খসে পড়ছে বিএম কলেজ ছাত্রবাসের পলেস্তারা, বেরিয়ে গেছে রড

বসবাসের অনুপযোগী বলছেন শিক্ষার্থীরা

বিএম কলেজের ঝুঁকিপূর্ণ ছাত্রবাসে থাকছেন শিক্ষার্থীরা
বিএম কলেজের ঝুঁকিপূর্ণ ছাত্রবাসে থাকছেন শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

বরিশাল বিএম কলেজের ডিগ্রি হলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাস করছেন শিক্ষার্থীরা। ভবনের ইট, সুড়কি, পলেস্তারা খসে পড়ছে। অনেক জায়গায় বের হয়ে গেছে রড। বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে পড়ছে পানি। সিলিংজুড়ে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থা। এতে করে যেখানে-সেখানে জন্মেছে আগাছা।

সরেজিমনে গিয়ে দেখা যায়, কলেজের হলটির এ-ব্লক, বি-ব্লক,সি-ব্লক ও ডি ব্লকের এমন করুন অবস্থা। বসবাসের অনুপযোগী এসব ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন শত শত শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে যদি কোনো হল বসবাসের অনুপযোগী থাকে সেটি আমাদের বিএম কলেজ ডিগ্রি হল। এর চেয়ে বেশি সমস্যা আর কোনো হলে হতে পারে বলে মনে হয় না।

মাস্টার্সের আরও এক শিক্ষার্থী ইসমাইল বলেন, ডিগ্রি হলে ভবন রয়েছে ৩টি এবং টিন শেড ভবন রয়েছে ১টি। সব কয়টা ভবনের ছাদে ফাটল ধরেছে। বৃষ্টি আসলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। টিন শেড ভবনের সংস্কার হয়নি দীর্ঘদিন। প্রতি বছর বর্ষায় টিনের চাল চুঁইয়ে ঘরে পানি পড়ে। ঘরে শুয়ে আকাশ দেখা যায়।

আরও পড়ুন: ৩ বছর পর চালু হচ্ছে বিএম কলেজ ক্যান্টিন, পরিবর্তন হয়েছে নামও

বি-ব্লক হলের বায়জীদ বলেন, ছাত্রাবাসে নয় আমরা থাকি যেন কোনো পরিত্যক্ত ভবনে। যেখানে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর ঝুঁকি রয়েছে। ভবনটির ২১৪ নম্বর রুমসহ হলের সব রুমের অবস্থা খুবই করুণ। বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: শতবর্ষী বিএম কলেজে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত বাস মাত্র ৩টি!

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, ১৯৬৫ সালে  প্রতিষ্ঠিত হয় বিএম কলজের ডিগ্রি হলের ভবনগুলো। সংস্কার মেরামত না হওয়ায় এখন ছাত্রাবাসের নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আতঙ্ক আর ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাসে থাকতে হচ্ছে।

কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অনেক রুমের জানালা ভাঙ‍া। ছাদের পলেস্তারা ধসে পড়ার কারণে মাঝরাতে ঘুম থেকে লাফিয়ে উঠতে হয়। ডায়নিং ও শৌচাগারের অবস্থাও খুবই করুণ। হলের ছাত্ররা কর্তৃপক্ষকে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

বিএম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. গোলাম কিবরিয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, শত বছরের বেশি পুরনো কলেজটিতে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। কলেজটিতে উচ্চমাধ্যমিক ছাড়াও ২২টি বিষয়ে স্নাতক-স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়। শিক্ষার্থীর তুলনায় ছাত্রাবাসের সিট কম। যা খুবই অপ্রতুল। ছাত্রাবাসের অনেকগুলো কক্ষ বসবাসের অনুপযোগী।

ছাত্রবাসা মেরামত ও সংস্করণের বিষয়ে অধ্যাপক গোলাম কিবরিয়া বলেন, হল মেরামত ও সংস্করণের জন্য বরাদ্দ চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। আশা করি বরাদ্দ পেলে নতুন ভবন তৈরি করতে পারবো। নতুন ভবন হলে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাসের সংকট কেটে যাবে।


সর্বশেষ সংবাদ