ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক ইংরেজি সাহিত্য সম্মেলন শুরু

অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন
অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন   © টিডিসি ফটো

রাজধানীর আফতাবনগরে অবস্থিত বেসরকারি ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক ইংরেজি সাহিত্য বিষয়ক সম্মেলন শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৮ জুলাই) সকাল ১০ টায় ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।

‘টিচিং ইংলিশ লিটারেচার অ্যান্ড ইন্টারডিসিপ্লিনারি’ প্রতিপদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ ও অ্যাসোসিয়েশন অব টিচার্স অব লিটারেচারস ইন ইংলিশ, বাংলাদেশ যৌথ উদ্যেগে সম্মেলনটি আয়েজন করে।

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপার্সন ও সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও সহযোগী অধ্যাপক ড. ফারজানা আক্তার।
  
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সাহিত্য ইতিহাসের অন্তর্গত কারণ এটি ঐতিহাসিক সময়ে রচিত হয়। সাহিত্যে ফর্ম এবং বিষয়বস্তুর মধ্যে লড়াই হয়। দর্শন সাহিত্য থেকে দূরে নয় বা অর্থনীতি সাহিত্যে প্রবেশাধিকার অস্বীকার করে না এবং মনোবিজ্ঞান অবশ্যই সাহিত্যের খুব কাছাকাছি। জীবনের চেয়েও বাস্তব এবং বিশ্বের ঘটনাগুলোর চেয়েও বেশি আকর্ষণীয়। সাহিত্য নেতাদের জন্য একতা ও উন্নতি অর্জন করে এবং এটি আমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃজনশীল মন মানুষের সাথে অতীত, বর্তমান, প্রকৃতি এবং পরিবেশের সাথে সংযুক্ত করে।

তিনি আরও বলেন, আমরা সাহিত্য পড়ে আরও ভাল মানুষ হয়ে উঠি। এমন একটা সময় দরকার যখন আমাদের শিক্ষকরা সাহিত্য সৃষ্টির সৌন্দর্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন। কিন্তু সাহিত্য এক টুকরো নান্দনিক কৌতূহলের চেয়ে বেশি। আমাদের শিক্ষকও ছিলেন, যারা সাহিত্যিক অংশগুলির ঐতিহাসিক এবং আদর্শিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরতেন। কালানুক্রমিকভাবে, আমরা পাঠ্যের বিশ্লেষণের সাথে আমাদের পরিচিতি স্থাপন করেছি এবং আমরা শিখেছি কীভাবে একটি পাঠ্যকে সরাসরি বিশ্লেষণ করতে হয়।

সাহিত্যের তুলনার বিষয়ে তুলে ধরে অধ্যপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের যা দরকার তা হল লেখা, ইংরেজি ভাষায় ও বিভিন্ন দেশের লেখকদের লেখা ইংরেজিতে লেখা এবং বিভিন্ন ভাষায় লেখা পাঠ্যের মধ্যে তুলনা করা৷ বাংলা আমাদের কাছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির যোগ্য কাজ রয়েছে কিন্তু সেই স্বীকৃতি অনুবাদ হয়েছে তাই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ এই ধরনের সম্মেলন অনুবাদের প্রয়োজনীয়তাকে ফোকাস করে। আমি আশা করি, এই সম্মেলন বাংলা থেকে ইংরেজিতে এবং ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষা থেকে বাংলায় পাঠ্য অনুবাদ করতে সাহায্য করবে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পর্কে তিনি বলেন, তাঁর কিছু কবিতা যাকে গান বলা হত যা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন। তিনি জ্ঞানী ও উদ্যোগী ছিলেন। তাই তিনি এশিয়ার প্রথম নোবেল বিজয়ী হতে পেরেছিলেন।সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ তার লালসালু ক্লাসিক রচনা ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন এবং এটিকে ব্যাপক দর্শকের কাছে নিয়ে গেছেন। এর জন্য প্রয়োজন সহযোগিতা, সহায়তা, পরামর্শ, সম্পাদনা।

ড. সিরাজুল ইসলাম বলেন, সৌভাগ্যবশত আমাদের অনুবাদক আছে, আমাদের কিছু শিক্ষক এবং পণ্ডিত বাংলা পাঠ্যকে ইংরেজিতে অনুবাদ করার কাজে নিজেদের নিয়োজিত করেছেন। সেগুলোকে ব্যাপক দর্শকের কাছে নিয়ে গেছেন। এটা খুবই দুঃখের বিষয় যে সীমান্তের ওপারের মানুষের সাথে আমাদের সাংস্কৃতিক বিনিময় নেই।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাসোসিয়েশন অফ টিচার্স অফ লিটারেচারস্ ইন ইংলিশ, বাংলাদেশের সাহিত্য সংগঠনের আহ্বায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক তাহমিনা আহমেদ। এছাড়াও প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ইয়র্ক, যুক্তরাজ্যের অধ্যাপক ড. ক্লেয়ার চেম্বারস এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. রাজীব শ্রীধর পাটকে।

সম্মেলনে ইংল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, ভারত এবং বাংলাদেশের ১৭০ জনের বেশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনে ২১টি আলাদা সেশনে বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ২০০টির বেশী গবেষণা প্রবন্ধ ও পোস্টার উপস্থাপন করা হবে।

অন্যদের মধ্যে  উপস্থিত ছিলেন দেশী ও বিদেশি লিটারেচার প্রজেন্টার, আমন্ত্রণিত অতিথিবৃন্দ, অনুষদ ডিন, রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, জনসংযোগ কর্মকর্তা, ইংরেজি ও অন্যান্য বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তাবৃন্দ৷


সর্বশেষ সংবাদ