মাভাবিপ্রবির সমাবর্তনে ১৭৪২ শিক্ষার্থী, পদক পেলেন ৫ জন

মাভাবিপ্রবির সমাবর্তনে ১৭৪২ শিক্ষার্থী, পদক পেলেন ৫ জন
মাভাবিপ্রবির সমাবর্তনে ১৭৪২ শিক্ষার্থী, পদক পেলেন ৫ জন  © টিডিসি ফটো

মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (৫ মার্চ) সকাল ৯ টায় সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সমাবর্তন অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। মাভাবিপ্রবির তৃতীয় এ সমাবর্তনে অংশ নেন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্নকারী ১৭৪২ জন গ্রেজুয়েট এবং পোস্ট গ্রাজুয়েট।

সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর আব্দুল হামিদের পক্ষে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী ড.মোঃ আব্দুর রাজ্জাক। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন সেন্টার ফর দ্য রিহ্যাবিলিটেশন অফ দ্যা প্যারালাইজড (সিআরপি) এর প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়কারী, স্বাধীনতা পদক বিজয়ী বৃটিশ বংশোদ্ভূত বাঙালি ড.ভেলরি এন টেইলর। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড মোঃ ফরহাদ হোসেন।

সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দ এবং টাঙ্গাইলের বিভিন্ন আসনের জনপ্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।

সমাবর্তনে ২ জন শিক্ষার্থীকে চ্যান্সেলর পদক এবং ৩ জন শিক্ষার্থীকে ভাইস চ্যান্সেলর পদক দেয়া হয়। চ্যান্সেলর পদক পেয়েছেন ফার্মাসী বিভাগের সাফিয়া আফরিন এবং মোঃ শাকিল। ভাইস চ্যান্সেলর পদক পেয়েছেন এফটিএনএস বিভাগের রাকিবুল হাসান, কুহিনুর আক্তার এবং বিএমবি বিভাগের শারমিন আক্তার।

মাভাবিপ্রবির এই ৩য় সমাবর্তনকে ঘিরে সমালোচনাও রয়েছে অনেক। এমন একটি অনুষ্ঠানে খাবার না পাবার এবং সমাবর্তন প্যান্ডেলে পর্যাপ্ত আসন না থাকার অভিযোগ ওঠে। জানা যায় খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষার্থী খাবার পায়নি। তবে প্রশাসনের উদ্যোগে এ দিন বিকালে বিভিন্ন হোটেল থেকে খাবার এনে সংকট মোকাবেলা করার চেষ্টা করা হয়।

আরও পড়ুন: নীতিমালার মারপ্যাঁচে অ্যাওয়ার্ড বঞ্চিত মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

এ নিয়ে শিক্ষার্থীরা জানান, এক দিকে সঠিক সময়ে খাবার না পাওয়ায় অনেক গ্রাজুয়েট তাদের অভিভাবকদের নিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে, আবার যারা বিকাল বেলা খাবার পেয়েছেন সেই খাবারের মান ছিলো নিম্নমানের। এমন একটি বড় ধরণের অনুষ্ঠানে এসব অব্যবস্থাপনার অভিযোগ এনে দীর্ঘ সময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে রাত ৮ টার পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়।

এছাড়া সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক নীতিমালা পরিবর্তন করায় অনেক শিক্ষার্থী পদক বঞ্চিত হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই প্রেক্ষিতে নতুন  নীতিমালা পরিবর্তন এবং পূর্বের নীতিমালা পুনর্বহাল এর দাবিতে (শনিবার ৪ মার্চ) মাভাবিপ্রবির এলামনাই শিক্ষকবৃন্দ এবং শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন প্যান্ডেলের পাশে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ সময় বক্তারা ঘোষণা দেন এ ধরণের বৈষম্যমূলক নীতিমালা পরিবর্তন না করলে সমাবর্তনের পরেও তাদের আরও কর্মসূচি আসবে।

জানা যায় এরই প্রতিবাদে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক সমাবর্তন বর্জন করেছেন এবং বিভিন্ন বিভাগের অসংখ্য এলামনাই শিক্ষার্থী সমাবর্তন বর্জন করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এক জরুরি সভার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিনস পদক বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। মাস্টার্সেও পদক বাদ দেয়া হয়। এ ছাড়া পদক পাওয়া কঠিন করা হয় শিক্ষার্থীদের জন্য। এর আগে সেশন ও অনুষদে প্রথম হওয়া শিক্ষার্থীরা চ্যান্সেলর ও ভাইস চ্যান্সেলর পদক পেতেন। তাদের মধ্যে ৩.৮০ (৪ পয়েন্টের মধ্যে) পেলেই পদকের জন্য আবেদন করা যেত।

কিন্তু নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চ্যান্সেলর পদকের জন্য ৩.৯৮ (৪ পয়েন্টের মধ্যে) ও ভাইস চ্যান্সেলর পদকের জন্য ৩.৯৬ (৪ পয়েন্টের মধ্যে) ফলধারী হতে হবে। অর্ডিন্যান্সে ডিনস লিস্ট ও ডিনস পদকের বিষয়টিও স্পষ্ট করা ছিল। কিন্তু সেগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে সর্বশেষ নীতিমালা বিবেচনায় এবার পদক পেয়েছেন মাত্র পাঁচ শিক্ষার্থী।


সর্বশেষ সংবাদ