‘ফ্রি মিক্সিং’-এর বিরোধী ফুড আপ্পির মনিষা ও মাহদী

ফাবিয়া হাসান মনিষা ও মাহদী হাসান মান্না
ফাবিয়া হাসান মনিষা ও মাহদী হাসান মান্না  © সংগৃহীত

সরকারি-বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফ্রি মিক্সিংয়ের (অবাধ মেলামেশা) বিরোধী ‘ফুড আপ্পি’র ফাবিয়া হাসান মনিষা ও তার স্বামী মাহদী হাসান মান্না। তারা তাদের পেজ থেকে যে পোস্ট দিয়ে আলোচনায় এসেছেন, সে পোস্টে নিজেদের ভাবনার কথা পুরোপুরি বুঝিয়ে লিখতে পারেননি। এজন্য তারা ক্ষমাও চেয়েছেন। পরে অবশ্য ভিডিও সাক্ষাৎকারে সে বিষয়টি পরিষ্কারের করেছেন।

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে দেয়া ওই পোস্টে বলা তারা লিখেছেন, ‘‘ভাগ্যিস আমার বাপ মা’র অঢেল টাকা ছিলো না, থাকলে তারাও মনে হয় টাকা দিয়ে আমাকে অনেক দামি প্রাইভেট ভার্সিটিতে অশ্লীলতা শিখতে পাঠাতো’’। অবশ্য এ পোস্ট করার কয়েক ঘণ্টা পর তীব্র সমালোচনার মুখে তা সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর তিনি বিষয়টি নিয়ে ক্ষমা চেয়ে আরেকটি পোস্ট করেন এবং সেখানে আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজের যুক্ত তুলে ধরেন।

পরে বিতর্কের ব্যাখ্যায় এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে ফাবিয়া হাসান মনিষা বলেন, হঠাৎ সেদিন আমার হাজব্যান্ডের সামনে ওই পোস্ট রিলেটেড একটা ভিডিও আসে। ওই ভিডিও দেখার পর আমার হাজব্যান্ডের মাথায় একটা প্রশ্ন আসে, ‘বাবা-মা লাখ লাখ টাকা খরচ করে কেন সন্তানদের এরকম ইউনিভার্সিটিতে পাঠায় যেখানে ফ্রি মিক্সিংয়ের অনুমোদন দেয়।’

মনিষা বলেন, ওই ভিডিওতে ফ্রি মিক্সিংয়ের বিষয়ে দেখানো হয়েছে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সে পেজ থেকে স্ট্যাটাসটা দিয়ে বসে। কিন্তু আমাদের যেটা ভুল হয়েছিলো সেটা হলো, আমরা আসলে ঘটনাটা পুরোপুরি ব্যাখ্যা করে বলতে পারিনি। আমরা যেটা ভেবেছি, সেটা পোস্টে লিখতে পারিনি। আর ফ্রি মিক্সিংয়ের বিষয়টা ওর ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগেনি।

সাক্ষাৎকারে স্ত্রী মনিষার বক্তব্যের পরে স্বামী মাহদী বলেন, শিক্ষার্থীরা এটা (ফ্রি মিক্সিং) শিখলো কোথায় থেকে? অবশ্যই সিনিয়রদের থেকে শিখেছে। আর সিনিয়ররা কেমন, এটা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। ওই স্ট্যাটাস নিয়ে আমাদের ভুলটা হয়েছে যে জায়গায় সেটা হলো, আমরা হয়তো আলাদাভাবে প্রাইভেটের কথা বলেছি। পাবলিকের কথাটা উল্লেখ করিনি। তবে ভালো-মন্দ সব জায়গায় আছে।

আরও পড়ুন: বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ফুড ভ্লগারের বিতর্কিত মন্তব্যের সমালোচনা

স্বামীর বলা শেষে স্ত্রী মনিষা বলেন, সবাইকে উদ্দেশ্য করে ওই স্ট্যাটাস দেওয়া হয়নি। কিছু মানুষ ও কিছু ভার্সিটিকে উদ্দেশ্য করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে এ (ফ্রি মিক্সিং) ধরনের কার্যক্রম চলছে, সেগুলো লক্ষ্য করে দেওয়া হয়েছে। ওই পোস্টে আমরা এটা লিখিনি। এটাই আমাদের ভুল হয়েছে।

ফাবিহা হাসান মনীষা বর্তমানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত রয়েছেন। তার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে দেওয়া তথ্যমতে, তিনি সরকারি অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্স কলেজে (সাবেক হোম ইকোনমিক্স কলেজ) পড়াশোনা করেছেন। মূলত তিনি তার পেজ থেকে বিভিন্ন খাবারের প্রতিষ্ঠান, হোটেল, রেস্টুরেন্টের ভিডিও রিভিউ করেন।

মনিষার পেজ থেকে করা ওই পোস্টে মন্তব্য করেছেন বেসরকারি ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির (আইউবি) শিক্ষার্থী ও ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। মনিষার পোস্টের মন্তব্যের ঘরে ফারিয়া লিখেছেন, তাদের টাকা আরেকটু কম থাকলে আরও ভালো হতো, তাহলে স্মার্টফোন বা ইন্টারনেট কিনে এসব ননসেন্স স্ট্যাটাস দিতে পারতেন না...।

সাক্ষাৎকারে শবনম ফারিয়ার সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাকে নিজের জীবন নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। তার সম্পর্কে আমার খুব জানাশোনা নেই। তিনি আমার ওই পোস্টে একটা উদ্দেশ্যমূলক মন্তব্য করেছেন। উনার কমেন্ট দেখে আমি অবাক হয়েছি। উনার মতো একজন স্টার আমার মতো ছোট একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের পোস্টে কমেন্ট করেছেন! তাও আবার একটা উল্টাপাল্টা মন্তব্য!

তিনি বলেন, তিনি আমার ফ্যানব্যাজকে তার নিজের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। এটা দেখে আমি খুব কষ্ট পেয়েছি।

ফুড আপ্পির ওই পোস্ট নিয়ে মন্তব্য করেছেন সালমান মুক্তাদিরও। সালমান লিখেছেন, আপনি যে ভ্লগ বানান তার ৯০ শতাংশ রেস্টুরেন্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট কিংবা শিক্ষার্থীদের। তিনি আরও যুক্ত করেন, আপনার কথিত এসব হালাল আয়ের উৎসের (ভ্লগিং) যোগান আসে সেই হারাম উপার্জনকারীদের কাছ থেকে?

মনিষা সালমান সম্পর্কে বলেন, আমি সালমান ভাইকে কখনো দেখিনি। কখনো উনার সাথে আমার কথা হয়নি। উনি পার্সন হিসেবে কেমন এটা তার কাছের মানুষরাই বলতে পারবেন। যেহেতু আমি তার সম্পর্কে জানি না, তাই না জেনে কিছু বলতে চাই না।

তিনি বলেন, অনলাইনে দেখে যেটা বুঝলাম উনি অবশ্যই ভালো কাজ করছেন। ভালো কাজন না করলে আসলে টিকে থাকা যায় না। কিন্তু আপনি দেখবেন সামনে শুধু খারাপটাই আসে। যেহেতু উনার অনেক খারাপ জিনিস আমার সামনে আসছে, তাহলে কেন আমি উনাকে কথা বলতে যাবো?

সালমানকে নিয়ে মনিষা বলেন, সম্প্রতি দেখলাম উনি আমার অপোলজি পোস্ট নিয়েও ট্রল করেছেন। হাসাহাসি করছেন। উনি আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য আমার পোস্টে নিয়ে খারাপভাবে লেখালেখি করছেন। উনাকে একটা কথাই বলবো ‘ভাইয়া আপনি হয়তো দেখেন নাই, আমি অনলাইনে অনেক ভালো কাজ করছি’। আপনি আমার সেসব কাজেরও এপ্রিসিয়েট করতে পারেন।


সর্বশেষ সংবাদ