সিকৃবি প্রাধিকারের ১১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

প্রাধিকারের ১১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেক কাটছেন অতিথিবৃন্দ
প্রাধিকারের ১১ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেক কাটছেন অতিথিবৃন্দ  © টিডিসি ফটো

বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও প্রতিষ্ঠার ১১ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করেছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) প্রাণী অধিকার ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ বিষয়ক একমাত্র সংগঠন প্রাধিকার। দিবসটি উপলক্ষ্যে বৃক্ষরোপণসহ নানা কর্মসূচির পালন করেছে সংগঠনটির সদস্যরা।

সোমবার (৫ জুন) বিকেল সাড়ে ৫ টার দিকে প্রাধিকারের ১১ তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের সামনে কেক কাটা হয়। পরবর্তীতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে বৃক্ষরোপণ, বিভিন্ন গাছে নামফলক লাগানো এবং শহীদ মিনার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। 

এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রাধিকারের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য ও  বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন কাউন্সিলের আহ্বায়ক ডা. মোহাম্মদ মেহেদী হাসান খান, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মাহবুব ই ইলাহী, অধ্যাপক ডা. সুলতান আহমেদ, সার্জারি ও থেরিওজেনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. অনিমেষ চন্দ্র রায়, এনিম্যাল জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহন মিয়া, বহিরাঙ্গন পরিচালক ও পরজীবীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. তিলক চন্দ্র নাথ, অতিরিক্ত ছাত্র পরামর্শক ড. রানা রায়, মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সাহিদুর রহমান প্রমুখ।

প্রাধিকারের উপদেষ্টা ডা. মোহাম্মদ মেহেদী হাসান খান বলেন, একসময় আমাদের ক্যাম্পাসে অনেক ফক্স (শিয়াল) দেখা যেত। এজন্য আমরা ক্যাম্পাসকে ফক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি নামে অভিহিত করতাম। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুর এবং জলাশয় অনেক পরিমাণ ব্যাঙ পাওয়া যেত কিন্তু বর্তমানে এখানে জলাশয় যে ছিল সেটি বুঝাই যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নিজেদেরকে বাঁচানোর জন্য পরিবেশ রক্ষা করা প্রয়োজন। এই বন্যপ্রাণী রক্ষা ও গাছ লাগানোর মাধ্যমে প্রাধিকার পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রাধিকারের কারনে সিলেটে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অনেক সহজ হয়েছে। ভবিষ্যতে জীববৈচিত্র রক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অর্জনে তারা আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি।

এনিম্যাল জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ডা. মোহন মিয়া বলেন, প্রাণীর অধিকার রক্ষায় জন্য সর্বপ্রথম দরকার প্রাণীর বাসস্থান নিশ্চিতকরন। আমাদের দেশে বন্য প্রাণীদের বাসস্থান দিন দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। আমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আসি তখন রাস্তায় ও গাছের উপর প্রায় বানর দেখা যেত এখন কিন্তু খুব একটা দেখা যায় না। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের দিকে একটা টিলা আছে যেটি বান্দরটিলা নামে পরিচিতি পায়। কিছুদিন পরে সেখানেও হয়তো বানর পাওয়া যাবে না।
আমি তোমাদের একটি অনুরোধ করবো আশেপাশের টিলাগুলো আছে সেগুলো সরকারি। কিন্তু ভূমি দস্যুরা সেগুলো দখল করে ফেলছে এবং পূর্ণ সম্পদ উজাড় করছে। তোমরা যদি ওদিকে একটু লক্ষ্য দিতে পারো এবং রক্ষা করতে পারো তাহলে বন্যপ্রাণীর নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত হবে।

বহিরাঙ্গনের পরিচালক ও পরজীবী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. তিলক চন্দ্র নাথ বলেন, প্রাধিকার যেহেতু সিকৃবি থেকে যাত্রা শুরু করে আমরা যদি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে এর শাখা করতে পারি তাহলে একসময় এই প্রাধিকারের সেবা বাংলাদেশের আনাচে কানাচে পৌঁছে যাবে।

উল্লেখ্য, প্রাণী বাঁচুক, পৃথিবী বাঁচুক’ স্লোগানকে সামনে রেখে ২০১২ সালের ৫ জুন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাত্রা শুরু করে প্রাধিকার। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সিলেট অঞ্চলে প্রাণীদের অধিকার সংরক্ষণে সফলতার সহিত কাজ করে যাচ্ছে সংগঠনটির সদস্যরা। প্রাণীর অধিকার ও জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজের জন্য ২০১৭/১৮ সালে ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে প্রাধিকার।


সর্বশেষ সংবাদ