সালমানের পরিবারের পাশে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

সালমান আজাদী
সালমান আজাদী  © সংগৃহীত

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সালমান আজাদীর পরিবারের পাশে দাঁড়াতে উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি ও শিক্ষার্থীরা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

পড়াশোনার পাশাপাশি টিউশন করিয়ে পরিবারের সকল ভরণপোষণ চালাতেন সালমান আজাদী। অসুস্থ বিধবা মা, বাচ্চা ও স্ত্রীকে রেখে পরিবারটির একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি সালমান আজাদী পরপারে পারি জমালে অসহায় হয়ে পড়ে পরিবারটি। এ অবস্থায় অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করে পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরিবারটিকে সহায়তার উদ্দেশ্যে আজাদীর মৃত্যুর একদিন পরেই শিক্ষার্থীরা মিলে গঠন করে সালমান আজাদী ট্রাস্ট ফান্ড। পরবর্তীতে এই ট্রাস্ট ফান্ডে শিক্ষকদেরও যুক্ত করা হয়। প্রথম সাত দিনেই এই ফান্ডে জমা পড়েছে ২ লক্ষ ৮০ হাজার ১৯০ টাকা। 

ট্রাস্ট ফান্ড গঠনের বিষয়ে সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষার্থী সুস্মিতা সরকার পিউ বলেন, সালমান মারা যাওয়ার পর হাসপাতালে গিয়ে যখন ওর দেড় বছরের বাচ্চাটাকে দেখি। নিজেকে আর কোনোভাবেই ঠিক রাখতে পারছিলাম না। সে জানেই না তার বাবা এ পৃথিবীতে আর নেই। তখনই মাথায় আসে অন্তত এই ছোট্ট বাচ্চাটার জন্য হলেও কিছু একটা করা জরুরি। এরপর সালমানের অসুস্থ মা ও তার ছোট বাচ্চাটার জন্যই আমরা এই কাজ শুরু করেছি।

সংগীত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আহমেদ শাকিল হাসমী বলেন, তার অসুস্থ মা, দেড় বছরের শিশু আর স্ত্রী রয়েছে। টিএসসি গ্রুপে পোস্ট করার পর জানতে পারি, শিক্ষার্থীরা আগেই সালমান আজাদী ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে। আমি তাতে যুক্ত হয়ে যাই। এরপর সবার কাছ থেকে অকল্পনীয়ভাবে সাড়া পাচ্ছি, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রাক্তন শিক্ষার্থীসহ সকলেই এগিয়ে আসছে।

অন্যদিকে সালমান আজাদীর মৃত্যুতে শোক জানিয়ে পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। শিক্ষক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সকল শিক্ষকের বেতন থেকে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা বা সম্মতিক্রমে অধিক পরিমাণ টাকা কর্তন করে নেওয়া হবে। যার পুরো অংশ সালমান আজাদী ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে চলে যাবে পরিবারটির কাছে। শিক্ষক সমিতির এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সালমান আজাদীর পরিবারের পাশে দাঁড়ানো আমাদের দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। আর আমরা যে আর্থিক সাহায্য করছি তা আসলেই আমাদের সকল সহকর্মীর সার্বিক সিদ্ধান্ত এবং শিক্ষকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফল। 

এর আগে, গত ২৮ মার্চ ময়মনসিংহের ত্রিশালে বাসের সাথে সিএনজির সংঘর্ষে সালমান আজাদীসহ সিএনজিতে থাকা ৬ জন নিহত হন। সালমান নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন।

 

সর্বশেষ সংবাদ