জলবায়ু পরিবর্তন রোধে তরুণদের ভূমিকাই আগামী ভবিষ্যৎ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২১ PM , আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২১ PM
বাংলাদেশ এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও পরিবেশ রক্ষায় তরুণদের আরও সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে। তরুণদের অংশগ্রহণ বাড়াতে পারলে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করেন অনুষ্ঠানে আগত বক্তারা। অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে নেতৃত্বের এই ভূমিকায় তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।
শুক্রবার (০৮ নভেম্বর) বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (ইউআইইউ) আয়োজিত ‘ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ অন ক্লাইমেট অ্যাকশন–২০২৪’ এর পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আগত অতিথিরা। এই সময় আয়োজকরা বলছেন, এ ধরনের আয়োজনের মধ্য দিয়ে চলমান জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় তরুণদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো সম্ভব হবে। তরুণদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে এটি সহজে করা সম্ভব হবে বলেও মনে করেন তারা।
আগামীদিনে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আরও বৃহৎ পরিসরে কাজের পরিকল্পনা জানিয়ে জিস্ট ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের সভাপতি এবং নটর ডেম কলেজের শিক্ষক বিপ্লব কুমার বলেন, আমরা শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং শিক্ষকদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। এটি আমাদের উৎসাহিত করছে। আমরা আরও বৃহৎ পরিসরে পরবর্তী আয়োজনগুলো করার পরিকল্পনা করছি। আমরা তরুণদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন সংকট সমাধানে কাজ করতে চাই।
বরাবরের মতো এবারও ‘ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ অন ক্লাইমেট অ্যাকশন'র পুরো আয়োজন করেছে জিস্ট ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা এবং ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) জনসংযোগ অফিসের পরিচালক আবু সাদাত দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা ইউআইইউ’র পক্ষ থেকে আয়োজনটি নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের সহায়তা করছি। ইউআইইউ তার সামাজিক দায়বদ্ধতা এবং প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন সংকটের তরুণদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতের আমাদের এ ধরনের উদ্যোগ সামনেও অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেমব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার শাহিন রেজা। তিনি বলেন, এ ধরনের আয়োজন তরুণদের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আরও বেশি উদ্যােগী করবে। আলোচনায় তিনি পরিবেশ রক্ষায় তরুণদের অংশগ্রহণের বিষয়ে জোর দেন।
ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ অন ক্লাইমেট অ্যাকশন-২০২৪' এর এবারের আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রনালয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সরকারের 'শব্দ দূষণ বন্ধে সমন্বিত ও অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতি বিষয়ক প্রকল্প'র পরিচালক এবং ডেপুটি সেক্রেটারি সৈয়দা মাসুমা খানম বলেন, আমাদের তরুণদের জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কাজ করার পাশাপাশি পরিবেশ এবং প্রতিবেশ রক্ষায় সচেতন হতে হবে। আমাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে পরিবেশ রক্ষায়। সরকার জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ রক্ষায় তরুণদের নিয়ে একসাথে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম মিয়া। অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এ ধরনের আয়োজনে তরুণদের উদ্ভাবনী দক্ষতা আরও বাড়বে এবং ইউআইইউ তরুণদের উৎসাহ দিতে এ ধরনের আয়োজনে আরও বেশি সহায়তা করবে। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় তরুণদের আরও বেশি অংশগ্রহণ জরুরি জানিয়ে অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম মিয়া বলেন, তরুণদের জলবায়ু পরিবর্তন রোধ এবং পরিবেশ রক্ষায় কাজে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে দেশ, জাতি এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষিতে জলবায়ু রক্ষায় আরও বেশি উদ্যোগী করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেপালের রাষ্ট্রদূত ঘনশ্যাম ভাণ্ডারি। তিনি বলেন, আমি পুরো আয়োজনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং চ্যাম্পিয়নদের নেপালে আন্তর্জাতিক আসরে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমাদের সময়ে জলবায়ু পরিবর্তন একটি বৈশ্বিক চ্যালেজ্ঞ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের তরুণরা এটি নিয়ে কাজ করছেন, এটা আমাদের আরও বেশি পরিবেশ রক্ষায় কাজে উদ্বুদ্ধ করবে। আমাদের আরও বেশি কাজ করা উচিত।
নেপাল এবং বাংলাদেশ পরিবেশ রক্ষায় একসাথে আরও বেশি কাজ করবে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি তারুণ্যের দক্ষতা উন্নয়নে দুদেশের সম্পর্কের বিষয়টিও মনে করিয়ে দেন রাষ্ট্রদূত।
ঘনশ্যাম ভাণ্ডারি বলেন, বাংলাদেশ থেকে বিজয়ী শিক্ষার্থীরা আগামী মাসে নেপালে আন্তর্জাতিক আসরে অংশগ্রহণ করবে। এটি তাদের যোগাযোগ এবং পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়তা করবে। তারা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে আরও বেশি কাজ করতে পারবে। আমি তরুণদের এমন একটি প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই, এটি তাদের পরিবেশ রক্ষায় আরও বেশি সম্পৃক্ত করবে।
শুক্রবার অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতার চারটি বিভাগের শীর্ষ বিজয়ীরা আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে নেপালে অনুষ্ঠিত বৈশ্বিক ক্লাইমেট চেইঞ্জ অ্যাকশন সম্মেলনে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন। এ আসরে বাংলাদেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, নেপালসহ আরও পাঁচটি দেশের প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করবে।