নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়

নিহাদের মারধরকারীদের বিচার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি
শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি  © টিডিসি ফটো

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদকে মারধরকারী ছাত্রলীগ নেতাদের বিচার দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বুধবার (০১ মার্চ) হামলার তৃতীয় দিনে শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি থেকে এ আল্টিমেটাম ঘোষণা করা হয়।

আল্টিমেটাম ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা বলেন, নিহাদের উপর হামলার ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও বিচার বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এ ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আর সহ্য করা হবে না। দ্রুত দোষীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। নয়তো বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসব।

এদিকে, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের ওয়ালিদ নিহাদের দেওয়া অভিযোগের মধ্যে থাকা একই বিভাগের অভিযুক্ত দুই নির্যাতনকারী ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মুমিন সরকার ও তানভীর আহমেদ তুহিনকে বিভাগ থেকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীরা। শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত বিভাগটির সকল ক্লাস পরীক্ষাও বর্জন করেছে বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, গত ২৮ ফেব্রুয়ারী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবের হয়ে নিহাদকে রাজনীতি করতে রাতভর নির্যাতন করে তার অনুসারী কলা অনুষদের সভাপতি আবু নাঈম আব্দুল্লাহসহ (যাযাবর নাঈম) তার অনুসারীরা। রাত ১টার কাছাকাছি সময়ে বঙ্গবন্ধু হলের ৬০৮নং কক্ষে থাকা নিহাদকে ডেকে নিয়ে যাওয় হয় ৩২৪নং কক্ষে। সেখানে আগে থেকেই থাকা যাযাবর নাঈম ও তার ১০-১২ জন অনুসারী।

সেই কক্ষে প্রবেশ করতেই নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যাবিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হিমেল লোকপ্রশাসনের শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদকে থাপ্পড় মারেন। এর পরপরই ঘরে থাকা যাযাবর নাঈম অনুসারীরা মারতে থাকে বলে অভিযোগ তুলেছে আহত শিক্ষার্থী। মারার একপর্যায়ে গলায় পাদিয়ে চেপে ধরার অভিযোগও রয়েছে যাযাবর নাঈম এর বিরুদ্ধে।

আরও পড়ুন: বুকে রামদা ধরে খালেদা জিয়ার ছবি পোস্ট করাল ছাত্রলীগ

পিটুনির একপর্যায়ে রাজনীতি করতে বাধ্য করতে হাতে রামদা ধড়িয়ে সরকার বিরোধী কথা বলানোসহ ফেসবুকের প্রোফাইলে খালেদা জিয়ার ছবিও আপলোড করায় নাঈম। ঘটনা ভিডিও করে ধারণ শেষে রুম থেকে বের করে দিলে ফ্লোরে থাকা আরেক শিক্ষার্থী ৬০৮নং কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর বিভাগের এক বড় ভাইয়ের মেসে নিয়ে গেলে পরবর্তীতে প্রক্টরের মাধ্যমে তাকে ত্রিশাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আহত শিক্ষার্থী ওয়ালিদ নিহাদকে। ঘটনার তদন্তে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। যার একটি হল প্রশাসনের অন্যটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জমা দেয়ার কথা রয়েছে।

শিক্ষক সমিতির বিবৃতি

এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও বিচার দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন শিক্ষার্থীর সঙ্গে চলমান ঘটনা চলতে থাকলে ভয় এবং আতংকের সংস্কৃতি সামগ্রিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকল সদস্যকে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করবে। সার্বিকভাবে এরকম পরিবেশ জ্ঞানভিত্তিক বিদ্যায়তন বিনির্মাণের পরিপন্থী।


সর্বশেষ সংবাদ