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়।

পরে ইফতারের সময় হলে বিপুল ও তার কর্মীরা হলে চলে যায়৷ এর কিছুক্ষণ পর শেখ রাসেল হলের পাশে কয়েকজন বহিরাগতকে দেশীয় অস্র হাতে দেখা যায়। এদিকে সোহাগের কর্মীরা জিয়া মোড়ের পাশে ক্রিকেট মাঠে অবস্থান নেয়।

এ বিষয়ে হাসিব বলেন, রকি পিছনে তাকিয়ে এক হাতে বেপরোয়া গতিতে বাইক চালাচ্ছিল। এসময় আমার হাতের সাথে ধাক্কা লাগে। আমি তাকে কয়েকবার ডাকাডাকির পর বাইক থামায়। সেখানে কথা বলার পর্যায়ে তুই-তুকারি করলে আমি থাপ্পড় দেই। পরে বহিরাগতরা একটি দোকানের পিছন থেকে স্ট্যাম্প নিয়ে এসে আমার মাথায় আঘাতের চেষ্টা করে। আমি ঠেকাতে গেলে বাম হাতে ভেঙ্গে যায়।

বহিরাগত রকি বলেন, আমি ও আমার বন্ধুরা ইফতার কিনতে গিয়েছিলাম। তারা কয়েকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। আমি গিয়ে দোকানের সামনে বাইক ব্রেক করি। বিষয়টা সিম্পল ছিল। কিন্তু কিছু বুঝে উঠার আগেই হাসিব আমাকে থাপ্পড় মারে। কথা কাটাকাটির পর্যায়ে তাদের সাথে হাতাহাতি হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত মিজান বলেন, সন্ধ্যার দিকে হাতে গুরুতর আঘাত একটি ছেলে মেডিকেলে আসছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়ায় এক্স-রে করার জন্য পাঠানো হয়।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে আমরা পুলিশকে অবহিত করেছি। সন্ত্রাসী ও দোষীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। চিহ্নিত বহিরাগতরা যাতে ক্যাম্পাসে ঢুকতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা হবে।


সর্বশেষ সংবাদ