ফুলপরীর আর্তনাদে উল্লাস করেছিল ছাত্রলীগের নির্যাতনকারীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৪৯ PM , আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:০১ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে নির্যাতিত শিক্ষার্থী ফুলপরীর আর্তনাদে ঘটনার দিন উল্লাস করেছিল নির্যাতনকারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়টি কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে এমনটি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি রোববার সকাল ১০টায় রেজিস্ট্রারের কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে নবীন সেই ছাত্রীর ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের প্রমাণ মিলেছে। মারধর-অত্যাচারের সময় ছাত্রীটি যখন আর্তনাদ করছিলেন তখন অট্টহাসি আর উল্লাসে মেতেছিল নির্যাতনকারীরা। এছাড়া পানি চাইলেও পানি না দিয়ে ডাইনিংয়ে নিয়ে পরিত্যক্ত ময়লা গ্লাস মুখ দিয়ে পরিষ্কার করতে বাধ্য করা হয়। এমনকি চিৎকার করলে তার মুখে গামছা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তাকে বাজে অঙ্গভঙ্গি করে নাচতে বাধ্য করা হয়।
৬ ফেব্রুয়ারি রাতে শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ৩০৬নং কক্ষ থেকে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে গণরুমে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান মীম ও চারুকলার একই বর্ষের ছাত্রী হালিমা খাতুন ঊর্মি তাকে গণরুমে (দোয়েল ১) নিয়ে যান। এ সময় পাশের গণরুমের ছাত্রীদের কক্ষ থেকে বের না হতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়। এমনকি তাদের ওয়াশরুমেও যেতে নিষেধ করা হয়।
আরো পড়ুন: তদন্ত প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে, শুনানি চলতি সপ্তাহে
এরপর ভুক্তভোগী ছাত্রীর সিনিয়র, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মোয়াবিয়া জাহানকে তার কক্ষ থেকে ডেকে আনেন একই বিভাগ ও সেশনের তাবাসসুম ইসলাম। শুরুতে মোয়াবিয়াকে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে থাপ্পড় মারতে বাধ্য করা হয়। এরপর শুরু হয় অমানবিক নির্যাতন। চড়, থাপ্পড় ও গলায় ফাঁস দেওয়ার মতো করে চলে অত্যাচার। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়। এ সময় গণরুমের সাধারণ ছাত্রীরা মুখ চেপে কাঁদছিলেন।
ঘটনায় সবচেয়ে উগ্র ভূমিকায় ছিলেন মীম ও ঊর্মি নামের দুই ছাত্রী। ১১ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তদের লিখিত তথ্য-প্রমাণসহ শতাধিক পৃষ্ঠার রিপোর্ট দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচএম আলী হাসান জানান, কমিটির প্রতিবেদনের কপি হোইকোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মহামান্য হাইকোর্ট যে নির্দেশনা দেবেন সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।