জবি ছাত্রী অবন্তিকার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা
ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকা  © ফাইল ছবি

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো একেকটা নিপীড়ক-সৃষ্টি, নিপীড়ক-রক্ষা এবং নিপীড়িত-দমন যন্ত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার ‘হত্যার’ বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সোমবার পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনটি এ সব কথা উল্লেখ করেছে।

সংগঠনের পক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন পাঠানো বিবৃতিতে ৬৭ জন শিক্ষক সই করেছেন।

বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ক্রমাগত ক্ষমতার ছত্রছায়ায় শক্তি প্রদর্শনীর কারখানায় পরিণত হচ্ছে। এতে সবচেয়ে নিগ্রহের শিকার মুখ্যত সাধারণ ও প্রশ্ন উত্থাপনকারী শিক্ষার্থীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অতীতের যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিচারহীনতার সংস্কৃতির যে বিস্তার ঘটেছে অবন্তিকা সে ধারাবাহিকতারই শিকার!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাটি বর্ণনা করে তারা উল্লেখ করেন, শিক্ষকদের এমন দায়িত্বহীন অন্যায় আচরণে আমরা যারপরনাই ক্ষুব্ধ ও লজ্জিত। রাষ্ট্রীয় ও সরকারি ক্ষমতাকাঠামোর প্রশ্রয়ে এমন অশিক্ষকসুলভ আচরণ অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক চর্চায় পরিণত হয়েছে।

শুধু সরকারি দলীয় পরিচয় আর ব্যক্তিগত আনুগত্যের কারণে পদপ্রাপ্ত বা নিয়োগপ্রাপ্ত এসব শিক্ষক ও প্রশাসকদের দাসত্বমূলক আচরণের কারণে সরকার-সমর্থিত ছাত্র সংগঠন ও শিক্ষক সংগঠনগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে জিম্মি করে ফেলেছে, ফলে তারা কোনো প্রকার গণতান্ত্রিক আচরণেরই পরোয়া করে না।

এতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন, অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান, অধ্যাপক মারুফুল ইসলাম, অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, অধ্যাপক আ আল মামুন, সামিনা লুৎফা, মানস চৌধুরী, আর রাজী, রুশাদ ফরিদী প্রমুখ।

বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন, অবন্তিকার 'হত্যাকাণ্ড' প্রমাণ করে দিল দলীয়করণের পাটাতন ব্যবহার করে পেশী শক্তিধারী ও অযোগ্যদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পুরস্কৃত করলে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে লাগাতার এমন নিপীড়নের উর্বরক্ষেত্রেই পরিণত করতে থাকবে।

তারা মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুগত দলদাস শিক্ষক নিয়োগের চলমান প্রক্রিয়াকে তলিয়ে দেখা, বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয় মাস্তানি চালানো ও সরকারের ছত্রছায়ায় এসব অপেশাদার ভূমিকার লাগাতার প্রশ্রয় কেন দেওয়া হচ্ছে প্রভৃতি প্রশ্নের উত্তরের মধ্যেই অবন্তিকার 'কাঠামোগত হত্যাকাণ্ডে'র প্রকৃত সারসত্য লুকিয়ে আছে।

তারা দাবি জানান, বিচারবিভাগীয় তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং পূর্বের অভিযোগ দ্রুত তদন্ত ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা; যৌন হয়রানি, যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টার মত ফৌজদারি অপরাধের বিচারের দায়িত্ব বিচারালয়ের সে বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরিতে যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেলকে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে এবং ক্যাম্পাসগুলোতে যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলগুলোকে সক্রিয় করতে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ