ছাত্ররাজনীতিকে না বলে শপথ খুবির নবীন শিক্ষার্থীদের
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক-স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ৫ দিনব্যাপী একাডেমিক কাউন্সেলিং এন্ড মোটিভেশন শীর্ষক কর্মশালা সমাপ্ত হয়েছে। এই পাঁচদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৯টি ডিসিপ্লিনের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ছাত্ররাজনীতি, মাদক ও র্যাগিংকে না বলে শপথ গ্রহণ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে কর্মশালার সমাপনী দিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত এ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
উপাচার্য বলেন, একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে যা যা প্রয়োজন, তার সবকিছুই আছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে। এখান থেকে নিজেকে বিকশিত করার সুযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাব ও সংগঠনে যুক্ত হয়ে নিজেকে আরও দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা যায়। এখানকার অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে, যারা মানুষের কল্যাণে কাজ করে।
আরও পড়ুন: ছাত্ররাজনীতির একাল সেকাল
তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে অনেকেই দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খ্যাতি অর্জন করেছেন। সেসব কৃতি অ্যালামনাইদের পথ অনুসরণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করতে হবে। নিজে আলোকিত হয়ে অন্যকে আলোকিত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার চিত্র তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা কার্যক্রমেও গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গবেষণায় অনেক এগিয়ে। তাদের সাথে গবেষণায় যুক্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা গবেষণায় অবদান রাখতে পারে।
আরও পড়ুন: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতির কী প্রয়োজন
উপাচার্য ৫ দিনব্যাপী এই একাডেমিক কাউন্সেলিং এন্ড মোটিভেশন কর্মশালাসহ শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্টের জন্য বেশকিছু কর্মশালা আয়োজনের জন্য আইকিউএসির পরিচালক, অতিরিক্ত পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথাগতভাবে নবাগত শিক্ষার্থীদের শপথ বাক্য পাঠ করান। উক্ত শপথবাক্যে ছাত্ররাজনীতি, র্যাগিং ও মাদককে না বলার বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন-কানুন ও শৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও ঐতিহ্য অক্ষুণ্ন রাখার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে। শপথবাক্যে শিক্ষাজীবন শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ আত্মনিয়োগের অঙ্গীকারও রয়েছে।
পরে উপাচার্য রিসোর্স পারসন হিসেবে ‘কী টু সাকসেস ইন হায়ার এডুকেশন’ শীর্ষক একটি সেশন উপস্থাপন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী এবং কলা ও মানবিক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. রুবেল আনছার।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আল ইমরান বলেন, আয়োজিত সেশনটিতে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনকে সহজ ও সাবলীলভাবে এগিয়ে নেওয়ার দিকনির্দেশনা পেয়েছি। পড়াশোনা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনে সম্মুখীন হতে হয় এমন অনেক সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে অবহিত করা হয়েছে। যা আমরা নবীন শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারবো।
আরও পড়ুন: 'অচিরেই ছাত্ররাজনীতি উপযোগিতা হারাবে'
এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হায়দার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মতিউল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইকিউএসির উপ-রেজিস্ট্রার মো. নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী। এসময় সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনসমূহের প্রধানবৃন্দ এবং নবাগত শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালার সমাপনী দিনে ব্যবস্থাপনা ও ব্যবসায় প্রশাসন স্কুল এবং কলা ও মানবিক স্কুলের আওতাধীন ৫টি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও কর্মশালায় ‘টিচিং লার্নিং অ্যাপ্রোচেস ইন হায়ার এডুকেশন’, ‘এডুকেশন সিস্টেম, রুলস এন্ড রেগুলেশন্স’, ‘এক্সেস টু রিসোর্স, ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি ইন কেইউ’ এবং ‘স্টুডেন্ট সাপোর্ট সার্ভিসেস ইন কেইউ’ শীর্ষক ৪টি সেশন অনুষ্ঠিত হয়।