অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জেরে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
- রাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৩ PM , আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৮:১৩ PM

বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার ও দুই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার এবং এক শিক্ষার্থীর সনদ ছয় মাসের জন্য অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত এক ঘটনার জেরে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ বুধবার (২৫ মার্চ) অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় উক্ত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশ বিবেচনা করে নিম্নলিখিত চারজন ছাত্রের বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি কার্যকর করার বিষয়টি অনুমোদিত হয়।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মো. শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয়কে (আইডি: ২৩২১৪১১২১) স্থায়ী বহিষ্কার, আইন ও মানবাধিকার বিভাগের এম ফারারুজ্জামান বাধনকে (আইডি: ২১২৫১১০০১) দুই সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের নূর-ই-আলম সিদ্দিকীকে (আইডি: ২৩২৪১১১৩৩) এক সেমিস্টারের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের রিজওয়ান তানভীর মীম-এর (আইডি: ২১২৪১১০০২) বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ শেষ হলেও তার সনদ ছয় মাসের জন্য অকার্যকর ঘোষণা করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে সনদ বাতিলের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
এছাড়া ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. সোয়াইব হোসেন (আইডি: ২২২৪১১০২৭) ও মুরশিদা মেহেরিন হাসিকে (আইডি: ২৩২৪১১০৫০) কঠোরভাবে সতর্ক করার সুপারিশ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ শাস্তির কারণ ও সেই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, গত বছরের ১ ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে কিছু সহপাঠী নির্মমভাবে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। আহত শিক্ষার্থীকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগও ওঠে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং সেই কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ২৫ মার্চ ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, নিলয় কিছুদিন আগে সরকারের একজন বিচারক ও পুলিশ প্রশাসন সম্পর্কে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন মন্তব্য করেছিলেন, যা কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে অবহিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, উপর্যুক্ত শাস্তি কার্যকর করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ অক্ষুণ্ণ থাকবে বলে সভায় মতামত দেওয়া হয় বিধায় শাস্তির বিষয়টি ২৫ মার্চ থেকে কার্যকর করা হলো। সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এছাড়া সিন্ডিকেট সভায় মো. শিবলী নোমানী ইসলাম নিলয়ের বিরুদ্ধে কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এগুলো হলো ২০২৩ সালের অক্টোবরে বোয়ালিয়া থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা হয় এবং সে গ্রেফতার হয়। ২০২৪ সালের ১ ডিসেম্বর ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মারাত্মকভাবে আহত করেন, একজন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের মন্তব্যের জেরে হুমকিসূচক পোস্ট দেন, শিক্ষার্থীদের উসকানি দিয়ে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয় দেখিয়ে রাজনৈতিক দলে যোগ দিতে বাধ্য করেন এবং ছবি প্রকাশ করেন, উপাচার্যকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য ও হুমকি প্রদান করেন। প্রতিপক্ষ মনে করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ট্যাগ দিয়ে সামাজিকভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তাদের হেয় করার চেষ্টা করেন এবং নিয়মিত হুমকি প্রদান ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছেন।