নর্থ সাউথ এবং এসডিসির যৌথ গবেষণা

‘অর্জিত দক্ষতা স্থানীয় শ্রমবাজারে প্রয়োগে বাঁধা পান বাংলাদেশি অভিবাসীরা’

অনুষ্ঠানে অতিথিদের সাথে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
অনুষ্ঠানে অতিথিদের সাথে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

দেশের শ্রমবাজারে মধ্যপ্রাচ্য এবং উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি অভিবাসীরা তাদের অর্জিত দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা প্রয়োগে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন। বেসরকারি নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজ (সিএমএস) এবং সুইস এজেন্সি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশনের (এসডিসি) যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘এক্সামিনেটিং দ্য সোশ্যাল রেমিট্যান্সেস অব রিটার্নি মাইগ্রান্ট ওয়ার্কার্স ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। 

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) উচ্চশিক্ষালয়টির ক্যাম্পাসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এটি সবার সামনে তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ এবং নীতিনির্ধারকরা গবেষণার প্রভাব এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেন। গবেষণায় মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীদের অভিবাসনের মাধ্যমে ধারণা, আচরণ, পরিচয় এবং সামাজিক রেমিট্যান্স অনুসন্ধান করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের (বোয়েসেল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন। তিনি অভিবাসী কর্মীদের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ নিশ্চিত করতে একাডেমিয়া এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে অংশীদারিত্বের আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি সামাজিক রেমিট্যান্সের উপর গুরুত্ব দেওয়ার পাশাপাশি অভিবাসী শ্রমিকরা জুয়া ও মদ্যপানের মতো যেসব খারাপ সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে আসে, তা সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন: অনূর্ধ্ব ৫০ বয়সী বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের একমাত্র নর্থ সাউথ

গবেষণার প্রধান অনুসন্ধানকারী এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সহকারী অধ্যাপক ড. সমীক্ষা কৈরালা বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে যে অভিবাসনের অভিজ্ঞতা সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং সম্পৃক্ততা বাড়াতে পারে, যা ফিরে আসা অভিবাসীদের সামাজিক পরিবর্তনের ভূমিকার দিকে নির্দেশ করে।

অনুষ্ঠানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. হারিসুর রহমান বলেন, অভিবাসীদের ফিরে আসার পরে তাদের অর্জিত দক্ষতা কার্যকরভাবে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় শ্রমবাজারে দক্ষতার ব্যবহার বাড়ানোর জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং কর্মশালা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

এই গবেষণাকে ভিন্ন উল্লেখ করে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক ড. সেলিম রেজা বলেন, এতে আর্থিক রেমিট্যান্সের বাইরেও অভিবাসী শ্রমিকদের অবদান খতিয়ে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটা স্বীকার করতেই হবে যে আমাদের খাদ্যাভাস এবং জীবনধারাসহ অন্যান্য অনেক বিষয় অভিবাসী শ্রমিকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।

আরও পড়ুন: কিউএস র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশসেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ

অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজেসের টিম লিড মো. আমিনুল ইসলাম ফিরে আসা অভিবাসীদের দক্ষতা ভাগাভাগির ওপর গুরুত্বারোপ করেন। একইভাবে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের (আরএমএমআরইউ) পরিচালক মেরিনা সুলতানা বলেন, নারী অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে সামাজিক ভয় দূর করা অত্যন্ত জরুরি।

এসময় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেসের ডিন ও সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক এসকে তৌফিক এম হক অভিবাসী শ্রমিকদের প্রতি সহানুভূতি গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান। অভিবাসী শ্রমিকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা সামাজিক রেমিট্যান্সে তাদের অবদানের সঙ্গে সম্পর্কিত কিনা তা নিয়ে আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে এসডিসির প্রোগ্রাম ম্যানেজার নাজিয়া হায়দারসহ সুশীল সমাজের বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আব্দুর রব খান।


সর্বশেষ সংবাদ