নৈতিক শিক্ষাই পারে দক্ষ ও নীতিবান জনশক্তি উপহার দিতে: মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:৪১ AM , আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫৫ AM
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সামার সেমিস্টার ২০২৪-এর নবাগত ছাত্র-ছাত্রীদের নবীনবরণ ও মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠান মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান বলেন, নৈতিক শিক্ষাই পারে দক্ষ ও নীতিবান জনশক্তি উপহার দিতে।
শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে রাজধানীর গুলশানে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) ভবন মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্যতম সদস্য ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সম্মানিত সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাগত ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়।
সভাপতির বক্তৃতায় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান ‘আ সেন্টার অব একাডেমিক অ্যান্ড মোরাল এক্সিলেন্স স্লোগান’ সামনে রেখে মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, আজকে লোভ-লালসা চরিতার্থ করতে দুর্নীতি করে যারা সম্পদের পাহাড় বানিয়েছে তারা কেউই অশিক্ষিত নয়। এক্ষেত্রে একমাত্র নৈতিক শিক্ষাই সৎ, দক্ষ ও নীতিবান জনশক্তি উপহার দিতে পারে। মানারাত ইউনিভার্সিটি এই নৈতিক শিক্ষাই ধারণ করে পাঠ্যক্রম তৈরি করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম নবাগত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি একটি সুন্দর প্রাঙ্গণ হবে উল্লেখ করে বলেন, তুমি ইংরেজি সাহিত্যে নাকি ইসলামিক স্টাডিজ বা আইন বিষয়ে পড়েছো- এটা এখন দেখার বিষয় নয়। এখন নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ভালো ফলাফলের পাশাপাশি তোমাদেরকে দক্ষতা ও সক্ষমতা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে কোর্স করতে হবে। আন্ত:বিভাগ গবেষণাকর্মে আগ্রহী হতে হবে। কারিগরি ও প্রকৌশলগত জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি সৃজনশীল হতে হবে। মানারাত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিয়ে পাঠক্রম সাজিয়েছে।
তিনি বলেন, নারী শিক্ষার্থীদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তালার কথা আমাদের চিন্তা করতে হবে। জাতির পিতার চেতনায় তারই সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নারীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুযায়ী এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।
নতুন প্রজন্মকে আমাদের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে, তাদেরকে ভুল-বিভ্রান্তিমূলক তথ্যে আন্দোলিত হতে দেয়া যাবেনা উল্লেখ কওে অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু সমাজতন্ত্রে ন্যায্যতার কথা বলে গিয়েছিলেন। সমাজে পিছিয়ে পড়া জাতিসত্তাকে এগিয়ে তুলতে হবে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে জাতির পিতা পরিকল্পিতভাবেই অনেকগুলো পলিসি তৈরি করে দিয়েছিলেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যুবক কিংবা নারী প্রতিটি ক্ষেত্রের কথা চিন্তা করেই তিনি কাজ করেছেন।
২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে মানারাতের ছাত্রছাত্রীরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি আরও বলেন, ২০৪১ সালের স্বপ্ন আমরা তোমাদের দিয়েই বাস্তবায়ন করবো। এ জন্য শিক্ষকদের ক্ষেত্রে যেমন জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। তেমনি তোমাদের প্রতিও আহবান থাকবে আমাদের সমাজ, সাংস্কৃতিক, কৃষ্টি অক্ষুণ্ণ রেখে বৈশ্বিক বিষয়ে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখা ও পড়াশোনা করার বিষয়ে।
সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মাঝে শান্তির বার্তা ছাড়িয়ে দেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বড় পরিচয় হলো আমরা বাঙালি। বহু ধর্ম ও জাতি সত্তার মানুষের এখানে একসঙ্গে বসবাস। আমরা মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও সবার ধর্মকেই আমরা সম্মান ও শ্রদ্ধা করি। ইসলামেও অন্য ধর্মের প্রতি সম্মান করার কথা বলা হয়েছে। তাই তোমাদেরকেও সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মাঝে শান্তির বার্তা ছাড়িয়ে দিতে হবে।
পরীক্ষায় অসাদুপয় অবলম্বন করাও দুর্নীতি উল্লেখ করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদেরকে কোন রকম দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেয়ারও আহবান জানান অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজ ও বাংলাদেশ মহিলা সমিতির সদস্য ইসরাত জাহান নাসরিন ছাত্রছাত্রীদেরকে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার জন্য নিজেদের মাঝে প্রবল ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করার আহবান জানিয়ে বলেন, নিজেদের প্রবল ইচ্ছাশক্তি না থাকলে পৃথিবীর কোন শক্তিই নেই তোমাকে মানুষ করার। আর মানুষ হতে হলে শিক্ষকদের নির্দেশনা মেনে চলার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে লালন করতে হবে তোমাকে।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. মোয়াজ্জম হোসেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা রাখেন স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিং, সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ডিন ও ফার্মেসি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. নারগিস সুলতানা চৌধুরী, স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসের ডিন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রধান ড. মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ, স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনোমিকসের ডিন ও ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের প্রধান মো: মাহবুব আলম, ইংরেজি বিভাগের প্রধান আহমদ মাহবুব-উল-আলম, আইন বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম, ইইই বিভাগের প্রধান কে. এম. আক্তারুজ্জামান, জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রধান মো. মামুন উদ্দিন, সেন্টার অব জেনারেল এডুকেশনের পরিচালক ড. মোহাম্মাদ আবুল কালাম আজাদ, প্রমুখ।
ফার্মেসি বিভাগের প্রভাষক মোঃ আবদুর রহমান ও আইন বিভাগের প্রভাষক সুমাইয়া ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সামার সেমিস্টার ২০২৪-এ ভর্তি হওয়া নবাগত ছাত্র-ছাত্রীদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়। এছাড়া একই সেমিস্টারে বিভিন্ন বিভাগ থেকে মেধাবৃত্তি পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের হাতে চেক তুলে দেন প্রধান অতিথিসহ অতিথিবৃন্দ।