পিএইচডির সুযোগ পেলেন রাস্তায় ফুল বিক্রি করা বস্তির মেয়ে

সরিতা মালি
সরিতা মালি  © সংগৃহীত

লক্ষ্যে অবিচল থাকার ফল পেলেন ভারতের মুম্বাইয়ের রাস্তায় ফুল বিক্রি করা বস্তির মেয়ে সরিতা মালি (২৮)। আমেরিকার ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পেলেন তিনি।

উৎসবের সময় সরিতা মালির পরিচিত অন্যরা যখন আনন্দে মেতে উঠতেন, তখন তিনি বাবার সঙ্গে ফুল বিক্রি করেছেন। তা সে গণেশ চতুর্থী হোক, দীপাবলি বা দশের উৎসব। এমনকি স্কুলে পড়ার সময়ও বাবার সঙ্গে ফুল বিক্রি করেছেন। আর এই লড়াই করতে করতেই আজ দেশের অন্যতম নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রী সরিতা। 

জেএনইউতে ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার থেকে হিন্দি সাহিত্যে পিএইচিডি করছেন তিনি। এখান থেকেই এমএ ও এমফিল ডিগ্রি অর্জন করেছেন। জুলাইয়ে নিজের গবেষণাপত্র জমা করবেন সরিতা।

এই জেএনইউতে পড়ার সময়েও যখনই ছুটি পেয়েছেন, হাত লাগিয়েছেন বাবার সঙ্গে। ছুটির সময়ে তৈরি করেছেন ফুলের বাগান। কিন্তু, গত দুই বছরে আরও অনেকের মতোই অতিমারী পর্বে টান পড়েছে তাঁর বাবার পেশায়। সেই পরিস্থিতি অবশ্য ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে চলেছে। 

কার্যত জন্মের পর চোখ খোলা থেকেই দেখছেন ফুল। এটাই তার সমাজ। যার একদিকে ফুল, তো অন্যদিকে জীবন-সংগ্রামের কাঁটা! বাবা, মা, দিদি ও দুই ছোট ভাইকে নিয়ে ছয় জনের পরিবারের এভাবেই বড় হয়েছেন সরিতা। এত বড় পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী তার বাবা। করোনার লকডাউনের সময় তার বাবা নিজের শহর জৌনপুরের বদলাপুরে ফিরে যান। 

এই পরিস্থিতি থেকে লড়াই করে পড়াশোনার জন্য বিদেশে পাড়ি দিতে চলেছেন সরিতা। তিনি বলেন, আমি মনে করে প্রত্যেকের জীবনেই উত্থান-পতন আছে। প্রত্যেকের নিজের নিজের গল্প আছে। যে সমাজে জন্মান বা যে জীবনই পান। আমি এমন এক জায়গায় জন্মেছি যেখানে সমস্যা জীবনের অন্যতম অংশ। তবে, জেএনইই আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। এমএতে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়াটা আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। এখানে ভর্তি না হলে, আমি কোথায় থাকতাম জানতাম না।

সূত্র: এবিপি আনন্দ