কমিটি করার চেষ্টা, ছাত্রদল কর্মীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:০১ PM , আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২৫, ০৭:৪০ PM

রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার ও দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার এবং এক শিক্ষার্থীর সনদ ছয় মাসের জন্য অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনার জেরে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মো. শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয়কে (আইডি: ২৩২১৪১১২১) স্থায়ী বহিষ্কার, আইন ও মানবাধিকার বিভাগের এম ফারারুজ্জামান বাধনকে (আইডি: ২১২৫১১০০১) দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের নূর-ই-আলম সিদ্দিকীকে (আইডি: ২৩২৪১১১৩৩) এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের রিজওয়ান তানভীর মীম-এর (আইডি: ২১২৪১১০০২) বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ হলেও তার সনদ ছয় মাসের জন্য অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে সনদ বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
এছাড়া ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোয়াইব হোসেন (আইডি: ২২২৪১১০২৭) ও মুরশিদা মেহেরিন হাসিকে (আইডি: ২৩২৪১১০৫০) কঠোরভাবে সতর্ক করার সুপারিশ করা হয়েছে।
জানা গেছে, শিবলী নোমানী ২০২৩ সালের সামার সেমিস্টারে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তার বাবা শফিকুল ইসলাম রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবলী ছাত্রদলের কমিটি করার চেষ্টা করছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ। তারপরও শিবলী নোমানী সেখানে ছাত্ররাজনীতি শুরু করেছিলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের দিয়ে ছাত্রদলের ফরম পূরণ করতে বাধ্য করতেন। এছাড়া কথায় কথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, বিচার বিভাগ এমনকি পুলিশ-প্রশাসনকে কটূক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট দেন শিবলী। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছিল।
এছাড়া ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী না হলেও গত ২৮ নভেম্বর শিবলী ওই বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে যান এবং এক শিক্ষার্থীকে হুমকি দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। এতে ওই শিক্ষার্থীর চোয়ালের হাড় ভেঙে যায়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ওই শিক্ষার্থীর চিকিৎসায় বাধা দেওয়া হয়। পরে এ ঘটনায় চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা করে আহত শিক্ষার্থীর পরিবার। একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়েও ফেসবুকে আপত্তিকর স্ট্যাটাস দেন শিবলী নোমানী। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, সার্বিক বিষয় নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিয়েছে। পাশাপাশি শৃঙ্খলা কমিটিও সুপারিশ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভায় চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুজনকে সতর্ক করা হয়েছে।