বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর স্বপ্ন পুড়ল আগুনে, চলে গেলেন ছোট বোনও

সামিয়া খালেদ ও সাবরিনা খালেদ
সামিয়া খালেদ ও সাবরিনা খালেদ  © সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) থেকে ইংরেজিতে পড়াশোনা শেষ করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সাবরিনা খালেদ। অংশ নিয়েছিলেন বেশ কয়েকটি পরীক্ষায়ও। ছোট বোন সামিয়া খালেদ এইচএসসির শিক্ষার্থী। এই দুই মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন বুনছিলেন বাবা-মা। কিন্তু সব স্বপ্ন পুড়ে গিয়ে নিভে গেল। গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়ে মাত্র এক দিনের ব্যবধানে হারালেন দুই মেয়েকে। সন্তান হারানোর শোকে বাবা-মা এখন পাথর।

গত বৃহস্পতিবার নগরের বাকলিয়া থানার রাহাত্তরপুল এলাকার বিসমিল্লাহ টাওয়ারের একটি বাসায় গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আগুনে দগ্ধ হয়েছিলেন বাসায় থাকা দুই বোন। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই প্রতিবেশীরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এরপর দগ্ধ দুই বোনকে প্রথম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের দুজনের শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার বড় বোনের এবং আজ সোমবার ছোট বোনের মৃত্যু হয়।

এমন করুণ মৃত্যুর জন্য বাড়ির মালিক ও তত্ত্বাবধায়কের গাফিলতি ও অবহেলাকে দায়ী করছেন নিহত তরুণীদের স্বজনেরা। তাদের অভিযোগ, সংযোগ লিকেজের কারণে গ্যাস বের হওয়ার বিষয়টি কয়েকবার বাড়ির মালিক ও তত্ত্বাবধায়ককে জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা ব্যবস্থা নেননি।

নিহত সাবরিনা খালেদের ছোট বোন সামিয়া হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজে এইচএসসিতে অধ্যয়নরত ছিল। তাদের গ্রামের বাড়ি চন্দনাইশ উপজেলার ফতেহ নগরে। মা শারমিন খালেদকে নিয়ে নগরের বাসায় থাকতেন দুই বোন। বাবা আলাউদ্দিন খালেদ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। তবে দুর্ঘটনার দিন মা ও বাবা গ্রামের বাড়িতে ছিলেন।

নগরের বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল হক বলেন, এ বিষয়ে নিহত দুই বোনের বাবার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছেন। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ বা মামলা করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেনি।

নিহত দুই বোনের বাবা আলাউদ্দিন খালেদ বলেন, আমার অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। মামলা করে কী হবে? এখন তো আর মেয়েদের ফিরে পাব না।


সর্বশেষ সংবাদ