পানি ও শৌচাগার নেই, স্কুলের বেহাল অবস্থা দেখিয়ে রোষে খুদে ‘সাংবাদিক’
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০২২, ১১:৪৪ AM , আপডেট: ০৭ আগস্ট ২০২২, ১১:৫৯ AM
স্কুলে টিউবওয়েলের লাইন থাকলেও নেই পানি। শৌচাগার থাকলেও তার অবস্থা শোচনীয়। প্রয়োজন পড়লে বাইরে শৌচকর্মে যেতে হয় শিক্ষার্থীদের। ঘন জঙ্গলে ভর্তি স্কুল চত্বর। শিক্ষার্থীরা এলেও দেখা যায় না শিক্ষকদের। এমনি অবস্থা দেখা গেছে ভারতের ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর গোড্ডার মাহগামা ব্লকের ভিখিয়াচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক ভিডিও প্রকাশিত হয়। যেখানে স্কুল ও শ্রেণিকক্ষের এমন বেহাল অবস্থার চিত্র। তুলে ধরছেন স্কুলের এক ছাত্র সরফরাজ। নিজেকে সাংবাদিক ভূমিকায় প্রদর্শন করে বিভিন্ন শিক্ষার্থীর কাছে স্কুরে বেহাল অবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন করছেন সরফরাজ।
ভিডিওতে দেখা যায়, শ্রেণিকক্ষ পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ঢোকে না। আস্তর খসে খসে পড়ছে। বিপদ প্রতি মুহূর্তে মাথার উপর ঝুলছে। লুঙ্গি ভাঁজ করে পরা, গায়ে হলুদ টিশার্ট, হাতে একটা লাঠি, তার উপরিভাগে একটি ঠান্ডা পানীয়ের বোতল ঢোকানো। সেটিকে মাইক্রোফোন হিসাবে ব্যবহার করে সাংবাদিক ভূমিকা পালন করছিলেন সরফরাজ।
ভিডিওর শুরুতে সরফরাজ বলেন, আমি এখন আপনাদের দেখাব আমাদের গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে কী অবস্থা। এরপর মাইক্রোফোন নিয়ে তার সহপাঠীদের প্রশ্ন করে সে, স্কুলের কী অবস্থা তোমরা বলো? এরপর তাকে স্কুলভবনের বাইরে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। স্কুল চত্বরের ছবিটা দেখাতে দেখাতে সে বলে, শিক্ষকরা স্কুলে আসেন না। স্কুল ঘন জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। শৌচাগারও নেই। স্কুলের ঘরে গবাদি পশুদের খাবার রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিক্ষক নেই, বিনা পারিশ্রমিকে স্কুল সামলাচ্ছেন গ্রামের ১০ ব্যক্তি।
স্কুলের অবস্থা দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনকে আর্জি জানিয়ে সে স্কুলের সব শিক্ষককে বরখাস্ত করার দাবি জানায়। তবে সরফরাজের এই ভিডিও প্রকাশে আসতেই শিক্ষকদের রোষাণোলের মুখে পড়ে সে। সরফরাজের দাবি, ভিডিওটি প্রকাশ্যে আসতেই মহম্মদ তাজিমুদ্দিন নামে এক শিক্ষক বাড়িতে এসে তার মা-বাবাকে পুলিশে অভিযোগ করার হুমকি দিয়েছেন।
সরফরাজ জানায়, আমার বাড়িতে শিক্ষক এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করার। স্কুলের অবস্থা প্রথমে এত খারাপ ছিল না। যত দিন গিয়েছে অবস্থার অবনতি হয়েছে। শিক্ষকরা শুধু হাজিরা দেওয়ার জন্য আসেন, তা-ও নিয়মিত নয়। ঠিক মতো পড়ান না বলেও দাবি সরফরাজের।
অপরদিকে ভিডিও প্রকাশ্যে আসার পর দিনই স্কুল পরিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া জেলা শিক্ষা আধিকারিক রজনী দেবী দুই শিক্ষককে স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। সরফরাজ জানায়, বড় হয়ে সাংবাদিক হতে চায় সে। কিন্তু শিক্ষকরা সাংবাদিকতার পেশা পছন্দ করে না। এই ধরনের কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার পরামর্শ দেন তাঁরা।