প্রতিষ্ঠার পর থেকে পদোন্নতি পাননি ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

  © সংগৃহীত

পদোন্নতি চাকরিজীবনের অন্যতম পাওয়া। যা কর্মরতদের উজ্জীবিত করে। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে পদোন্নতি হচ্ছে না ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইআবি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ দিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচিত হয়। তবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পদোন্নতি দেওয়া হয়নি। ফলে কর্মকর্তাদের মধ্যে চরম হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অনেক আগেই পদোন্নতির জন্য যোগ্য ছয়জন শিক্ষক, দুইজন সহকারী রেজিস্ট্রার,  একজন সহকারী পরিচালক, নবম গ্রেডের কর্মকর্তা ৭১ জন, কর্মচারী ৭১ জন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানের মধ্যদিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা হয়েছে। বৈষম্যহীন দেশ গড়া এই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি বঞ্চিতরা আশায় বুক বেঁধেছেন। এরপরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা পদোন্নতির দাবিতে আন্দোলন নামেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতির সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সেকশন অফিসার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের সঙ্গে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ যারা পেয়েছেন, তারা অনেকেই পাঁচ বছর আগেই সহকারী-রেজিস্ট্রার হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে আমরা বৈষম্যের শিকার। পদোন্নতি না হওয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসারের চাকরি ছেড়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে দ্বিতীয় শ্রেণির পদে চলে গেছেন। আমরা পারিবারিক ও মানসিকভাবে হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। আমরা এই বৈষম্য থেকে মুক্তি চাই। 

২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর দেশের সব ফাজিল, ফাজিল (অনার্স) ও কামিল মাদরাসায় উচ্চশিক্ষা তদারকির ভার ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যস্ত হয়। শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুটা সেশনজট থাকলেও বৈশ্বিক মহামারি করোনায় পরীক্ষাজটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। গত এক বছরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের ক্র্যাস প্রোগ্রামের মাধ্যমে সেশনজট কমিয়ে আনে। এখন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট নেই।

এ বিষয়ে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ কে এম আক্তারুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতি হয়নি। তারা দীর্ঘদিন ধরে পদোন্নতি বঞ্চিত। বিশ্ববিদ্যালয় চাকরির বিধি অনুযায়ী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতি সাক্ষাতকার চলছে। বৈষম্য নিরসনে দ্রুত পদোন্নতি দিতে হবে বলে তিনি জানান।

জানতে চাইলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি না পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুর রশীদ। তিনি দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিষ্ঠার পর থেকে পদোন্নতি পাননি তা সত্য। তবে সাবেক ভিসির (অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ) বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে কিছু অসঙ্গতি দেখা দিয়েছিলো। যে কারণে পদোন্নতি দেয়া যায়নি। 

তিনি বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতির উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কিন্তু কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পারবো জানি না। কারণ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা পদত্যাগ করছেন। সব কিছুই অনিশ্চিত। এমন সময়ে কী মন্তব্য করবো বুঝতে পারছি না।


সর্বশেষ সংবাদ