লালমোহনে ৭৬ প্রাথমিকে নেই প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য ৬৮

উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়, লালমোহন, ভোলা
উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়, লালমোহন, ভোলা  © সংগৃহীত

দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলা একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই উপজেলায় বর্তমানে রয়েছে ২১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর মধ্যে ৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে চলছে বিদ্যালয়গুলোর পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। এ ছাড়া উপজেলায় সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে ৬৮টি। 

প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক শূন্য থাকায় এসব বিদ্যালয়ে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম। শঙ্কা দেখা দিয়েছে শিক্ষার গুণগত মান নিয়ে। এ ছাড়া দিন দিন বিদ্যালয়গুলোয় কমছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। 

লালমোহন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

প্রধান শিক্ষক নেই এমন কয়েকটি বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি তাদের মতোই একজন সহকারী শিক্ষক। তাই অনেক ক্ষেত্রেই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকা শিক্ষককে বিদ্যালয়ের অন্যান্য সহকারী শিক্ষকদের সঠিকভাবে পরিচালনা করতে গিয়ে চরম বেগ পেতে হচ্ছে। অনেক সহকারী শিক্ষকই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা মানতে অনীহা প্রকাশ করেন। ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে। তাই বিদ্যালয়গুলোয় প্রধান শিক্ষক পদায়ন করা জরুরি।

আরও পড়ুন: বাজারে আগুন, আড়াই কো‌টি টাকার ক্ষয়ক্ষ‌তি

অপর দিকে প্রধান শিক্ষকহীন ওইসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বলছেন, যিনি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, তিনি মূলত ওই বিদ্যালয়েরই একজন সহকারী শিক্ষক। ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অফিসিয়াল কাজে অনেক সময়ই ব্যস্ত থাকেন। যার জন্য তিনি বিদ্যালয়ে নিয়মিত আসতে পারেন না। এ ছাড়া বিদ্যালয়েল অন্যান্য সহকারী শিক্ষকরাও তার নির্দেশনা সঠিকভাবে মানছেন না। ফলে তাদের সন্তানদের পড়ালেখায় সমস্যা হচ্ছে। তাই দ্রুত এসব বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষক পদায়ন করে শিক্ষার গুণগত মান ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান মিলন বলেন, ‘আমাদের উপজেলার ৭৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নেই। এ জন্য প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডসহ বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এ জন্য আমরা এরই মধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রধান শিক্ষক পদায়নের জন্য তালিকা পাঠিয়েছি। কর্তৃপক্ষ ওই তালিকা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদায়ন করলেই বিদ্যালয়গুলোয় যে সমস্যা হচ্ছে, তা কেটে যাবে। আশা করছি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যেই বিদ্যালয়গুলোয় প্রধান শিক্ষক পদায়ন করবে।’

আরও পড়ুন: ভোলা সরকারি কলেজে ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

এই শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘লালমোহন উপজেলায় এখনো ৬৮টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। আমরা সহকারী শিক্ষকের ওইসব পদ পূরণের জন্যও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তালিকা পাঠিয়েছি। সামনে নতুন শিক্ষকের নিয়োগ হলেই উপজেলার যেসব বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নেই, তা পূরণ হয়ে যাবে। আশা করছি এরপর শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আর কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।’


সর্বশেষ সংবাদ