খাবারের ভর্তুকি পাচ্ছেন না ইবির ডাইনিং ম্যানেজাররা 

ডাইনিংয়ের খাবারের ভর্তুকি পাচ্ছেন না ইবির ডাইনিং ম্যানেজাররা 
ডাইনিংয়ের খাবারের ভর্তুকি পাচ্ছেন না ইবির ডাইনিং ম্যানেজাররা   © সংগৃহীত

দীর্ঘদিন যাবত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশাসন কর্তৃক বরাদ্দকৃত হলের খাবারের ভর্তুকির টাকা না পাওয়ার অভিযোগ করছেন একাধিক ডাইনিং ম্যানেজার। ইতোপূর্বে প্রশাসন শূন্যতার কারণ থাকলেও বর্তমানে আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক থাকলেও ভর্তুকির টাকা না পাওয়ার অভিযোগ একাধিক ম্যানেজারের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর একযোগে লালন শাহ হল ও জিয়া হল ব্যতীত ৬ হলের প্রভোস্ট পদত্যাগ করেন। তারপর থেকেই বন্ধ হলের খাবারের ভর্তুকি। প্রশাসনবিহীন হলে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করায় ভর্তুকি না পেলেও একপ্রকার বাধ্য হয়ে ডাইনিং চালু রাখতে হচ্ছে তাদের। এদিকে মাসের পর মাস ভর্তুকি না পেয়ে লোকসানের আশঙ্কায় ডাইনিং পরিচালনার বিষয়ে নতুন করে ভাবছেন ম্যানেজাররা। দুয়েকজন ম্যানেজার নিয়মিত ভর্তুকির টাকা পেলেও মেয়েদের ৩টি হলের ম্যানেজারদের কেওই আগস্ট মাসের ভর্তুকির টাকা পাননি। এছাড়া ছেলেদের হলের ২/৩ মাসের ভর্তুকিও আটকে থাকার অভিযোগ রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে শুধু ব্যতিক্রম লালন শাহ হল, ম্যানেজার পাচ্ছেন নিয়মিত ভর্তুকির টাকা। 

জিয়া হলের ডাইনিং ম্যানেজার পায়না বলেন, কুরবানি ঈদের পর থেকে নির্ধারিত ভর্তুকি পাচ্ছি না। যেখানে ৪০ হাজার করে দেওয়ার কথা সেখানে ৩/৪ হাজার করে করে দিয়ে প্রভোস্ট স্যার এপর্যন্ত ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন। দৈনিক ২ বস্তা চাউল লাগলে সেখানে ১ বস্তা আনা সম্ভব? মাছ তরকারি চড়া দাম। এর মধ্যে খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন! প্রভোস্টের কাছে গেলেই বলে- টাকা নাই, প্রশাসন নাই হেনত্যান। আন্দোলনের পর বকেয়া থাকা স্বাভাবিক কিন্তু আন্দোলনের আগের টাকা কোথায়? তখন তো প্রশাসন ঠিকঠাক ছিল। 

শেখ রাসেল হলের সদ্য বিদায়ী ডাইনিং ম্যানেজার মাসুদ বলেন, হলের খাবারের মান নিয়ে একটা ঝামেলায় ছাত্ররা আমার ডাইনিং বন্ধ করে দিয়েছে কিন্তু কথা ছিল তারা আমার ভর্তুকির টাকা বুঝিয়ে দেবে। আমি গত দুই মাস ধরে আমার ভর্তুকির টাকা পাইনি। এ মাসে যে আছে সেও পাবে কিনা জানিনা। প্রশাসন থাকলেও যখন চেয়েছি তখন ভিসি স্যার নাই, ছুটিতে আছেন এরকম নানান অজুহাতে আমাকে থামিয়ে দেওয়া হয়েছে।  তারপর তো আমি দায়িত্ব থেকে চলেই আসছি। আদৌ আমার টাকা পাবো কিনা জানিনা। 

শহীদ জিয়াউর রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, জিয়া হলে ভর্তুকির টাকার এই সমস্যা আজকের নয়। ইতোপূর্বেও বরাদ্দের ৪০ হাজার টাকার অর্ধেক বা তার কিছু বেশি টাকা দেওয়া হতো, বাকি টাকা হলের নেতারা ভাগবাটোয়ারা করে নিতো। সে বিষয়ে আমি একাধিকবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাইনি। তবে এখন যেহেতু প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে, আশা করি খুব দ্রুতই এই সমস্যা কেটে যাবে। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, চলতি মাসে প্রভোস্ট না থাকায় ভর্তুকি নিয়ে জটিলতা হতে পারে কিন্তু আগের ২/৩ মাসের ভর্তুকির টাকাও কেন এখনো পায়নি তা আমার বোধগম্য না। ডাইনিং ম্যানেজাররা বা হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউই আমাকে এখনো জানায়নি। সাধারণত হল প্রভোস্টরা নোট আকারে ভর্তুকির বিষয়টা প্রশাসনকে জানায় তারপর প্রশাসন পর্যালোচনা করে ভর্তুকি বরাদ্দ দেয়। আমার জায়গা থেকে তাদের ভর্তুকির টাকা পরিশোধ করার জন্য চেষ্টা করবো।  


সর্বশেষ সংবাদ